তিনি এমন একজন মানুষ যাঁকে নিয়ে কিছু লেখার মত স্পর্ধা আজও হয়ে ওঠেনি৷ তাঁকে নিয়ে যে স্মৃতিচারণা করেছেন আপামর বাঙালি তারই কিছু কিছু নিদর্শন বলতে পারি৷
ছোটবেলা থেকে দেখেছি পঁচিশে বৈশাখ দিনটি অন্যরকম ভাবে কাটত। সকাল থেকেই সবার মধ্যে থাকত উম্মাদনা। আগের দিন দেওয়াল থেকে তাঁর ফটোখানি নামিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করা হত। তাঁর স্থান ছিল আমাদের বাড়িতে ঠাকুরের তাকের ঠিক পাশে৷ নিয়মিত ভাবে তাঁকে ধূপ, দীপ দেখানো হত৷ সকালে বাবা মোটা একটা জুঁই ফুলের মালা আনতেন৷ সাথে থাকত নানা রঙের ফুল । একটা বড় ফুলদানীকে ভালো করে মা তেঁতুল দিয়ে মেজে রাখতেন আগেরদিন ৷ সেই মাজার ঠঙঠঙ আওয়াজটা আজও যেন কানে বাজে৷ মা খুব যত্ন সহকারে নিজেই ফুলদানি মাজতেন। এরপর স্নান সেরে মা পড়তেন পাটের শাড়ি। সেই শাড়িটা আমার কাছে ছিল একটা মাধ্যম ৷ আমি ছোটবেলায় ভাবতাম ঠাকুরের সান্নিধ্য পেতে হলে ওই শাড়িটা পড়তে হবে৷ ওই শাড়িটির প্রতি ছিল আমার অগাধ বিশ্বাস৷ সেই বিশ্বাস আমার আজও আছে৷ যেমন বিশ্বাস ছিল রবী ঠাকুরের প্রতি৷ মা বলতেন তাঁর জীবনে একটাই ঠাকুর তিনি৷ সেটা তিনি৷
আমার বয়স যখন সাত বছর ৷ মা তখন আমাকে চন্দন বাটতে শিখিয়ে দেন৷ সেই চন্দনের গন্ধ আর মাযের গায়ের গন্ধ দুটোই ছিল আমার কাছে সমান৷ চন্দন বাটা হত গঙ্গা জল দিয়ে৷ একটা রূপোর বাটিতে রাখা হত তাকে৷ তারপর শুরু হত ফটোতে চন্দন লাগানো। সুন্দর করে আলপনার মত করে সাজানো হত ছবিখানি৷ বার বার করে মুছে মা ঠিক করতেন। বলতেন-
ওনার ছবিতে সুন্দর করে আলপনা আঁকতে হয়। বিশ্ব কবি উনি৷ আমাদের গর্ব৷ যত্ন করে সাজাতে হয় ওনাকে৷ ধূপ আর মালার গন্ধ সারাদিন একটা আবেশ জড়িয়ে থাকত৷ এই দিনগুলির এত অমোঘ আকর্ষণ ছিল যার থেকে আজও বেরিয়ে আসতে পারা যায় না৷ বেলা বাড়ার সাথে সাথে পাড়ায় শুরু হত ওনার গান৷ আমাদের পাড়ায় তখন রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন হত৷ সেখানে চিত্রাঙ্গদা, নিরুপমা ইত্যাদি নৃত্যনাট্য হত। তখন রবি ঠাকুরকে ছুঁয়ে দেখার সুযোগ হত নাচ , গানের মাধ্যমে৷ সুন্দর করে শাড়ি , মালা পড়ে নাচ হত বেশ রাত্তির পর্যন্ত৷ একটু বড় হতে পাড়ার রবীন্দ্রজয়ন্তী বন্ধ হয়ে যায়।তখন বয়স একটু বেড়েছে। ক্লাস এইট কী নাইন হবে৷ এই সময় মনে হত রবীন্দ্রনাথ একেবারে আমার নিজস্ব ৷ কোন ধূপ দীপ নয় মনের মাধুরী মিশিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেছি৷ জীবনের যখন হাতাশা এসেছে ওনার কবিতা পড়েছি৷ ৷ তিনি যেন ঈশ্বরের মত পথ দেখিয়েছেন৷ ভালোবাসতে শিখিয়েছেন৷ তাঁর লেখায় যে দর্শন আছে জীবন দিয়ে উপলব্ধি করেছি। জীবনে যখন থেকে লিখতে শিখেছি তাঁকে অনুসরণ করে গেছি ৷ জীবনের সমস্ত জটিল পথে তাঁর এই গান বীজমন্ত্র হয়ে গেছে৷
