ত নি মা হা জ রা

শব্দের মিছিল

লিখতে না পারলে কেমন অদ্ভুত একটা অনুভূতি হয় শরীরে। মাথাটা ইঁটের মতো ভারি লাগে। গলার কাছটায় এ্যাসিডিটির মতো একটা কেমন যেন দলা আটকে থাকে। মনে হয় আলজিভের ভেতর আঙুল দিয়ে টেনে বার করে আনে। একটা সিগারেট ধরালো ___।।

ইস গল্পের নায়কের নামটা কি দেওয়া যায়। নামে কি? যা হোক একটা দিলেই হয়।।​

​তাই কি?​ নাম একটা ভীষণ বড় ফ্যাক্টর। পাঠক নাম পড়েই একটা মানুষকে আদ্যন্ত পড়ে ফেলে। যেমন ধরো যদি নাম দেয় প্রিয়তোষ, তাহলে পাঠক মনে মনে কল্পনায় তাকে একটা লুঙ্গি কিংবা বড়জোর সাদা পায়জামা পরিয়ে নেবে, গায়ে সাদা স্যান্ডো গেঞ্জি।। বারমুডা আর রিবক এর টিশার্ট পরাতে দুবার ভাববে।​

​কি জ্বালা প্রিয়তোষের কি বারমুডা আর টিশার্ট পরতে ইচ্ছে হতে পারে না??​

​অবশ্য এখানে এখনো অব্দি বয়সের কথা বলা হয়নি তবুও প্রিয়তোষ নামে বয়সটা কিছুতেই ষাটের এপারে আসে না।।​

​ভেবেচিন্তে নায়ককে মহিলা করে ফেল্ল।​

নায়ক আবার মহিলা!​ ওহ! শিট। তার ওপরে আবার সিগারেট জ্বেলে ফেলেছে। আম আদমী খাবে তো গল্পটা?​ ​

সম্পাদকই হয়তো বলে বসবেন দাদা, প্লিজ, একটু এডিট করে দিতে হচ্ছে গল্পটায়। মেন ক্যারেক্টরটা ফিমেল থেকে মেল করে দিন।​

ধুর বাঞ্চোত!​ এই কম্প্রমাইজ না করার স্বভাবের জন্য নাহোক বিশটা গল্প ফেরত এসেছে।।​

ভাতের ডেলার মতো মাখুমাখু করে খাইয়ে দাও, আয় আয় টিয়ে, নায় ভরা দিয়ে....​

মহিলাদের ফুসফুস বড় নাজুক। ধোঁয়া দিয়ে ছ্যাতলা ফেলে দূষিত করার কোনো মানেই হয় না। সিগারেট খাবে পুরুষ। সে চেনস্মোকার হলে তার ইন্টেলেকচুয়াল এ্যাপিল আরও বেড়ে যায়। মেয়েরা সিগারেট ধরিয়ে নাকের সামনে ধরে টান মারলে বড্ড উদ্ধত লাগে কিন্তু, কসম সে।।​

কোডার্মার কোয়ার্টারে পাতা ঝাঁট দিতে আসা ইমলিকে মনে পড়লো অনেক দিন বাদে। ।​

কপালে, দুইগালে, থুতনিতে উল্কি, হাতের সোল্ডার জয়েন্ট থেকে কনুই ছাড়িয়ে কব্জি অব্দি ফুল লতা পাতা উল্কি। পায়ের গোছায় উল্কি। প্রতিটি কানে রুপোর ঝুমকো তিন থাক। নাকে দারুণ বাহারি নোলক। নিমফুলের কড়ুয়া তেল দিয়ে আঁটো করে বাঁধা খোঁপা।।​

জঙলাছাপ শাড়ি আর চকচকে জরির ব্লাউজ। কোয়ার্টারের সামনের ধাপিটায় উবু হয়ে বসে আয়েশ করে একটা চুট্টা জ্বালাতো। আরাম করে সুখটান সেরে কাজে লেগে পড়তো। কাজ সারা হয়ে গেলে মায়ের কাছ থেকে রুটি, তরকারী পেট কোঁচড়টায় বেঁধে দারুণ একটা না জানা ভাষায় মিঠে গান ভাঁজতে ভাঁজতে বেরিয়ে যেতো।​

তার চুট্টা খাওয়াটাকে তো কিছু অস্বাভাবিক লাগেনি, তাকে তো মহিলা লাগেনি। ।​

হ্যাঁ নায়কের নাম প্রিয়তোষ নয়, প্রিয়াঞ্জলি।।​

নারীকে প্রতিটি গল্পে নায়িকাই যে হতে হবে এমন কোনো মানে আছে কী,​

বাসন যাতে মাজতে না হয় তাই সে ত্বক মাজে, খুলির ভেতর রাখা ঘিলু না খুলে সে সহজ পথে নিম্নাঙ্গ খুলে দাঁড়ায়,​

তারপর, একই মাংস পুড়তে পুড়তে আর পোড়াতে পোড়াতে পুরো প্লটটাই চৌপট করে দেয়।।​

এসব গল্পে চিত্রনাট্য যেন এক পাওয়ার ব্রে, বাকি সব কুশীলব গাদা বন্দুক,​ ওহে, ক্যাডাভ্যারাস মেকআপম্যান স্ট্রবেরি জেলি কোথায়, মৃত্যুদৃশ্যে ক্ষতস্থানে লাগিয়ে দাও,​

ন্যুড সিন, ন্যুড সিন।।​

মাথার ভেতর অজস্র কেন্নো কিলবিল করছে। ক্রমশঃ কাপড় খুলতে খুলতে আর ঘোমটা দিতে দিতে বড্ড ক্লান্ত লাগে।।​

কি করতে চাইছো বলতো,​

খুলতে না ঢাকতে।।​

তেলসিন্দুর থাক, এসো আয়েশ করে একটা চুট্টা ধরাই।। 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.