সৌমিতা চট্টরাজ| সদৃশ পাশা

ভাষা দিবস রাজনীতি মিছিল

It's a high time to learn where to bark, where to shut, where to shout...

জানতে হবে ভায়া। জানতে হবেই আমাদের। এটা যেহেতু ভারত, আই কনসাসলি মিন্ মহাভারতের লাইট ভার্সন ভারত (!) তাই জন্মসূত্রে, রেশনকার্ডসূত্রে, অ্যাডমিটকার্ডসূত্রে , ভোটারকার্ডসূত্রে , প্যানকার্ডসূত্রে, আধারকার্ডসূত্রে , জবকার্ডসূত্রে, সূত্রে সূত্রে সূত্রে আমরা প্রত্যেকেই ফেভিকলের অটুট জোড়ে চিপকে যাওয়া এক একটি মনুষ্য সদৃশ পাশা। খেলুড়ে হাতটা কখনো যুধিষ্ঠিরের ( যতই ধার্মিক হোন না কেন মনে রাখতে হবে ভাইদের এমনকি বউকেও বাজি রাখতে ছাড়েন নি), কখনো বা শকুনির ( মনে রাখতে হবে আলবাত অধার্মিক হয়েও একজন মহাধার্মিককে কত অনায়াসে ম্যানুপুলেট করলেন)। এই তো তফাৎ! তাই নিয়ে এতো মুরুব্বিপনা কোত্থেকে আসে বুঝিনে বাপু। জেনারেশন টু জেনারেশন পাশা হয়ে ঠুকতে ঠুকতে, চলটা উঠতে উঠতে তোমাদের বিচারবুদ্ধিরা সহ্যের সীমা ডিঙিয়ে উফ্ করে না ভায়া? নিজেরা তো কথায় কথায় দিব্য ভোকাল হও। অমন নধর কচি মস্তিষ্ক গুলান্​ কুচুটে পানায় চুবোতে চুবোতে এক্কেবারে ইয়েতে সেঁধিয়ে দিয়েছ নাকি গা্ ? বিদ্রোহ কর। অবশ্যই কর। উনকোটি ভেড়ুয়ার ( বউয়ের নয় ভয়ের ভয়ে ভীত যেজন ) মধ্যে জন্মে, খেয়ে না খেয়ে, মরে বেঁচে যে কজন মানুষ বিদ্রোহী হয়েছে কিংবা হতে চায় আমি তাদের সেলাম করি ( সেলাম কে আবার বিশেষ রঙে রঞ্জিত করতে যেও না বাপ্ )। প্রকৃত বিদ্রোহী কে আমি সিজদাহ্ জানাই। তবে প্রতীকী বিদ্রোহ ধোপে টিকবে না রে ভাই। খ্যামটা কে হেয় করতে চেয়ে ঘোমটাকে গৌরবান্বিত করাতে কেমন যেন একটা হাসপাতাল হাসপাতাল গন্ধ আছে। অসুস্থতার গন্ধ। পরিধানে হিজাব অথবা ফেজ্ থাকলে ছ্যাঁকা লাগবে আর নামাবলী থাকলে বোরোলিন এমনটা তো নয়।​ মধ্যেখানে দেখছিলাম " মাই লাইফ মাই চয়েস " ভালোমতোই সেলিব্রিটি ট্রিটমেন্ট পাচ্ছিল এদেশে। তাইলে এখন কি বুঝব ? ওটা শুধুমাত্র একটা ট্রেন্ডিং কনসেপ্ট? ইধর্ খানা ভি দুসরা রুচি অউর পহেননা ভি... তো ফির অপনা কিয়া হ্যায়্ ভাইলোগ্? ইয়ে ইন্ডিয়া হ্যায়। ইয়াঁহা কুছ্ ভি হো সকতা হ্যা। কুউউউউউছ্ ভি। এইবারেই হারে রে রে রে রে করে তেড়েমেরে বলতে আসবে,​

