■ ইভিএম না ব্যালট?
দুনিয়া জুড়ে মার্কিণ রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে বিপুল আগ্রহের ভিতর দিয়ে প্রায় এক পক্ষকাল সময়ব্যাপী ভোটগণনা সমাপ্ত হলো সম্প্রতি। বিশ্বের একমাত্র সুপারপাওয়ার আমেরিকায় ভোট গণনায় সময় লাগল প্রায় দুই সপ্তাহ। আর ভারতবর্ষের মতো সর্ব বিষয়ে পিছিয়ে পড়া একটি দেশে ভোট গণনা সমাধান হয়ে যাচ্ছে প্রায় এক বেলার মধ্যেই। সৌজন্যে ইভিএম মেশিন। যে প্রযুক্তির উদ্ভাবন ভারতবর্ষের মতো কোন তৃতীয় বিশ্বের দেশেও নয়। ভারতে যখন ভোট গণনা শেষ হতে তিন থেকে চার পাঁচ দিন সময় লেগে যেতো। তখন আমরা অবাক বিস্ময়ে দেখতাম আমেরিকায় এক বেলার মধ্যেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হয়ে যাচ্ছে। তৃতীয় বিশ্বের মানুষ হিসাব ইনফিওরিটি কমপ্লেক্সে কল্পনা করতাম, আহা কবে আমাদের রাষ্ট্র ব্যবস্থা এমন উন্নত মানের হয়ে উঠবে। বুঝতে পারতাম না, ভোট গণনার আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারেই রাষ্ট্রব্যবস্থার উন্নতি নিশ্চিত হয় না। রাষ্ট্রব্যবস্থার উন্নতি নির্ভর করে অনেকগুলি বিষয়ের উপরে। যার ভিতরে প্রতিটি নাগরিকের অন্ন বস্ত্র বাসস্থানের ও শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিসেবার নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তার বিষয়টিই প্রথম ও প্রধানতম শর্ত। না, আজকের মার্কিণ যুক্তরাষ্ট্রও সেই মাপকাঠিতে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ থেকে বেশ পিছিয়ে রয়েছে। সেখানেও রাষ্ট্র প্রতিটি নাগরিকের অন্ন বস্ত্র বাসস্থান এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিসেবার নিশ্চয়তা দিতে পারছে না। কিন্তু আমরা সেদিন মনে করেছিলাম, ইভিএম প্রযুক্তিতে ভোট গ্রহণ উন্নত রাষ্ট্রব্যবস্থারই অন্যতম এক নিদর্শন।
এবং অবাক করা কাণ্ড আজকে ভারতবর্ষে এই ইভিএম প্রযুক্তিতেই ভোট গ্রহণ ও গণনা করা হয়। আর খোদ মার্কিণ মুলুকেই সেই প্রযুক্তি বাতিল করে দিয়ে শতাব্দী প্রাচীন সেই ব্যালট পেপারে ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে। এবং ব্যালট পেপার গণনা করে কোন প্রার্থী বিজয়ী হয়েছে, দেখা হচ্ছে। ব্যালট পেপার গণনা একটি সময় সাপেক্ষ বিষয়। তাই সময় লাগছে অনেক বেশি। মানুষের হাতে ব্যালট পেপার গণনা করা হতে সময় লাগারই কথা। এবং অনেক ক্ষেত্রেই একাধিকবার গণনা করতেও হচ্ছে। নির্ভুল ফলাফল নিশ্চিত করতে। সময় লাগলেও এই পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে গায়ের জোরে বুথ দখল করে ছাপ্পা ভোট না দিতে পারলে, এবং ভোট গণনা কেন্দ্রে ব্যালট পেপার ছিনতাই না করতে পারলে ভোটের ফলাফলে কাপচুপি করা কার্যত অসম্ভব। অর্থাৎ এইখানেই স্বাভাবিক একটি প্রশ্ন উঠে আসে। যে দেশের মানুষ প্রতিটি সময় অর্থমূল্যে বিচার করে, হিসাব করে। যে দেশে জনজীবন অত্যন্ত দ্রুত এবং সর্ববিধ আধুনিকতম প্রযুক্তি নির্ভর। সেই দেশে ইভিএম প্রযুক্তিতে ভোট গ্রহণ বাতিল করে শতাব্দী প্রাচীন ব্যালট পেপার ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হলো কেন?
