গোধূলি নিরাময় আর অসাড় ক্লীবত্ব
এইতো বসে আছি। নিঃস্ব গোধূলির ভেতর থেকে উঁকি মারছে দড়ির মতো কয়েকটা আকাঙ্খা, ডানা ঝাপটাচ্ছে কিছু পাখি, আমি নিঃসার চুপচাপ বসে বসে দেখছি সবকিছু। সবকিছু মানে সবকিছুই। কোন ফাঁকি নেই এখানে। পাড়ে দাঁড়িয়ে যেভাবে জলের নীচ অব্ধি দেখা যায় ঠিক তেমনভাবে দেখতে পাচ্ছি।
হলুদ গোধূলি ধীরে ধীরে নেমে আসছে, তারপর জলের থেকে তার নির্ভীকরঙ আর মাটি থেকে উগ্রতা নিয়ে কী যেন একটা বুনছে। আমি আধা আধা অস্পষ্ট আলোয় বোকা হয়ে বসে দেখছি
ভাবছি আলোচনা ছাড়া এভাবে ডিশিশন মেকিং পাওয়ার চারহাতপাওয়ালা মানুষের কেন নেই?
আমার ভাবনাকে কয়েক মাইল দূরে ফেলে গোধূলি ততক্ষণে পৌঁছে গেছে সন্ধের অন্ধ স্টেশনে। আমি ওর ডানহাত ধরে আছি। বন্ধ হয়ে আসছে সামনের সবকিছু। ফেলে আসা রাস্তায় জমানো ছিলো রোদ , কোথাও কোথাও ছিলো ভেঙেপড়াগাছেরডাল পাথুরেগুহা পাকাপাকাফল। ফলাফল পাব এই উদ্যোগ নিয়ে সেইজন্যই তো সন্ধের সাথ নিলাম। তুলসীমঞ্চ ঘিরে হরিনাম হচ্ছে, দারুণ ব্যাস্ততা। কোনজায়গায় কোন শুন্যতা নেই। প্রচুর লোকসমাগম। শব্দে শব্দে বাড়ছে সময়, সাদাসিধা রঙ নিয়ে যে গোধূলি জন্মেছিলো একদিন, আমার চোখের সামনে দৃশ্য বদলাতে বদলাতে বাড়তি পথে আজ সে রাতের দোরগোড়ায়। তার বয়স আন্দাজ করা সম্ভব হচ্ছে না বরং এটা ভেবে অবাক লাগছে কিভাবে ফিকে হবার পরিবর্তে ক্রমশ গাঢ় হচ্ছে আয়ুকাল আমি জব্দ হচ্ছি, প্রতিমুহূর্তে অবনতি হচ্ছে আত্মসম্মানের।তবু লেগে থাকতেই হবে, চেয়ে থাকতে হবে ততক্ষণ যতক্ষণ না ছায়াছবি পাল্টে চলচ্চিত্র হচ্ছে। আসলে স্থিরচিত্রের মূল্য সংযোজনের আগে শিক্ষিত হওয়া বাঞ্ছনীয়।
রাত পার হয়ে গেল, গোধূলির আলোমাখা রাস্তার সঙ্গী হলাম সৌভাগ্যে।শরীরে স্বস্তির সুবাস ভরে নিয়ে ফিরে এলাম সেই গন্তব্যে, সাবাসি দিলাম নিজেকে আরেকবার। প্রকৃতি অরণ্য জল আগুন মেঘ বৃষ্টি এসব অর্জন করবো ভাবতে ভাবতে শিখে নিলাম কিভাবে ছায়ার দেহে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করতে হয়...
অস্ত যাওয়া সূর্য আবার উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো প্রতিটি মোড়ে ।আমি সস্তার বান্ধবী, গাছের কোটরে আশ্রয় নিলাম, ঠোঁট কাঁপল, বলতে গিয়েও আটকাল স্বর। ধন্যবাদ উচ্চারণটা অধুরাই থেকে গেল।
পরবর্তী জন্মে আমি তাই হব,পুরুষ গোধূলির বুক থেকে শুষে নেব মরুভূমির শেষ জলটুকুও ...
সুচিন্তিত মতামত দিন