" যা যা বেহায়া মেয়ে যা না
তুই পাকিস্তানে যা না
কেউ করে নি মানা​
পাকিস্তানে চলে যা না "

তা বলি কথায় কথায় এইযে এতো দেশ ছাড়ার ফতোয়া ধরাও তা ভারত কি একা তোমাদের বাপের দেশ! আমাদের বাপ চোদ্দ পুরুষের নয়! দেশ দেশ বলে এমন বিদ্বেষ দেখাতে কার ভালো লাগে বল! কয়েকটা দিন বেশী নিঃশ্বাস ফেলা যায় এই যা! কিন্তু সরকার সরকার বা রাষ্ট্র রাষ্ট্র বলে চেঁচালে হয়তো বা কালকেই পুলিশ কাস্টাডি হবে, আর পরশু অজ্ঞাত কারণে অস্বাভাবিক ভাবে রিমান্ডেই ভবলীলা সাঙ্গ। মধ্যিখান থেকে বডি রিলিজ , পেপার্স অ্যাকুমুলেশান , এই টেবিল সেই টেবিল করতে করতে বাপমায়ের ছাতি পেটার সময় টুকুনও দাপ্তরিক গোপনীয়তায় দাফন হয়ে যাবে। যতই অযোগ্য সন্তান হই না কেন পরিবারের এহেন দুর্দশা কি কখনো কাম্য হতে পারে! তাই সেফ সাইড। আমার দেশ। আমার মা। গাল দিই আর চুমুই খাই কোন শুয়োরের বাচ্চার কি!​ এ হল টিউশন ব্যাচের চাঁদপানা মুখ দেখে চোখ টেপা থেকে ইভিএমে বোতাম টিপে নিজের ভবিষ্যৎ বিশ বাঁও জলে ফেলার দেশ। বললেই হল, তুই পাকিস্তানে যা! এই যে আমার মতো হাজার হাজার লাখ লাখ ছেলেপুলে বাপমায়ের রক্তজল করা উপার্জনের গুষ্ঠির ষষ্ঠী পুজো সেরে ডিগ্রি ফিগ্রি নিলো তারপরেও তো সেই বাপমায়ের ঘাড়ে বসে বসে দিনগত পাপক্ষয় করতে হচ্ছে। কি যে পাপ করেছি তাও যদি জানতাম! বাপের হোটেল যতক্ষণ চলছে চলুক। খাই দাই বগল বাজাই। বাজতে বাজতে আর বাজাতে বাজাতে চামড়া খিঁচে গেলে বাপ বাপ বলে হয় চপ ভাজবো নয় তো বেগুনী। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হবে এম. এ পাস মামনীর চপের কড়াই, উইমেন এমপাওয়ারমেন্টের বড়াই। ছেলেবেলা থেকে দেখে আসছি যে কোনো ভোটের (ভাটের !) আগে যে কোনো অপজিশন পার্টির বিভিন্ন বাতেলাবাজির মধ্যে একটা ফ্যাক্টর কমন থাকে "সব বেকারের চাকরি চাই"। রুলিং পার্টিকে ধরাশায়ী করে বাই চান্স এরা ক্ষমতায় আসলেও পরবর্তী ভোটের প্রচারে আবার এদের অপজিশনরাও সেই এক বাতেলাকেই ( ইস্যু!) সম্বল করে দু'হাতে দশনখে আঁকড়ে ধরে। ঠিক যেন বাঁদরছা্।​ তার মানে টা কি দাঁড়ালো! এদেশের বেকারত্ব আবহমান! এদেশের বেকারত্ব মার্বেল ইউনিভার্সের বেগুনি থ্যানোসের মতোই চুটকি মেরে পোজ দিয়ে বলে আই অ্যাম ইনএভিটেবল! নাকি ভারতের বেকারত্ব পরতে পরতে থিতিয়ে যাওয়া পুরনো কাসুন্দি! ঘাঁটিয়ে খেতে হেব্বি টেস্ট। হেব্বি ভোট। পাবলিকও সোনাবাচ্চার মতো মুখে পুরে নেয়। এ মা ছিঃ টুকুও বলে না। ওয়াক্ থুঃ করে ফেলেও না।