ওনার ছবিতে সুন্দর করে আলপনা আঁকতে হয়। বিশ্ব কবি উনি৷ আমাদের গর্ব৷ যত্ন করে সাজাতে হয় ওনাকে৷ ধূপ আর মালার গন্ধ সারাদিন একটা আবেশ জড়িয়ে থাকত৷ এই দিনগুলির এত অমোঘ আকর্ষণ ছিল যার থেকে আজও বেরিয়ে আসতে পারা যায় না৷ বেলা বাড়ার সাথে সাথে পাড়ায় শুরু হত ওনার গান৷ আমাদের পাড়ায় তখন রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন হত৷ সেখানে চিত্রাঙ্গদা, নিরুপমা ইত্যাদি নৃত্যনাট্য হত। তখন রবি ঠাকুরকে ছুঁয়ে দেখার সুযোগ হত নাচ , গানের মাধ্যমে৷ সুন্দর করে শাড়ি , মালা পড়ে নাচ হত বেশ রাত্তির পর্যন্ত৷ একটু বড় হতে পাড়ার রবীন্দ্রজয়ন্তী বন্ধ হয়ে যায়।তখন বয়স একটু বেড়েছে। ক্লাস এইট কী নাইন হবে৷ এই সময় মনে হত রবীন্দ্রনাথ একেবারে আমার নিজস্ব ৷ কোন ধূপ দীপ নয় মনের মাধুরী মিশিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেছি৷ জীবনের যখন হাতাশা এসেছে ওনার কবিতা পড়েছি৷ ৷ তিনি যেন ঈশ্বরের মত পথ দেখিয়েছেন৷ ভালোবাসতে শিখিয়েছেন৷ তাঁর লেখায় যে দর্শন আছে জীবন দিয়ে উপলব্ধি করেছি। জীবনে যখন থেকে লিখতে শিখেছি তাঁকে অনুসরণ করে গেছি ৷ জীবনের সমস্ত জটিল পথে তাঁর এই গান বীজমন্ত্র হয়ে গেছে৷
"জীবন মরণের সীমানা ছাড়ায়ে
বন্ধু হে আমার রয়েছ দাঁড়ায়ে
জীবন মরণের
এ মোর হৃদয়ের বিজন আকাশে
তোমার মহাসন আলোতে ঢাকা সে
গভীর কী আশায় নিবিড় পুলকে
তাহার পানে চাই দু বাহু বাড়ায়ে
জীবন মরণের"
এই গানখানি আমাদের জীবনের মনিকোঠায় চিরকাল থেকে যাবে৷ আমাদের জীবনে চিরকাল রবীন্দ্রনাথ ছিলেন থাকবেন। তিনি আমাদের জীবনে আলো৷ সেই আলোর ছটায় আমরা আলোকিত৷ তাঁকে নিবেদন করা আমার প্রথম লেখা কবিতা
বাদল দিনে
এমন বাদল দিনে তারে ভোলা যায়
গগনে মেঘরাশি চমকায়
আঁখিতে অশ্রুরাশি ,
মিশিছে চারিধার ।
হৃদয় রাঙিছে বনছায় ,
কুসুম কাননে কে যেন গড়িছে ফুলহার৷
যে লয়ে এসেছে মোরে ,
একি তারি লাগি উপহার ?
এমনি দিনে তারে বলা যায়
ব্যাকুল বেগে প্রেম বাহিছে চারিধার ,
হৃদয় মিলেমিশে একাকার
সে কথা আজি যেন বলা যায় ,
তোমারে ভালবাসি শতবার ৷
এই ভালোবাসা যেন চিরকাল একই থাকে৷
সুচিন্তিত মতামত দিন