এটা মনে করার কোন কারণ নাই। মার্কিণ যুক্তরাষ্ট্র ভারতের থেকে অনুন্নত রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চাইছে।
এটাও নয় যে সে দেশের রাজনৈতিক দলগুলি প্রযুক্তির বিরোধী। এমনও নয়, সে দেশের মানুষ দিনে দিনে অলস ও অকর্মণ্য হয়ে উঠছে। ফলে তাদের কাছে সময়ের মূল্য কমে চলছে দিনে দিনে। ফলে ভোটের ফলাফল প্রকাশ হতে এক পক্ষকাল সময় লাগলেও কারুর কিছু যায় আসে না। না এইগুলির কোনটিই সত্য নয়। আমরা বরং এবার একটু নজর ফেরাই আমাদের নিজেদের সকল দেশের সেরা ভারতবর্ষের দিকেই। বেশ কয়েক বছর ধরেই একাধিক রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিবর্গ ইভিএম যন্ত্রে ভোট কারচুপি নিয়ে সরব হয়েছেন। এমনকি খোদ দিল্লীর বিধানসভায়, কিভাবে ইভিএম যন্ত্রে কারচুপি করে নির্দিষ্ট কোন দলকে বিজয়ী করা সম্ভব, হাতে কলমে সেই প্রযুক্তির নিদর্শন পরীক্ষা করেও দেখানো হয়েছে। দেখানো হয়েছে, ইভিএম মেশিনে প্রতিটি প্রার্থীর নামের সাথে একটি বিশেষ কোড থাকে। যেটি কোন রাজনৈতিক দলেরই জানার কথা নয়। কিন্তু দুর্নীতির রামরাজত্বে সরকারী মদতে ক্ষমতাসীন বিশেষ বিশেষ রাজনৈতিক দলের পক্ষে নিজ নিজ প্রার্থীর সেই সাংকেতিক কোড জেনে নেওয়াও কোন অসাধ্য কাজ নয়। এবং দিল্লী বিধানসভার সেই অধিবেশনে হাতে কলমেই দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে, কিভাবে এক একটি বুথে যেকোন সময় মাত্র একজন ভোটার, যার কাছে বিশেষ প্রার্থীর নামের গোপন সংকেত সংখ্যা রয়েছে, সেই সংকেত ইভিএম যন্ত্রে ঢুকিয়ে দিতে পারে। আর পারলেই কেল্লাফতে। তার পরের সকল ভোটার যে প্রার্থীকেই ভোট দিক না কেন। সেই ভোট গিয়ে যুক্ত হবে নির্দিষ্ট সেই প্রার্থীর একাউন্টেই। যার নামের গোপন সাংকেতিক কোড ইভিএম যন্ত্রে ইনপুট করে দেওয়া হয়েছে আগেই। তথ্যসূত্র
না এটা কোন কল্পকাহিনী নয়। দিল্লী বিধানসভায় প্রকাশ্য অধিবেশনেই এই গোটা বিষয়টি ডেমনোস্ট্রেশন করে দেখানো হয়েছে। বেশ কয়েক বছর আগেই। তারপরেও নির্বাচন কমিশনের কোন হেলদোল নাই। কারণ সহজেই অনুমেয়। নির্বাচন কমিশনের মাথার উপরে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সরকার বসে রয়েছে। যারা এই বিষয়ে ইভিএম প্রযুক্তির পক্ষেই সমর্থন জ্ঞাপন করেছে। এবং আরও বড় খবর। ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে প্রায় তিনশতাধিক নির্বাচনী কেন্দ্রে এইভাবে ইভিএম মেশিনে কারচুপি করে ভোটের ফলাফল নির্ধারণের অভিযোগ নিয়ে একাধিক মামলা ঝুলে রয়েছে খোদ সুপ্রীম কোর্টেই। মামলার বাইরেও বহু অভিযোগ উঠে এসেছে বিভিন্ন তথ্যসূত্রে ও গবেষণায়। তথ্যসূত্র
সত্য সেলুকাস কি বিচিত্র এই দেশ। ৫৪২টি আসনের ভিতরে তিনশতাধিক আসনেই ইভিএম কারচুপির অভিযোগের মামলা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে আদালতেই। ইতিমধ্যেই চলে গিয়েছে দেড় বছর। আরও চার বছর অতিক্রান্ত করে দিতে খুব বেশি কাঠখড় পোড়াতে হবে না। ফলে সময়ের সাথে প্রমাণ লোপাটের রাজপথ দিনে দিনে প্রশস্ত করে দিয়ে আদালতের কাজ অনেক সহজ করে দেওয়াও সম্ভব হবে। মাখনের ভিতর দিয়ে ছুরি চালানোর মতোন। তথ্যসূত্র