​ অথচ যত ফুটানি ওই এক ধম্ম ধম্ম করে। কোথাও ধম্মের ঘন্টা ঝুলিয়ে কোথাও আবার ঘন্টা দুলিয়ে ধর্মের ষাঁড় হবে তো সব!​ কম্ম চুলোয় যাক, পড়াশোনা করতে হবে না, দুবছরের পর স্কুল কলেজ খুললেও আবার ধপাস করে ধর্ণায় বসে যাব যাতেকরে অনলাইনে গুগল ( টুকলির আপগ্রেডেড ভার্সন ) মেরে ১০০% পাওয়া ভেড়াদের ভীড়ে ভিড়ে যাওয়া যায়। ইঞ্জিনিয়ার সিলিং ফ্যান কে আপন ভূতের ভবিষ্যতের দায়িত্ব দিয়ে ঝুলে যাবে। ডাক্তার মরফিনের ওভার ডোজ করে পৃথিবী কুইট করবে। তবু কলার উঁচিয়ে বুক চিতিয়ে খেলা হবে, খেলা হবে। ছিনিমিনি খেলা হবে। রক্তারক্তি খেলা হবে। বলিহারি ভাই! নয়ন মেলে যেথাই দেখি তোদের সমতুল্য নাই। এদিকে দিনদাহারে কুচিকুচি হয়ে যাক আনিসেরা। তদন্ত কমিটি বসুক, তদন্ত কমিটি উঠুক। চা পানি খাক। টাইড সফেদির বিজ্ঞাপন দিক আমাদের রাজপথ। রিন ডিটারজেন্ট দিয়ে কচলে কচলে ধুয়ে ফেলা হোক দায়িত্ব, কর্তব্যপরায়ণতা, নিয়মশৃঙ্খলা,​ সংবিধান। হামেশা চমক্ তে রহেনা। গদির ভাঙন রুখতে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখুন মুখ্যমন্ত্রী। গঙ্গা আর রাম একে অপরের গলা জড়িয়ে ভক্তির বিড়ম্বনার করুণ বিলাপ শোনাক।​ "তিরঙ্গা একদিন গেরুয়া হবে" টাইপের প্রতিষেধক টীকা বিহীন মৌলবাদের ট্রান্সমিটেড ভাইরাস ছড়াতে থাক শীর্ষ স্থানীয় নেতা (ন্যাতা!) মন্ত্রীরা। ঝুলুঝুলু হনুর দল দুধে মদে পাঞ্চ করে করে পাড়ার ঠেক, পঞ্চায়েত অথবা পার্লামেন্টের কিংকং হোক। জনধন, গোবরধন, দুয়োরে জল ও পশ্চাতে আগুন প্রস্তুত থাকুক আর আমরা একটার​ পর একটা বাল ছিঁড়তে ছিঁড়তে কে​ সেকুলার, কে লিবারেল, কে মাকু, কে চাড্ডি, কে কাটা, কে জোড়া, কে হিন্দু, কে মুসলিম, কে বাঞ্চোত, কে বোকাচোদা এই সব পরিসংখ্যানের তদবিরই করে যাই, কেমন! এতে করে আর কি হবে না হবে জানি না তবে অচীরেই দেশবাসী বাল বাচ্চা শূন্য হবে তবুও শূন্য বহালের পাশে ১ পাবে না। বাঁচলে ভাত পাবে না। আর যদি ভেবে থাকো কোনোমতে টেঁসে গিয়ে শান্তি পাবে, তো জেনে রাখো মরলেও ক্ষমা পাবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.