টুপটাপ করে হিম পড়ছে টিনের চালে, টিউবওয়েল থেকে উঠে আসে গরম জল, কোথা থেকে যেন ভেসে আসে নতুন চাল বর নলেন গুঁড়ের পায়েসের গন্ধ... নবান্ন হয়ে গেলো! শীতের৷ আমেজ এসে লাগছে গায়ে তা মাটির দাওয়ায় বসে টের পায় নব্বই ছুঁই ছুঁই ইন্দু বালা, এ সংসারের সর্বময় কতৃ। মনে মনে হাসে সে। এমনই এক হেমন্তের বিকেলে কোন এক গোধূলি বেলায় ছোট্ট ছোট্ট পায়ে আলতা পরে এ সংসারে পা রেখেছিল আজ তা কেবলমাত্র স্মৃতির পাতায়। খসখস করে ঝড়ে পড়ে আমলকী গাছের পাতা উঠোনময়। হেমন্ত কেমন যেন গাছের বয়স কে দাঁড় করিয়ে দেয় লোকচক্ষুর সামনে। হলুদ পাতাগুলোকে ঝরিয়ে ফেলে উত্তুরে হিমেল হাওয়া। ঠিক যেমন তার শরীরের খড়ি ওঠা ঝুলঝুলে চামড়া আর মুখের বলিরেখা বলে দেয় আর কতদিন এভাবে বসে পাহাড়া দেবে জগৎ সংসার? এসকল প্রশ্নের জবাবে সে একটাই কথা বলে যতদিন না যমের দূতেরা নিয়ে না যায়...
সত্যি তো কমকিছু তো সে দেখেনি এই একটি জীবনে। সেই নেতাজী থেকে মোদীজী...
দেশভাগের চরম অরাজকতার পর নিজের জেলা বরিশাল থেকে কোনক্রমে পালিয়ে এসেছিল এদেশের সুন্দর বনে। যেখানে বাঘে কুমীরের বাস করে একসঙ্গে। কিন্তু তাদের মধ্যেও একটা গুণ আছে প্রয়োজনেই শিকার করে অথচ নরমাংস লোভী রক্তপিপাসু মানুষ খেকো মানব জাতির থেকে অতি কষ্টে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখাটা কতটা দুঃসাধ্য তা সে ছাড়া গুটি কতক লোকই জানে! তখনও তো বিপদ আপদের মতো মাঝেমাঝেই জুটে যেত রোগ ব্যাধী। মহামারী আগেও হয়েছে... এইরকম এক করে রাখেনি মানুষের থেকে মানুষকে। নইলে
কলেরায় যখন পাশাপাশি গ্রাম প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল তখন সন্তানদের নিয়ে উঠে আসতে হয়েছে উদ্বাস্তু কলোনিতে তখন যদি তার পাশে আসেপাশের মানুষেরা না দাঁড়াত তাহলে সে কি বাঁচতে পারত! তারপর! তারপর আবারও লড়াই আর এই সুন্দর বনের ভিটেমাটি উদ্ধার ..
বিন্নি ডাক দিচ্ছে সেই কখন থেকে... ঠাকমা ও ঠাকমা হাতে সাবান ঘষে আসো , পায়ে চটি দাও, মুখের মাক্স খোলো মা খেতে দিয়েছে যে... এ রোগের দেবতার নাম না কি চীন... সানি মানে নাতির ঘরে পুঁতি শিখিয়েছে বড়মা বলো --'গো করোনা গো'... ইন্দু বালা যপের মালায় এখন দুবেলা এই মন্ত্রই আওড়ে যাচ্ছে তাতে যদি নাতিটার ভটভটির কাজটা চালু হয়...ছেলেদের মাছের ব্যবসা, টুরিস্ট লজের ব্যবসাটা ফেল না করে! জমি গুলো হাতছাড়া না হয়! 'গো করোনা গো...'
সুচিন্তিত মতামত দিন