■ শাঁখের শব্দের মতো
পথে অন্ধকার আছে। অন্ধকারের একটা দাবি আছে, অস্থির করে দিতে চায়, যাতে তোমার পথভ্রান্তি হয়। আমি স্থির থাকার চেষ্টা করি, মগ্ন থাকতে চাই। তোমাকেও বলেছি, ধীরে ধীরে মেপে পা ফেল।
তুমি একদিন নদী হতে চেয়েছিলে। আমিও ভেসে যাওয়ার আনন্দে তখন কি উন্মাদ! যেন আজন্ম অপেক্ষা করছিলাম তীরে দাঁড়িয়ে কবে তুমি স্রোতের টানে ডুবিয়ে নেবে। ভাগ্যিস নদী হয়ে যাওনি। তাহলে তোমার উপর কি যে হতো! কেউ মাল্টিকুইজিন রেস্টুরেন্ট বানাতে চাইত, কেউ চাইত খড়ের ছাউনি দিয়েই গাড়ির টায়ার সারানোর দোকান খুলতে। প্লাবন এলে হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ত ভালোবাসায় গড়া ঘর সংসার। কারও সংসার ভেঙে যাওয়া তুমি সামলাতে পারতে?
তুমি একবার অনেক দুঃখে পাথর হতে চেয়েছিলে। তাতেও কি নিষ্কৃতি পেতে? কবে আমি এসে তোমাকে স্পর্শ করে আবার তোমার রূপ ফিরিয়ে দেব সেই অপেক্ষা শেষ হওয়ার আগেই তুমি ভেঙে ছড়িয়ে পড়তে। কোথাও বড় টুকরো, কোথাও ছোট ছোট চিপসের মতো, কোথাও বা চোখ ঝাপসা করে দেওয়া ধুলো হয়ে। পাথর হয়ে নির্লিপ্ত থাকাও এখন খুব সহজ নয়।
আলোর জন্য তো অপেক্ষা করতেই হবে। সেই তো শাপভ্রষ্ট খানাখন্দ গুলোকে চিনিয়ে দেয়। সেই সত্যকে লালন করো। হাতের পাঁচ আঙ্গুলের সবকটিতে একটিই প্রত্যয় শাঁখের শব্দের মতো বাজুক, অন্ধকারে অস্থির না হয়ে বাকি রাতটুকু জেগে থাকবে, যতক্ষণ না রোদ্দুর এসে শিশুর মতো পাঁচিল কোলে খেলা করে।
সুচিন্তিত মতামত দিন