না মার্কিণ যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনে এবং সেই দেশের আইন ব্যবস্থায় এইরকম দুর্নীতির প্রশ্রয় দেওয়া হয় না। ফলে যখনই সেই দেশের প্রশাসন অনুধাবন করতে পেরেছে। ইভিএম মেশিনে ভোট কারচুপি করা এতটাই সহজ। তখনই তারা সমস্ত বিষয়টি খতিয়ে দেখে নিজেদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তিকেই বাতিল করে দিয়ে ফিরে গিয়েছে সেই শতাব্দী প্রাচীন পদ্ধতিতে। তাতে সময় অনেক বেশি লাগলেও ফলাফল নির্ভুল হওয়ার সম্ভাবনা ষোলআনা। যেটি একটি উন্নত রাষ্ট্রব্যবস্থার নিদর্শন। বিশ্বের একমাত্র সুপারপাওয়ার সেই সহজ সরল পথটিই বেছে নিয়েছে। ভুল পথটিকে পরিহার করেই। তাতে সে দেশের রাজনৈতিক দলগুলির কারুরই স্বার্থহানি ঘটে নি। তার একটাই কারণ। সেই দেশের রাজনীতিতে দলের উর্ধে দেশ। রাজনীতির উর্ধে স্বজাতি। এবং বজ্জাতির উর্ধে সমাজ।
এবার আসুন একটা সহজ হিসাবের দিকে নজর দেওয়া যাক। যারা প্রতিদিন ইনটারনেট ব্যবহার করেন। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় ব্যয় করেন। সকলেই জানেন অনেকেরই একাউন্ট হ্যাক করা হয়ে থাকে। যারা এটিএমে টাকা তোলেন। সর্বদাই ভয় ভয় থাকেন এই বুঝি কেউ প্রযুক্তির সহায়তায় জমানো অর্থ হাপিশ করে দিল। এবং খবরের কাগজের পাতা খুললে আকছাড় এরকম সব ঘটনা চোখে পড়ে। যেগুলিকে আইনের পরিভাষায় সাইবার ক্রাইম বলা যেতে পারে। এবং আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নিয়েই হার্ডওয়্যার কিংবা সফ্টওয়্যার ট্যাম্পার করেই এই সকল অপরাধগুলি সংঘটিত করা হয়ে থাকে। ইভিএম মেশিনে কারচুপি করে বিশেষ কোন প্রার্থীকে বিজয়ী করে দেওয়াও কি একই ধরণের অপরাধ নয়? এটিও কি সাইবার ক্রাইমের আওতায় নয়? মার্কীণ সমাজ ও রাষ্ট্র, রাজনৈতিক সংগঠন ও প্রশাসন কিন্তু এইভাবেই বিষয়গুলি বিচার করে তবেই আধুনিক প্রযুক্তিকে বাতিল করে ফিরে গিয়েছে শতাব্দী প্রাচীন পদ্ধতিতে। সময়ের অপব্যায় সেখানে কোন অজুহাত হয়ে উঠে দাঁড়াতে পারে নি। তার একটাই কারণ। জাতিগত ঐতিহ্য। দেশ সমাজ ও ব্যক্তির প্রতি রাষ্ট্রের সামগ্রিক দায়দ্ধতা। সে দেশের রাজনৈতিক দলগুলির ভিতরে পরস্পরের নীতি লক্ষ্য ও মতাদর্শগত যত বিভেদই থাকুক না কেন। রাষ্ট্রের স্বার্থে, দেশের স্বার্থে জাতির স্বার্থে তাদের ভিতরে কোন বিরোধ নাই। সকলেরই একটাই লক্ষ্য বিশ্বের একমাত্র সুপারপাওয়ার হিসাবে মার্কিণ যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিশ্চিত করা। এবং মার্কিণ জনগণকে স্বচ্ছ এবং শক্তিশালী সরকার উপহার দেওয়া। সেই বিষয়ে কোন রাজনৈতিক দলই কোন রকম দুর্নীতির সাথে আপোষ করতে রাজি নয়। আজকের ভারতবর্ষের অধিকাংশ মানুষই মার্কিণপন্থী। অধিকাংশই মার্কিণ প্রশাসনের কথাকে বেদবাক্য জ্ঞানে বিশ্বাস করে। অধিকাংশ ভারতীয়ই মার্কীণ স্বার্থ সুরক্ষিত থাকলে নিশ্চিন্ত বোধ করে। সেই মার্কিণ প্রেমী ভারতীয় সমাজের অন্তত ইভিএম প্রযুক্তির গলদ নিয়ে সোচ্চার হয়ে ওঠা উচিত। তাদের আদর্শ সেই মার্কিণ মুলুক যে ধরণর ভোট গ্রহণ পদ্ধতিতে ফিরে গিয়েছে, ভারতবর্ষও যাতে তার বড়ো দাদার পদকাঙ্ক অনুসরণ করে। সেই বিষয়েও অন্তত একটা জনমত গড়ে উঠলে। আখেরে কিন্তু লাভ হতো ভারতবর্ষেরই।
২১শে নভেম্বর’ ২০২০
না এটা কোন কল্পকাহিনী নয়। দিল্লী বিধানসভায় প্রকাশ্য অধিবেশনেই এই গোটা বিষয়টি ডেমনোস্ট্রেশন করে দেখানো হয়েছে। বেশ কয়েক বছর আগেই। তারপরেও নির্বাচন কমিশনের কোন হেলদোল নাই। কারণ সহজেই অনুমেয়। নির্বাচন কমিশনের মাথার উপরে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সরকার বসে রয়েছে। যারা এই বিষয়ে ইভিএম প্রযুক্তির পক্ষেই সমর্থন জ্ঞাপন করেছে। এবং আরও বড় খবর। ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে প্রায় তিনশতাধিক নির্বাচনী কেন্দ্রে এইভাবে ইভিএম মেশিনে কারচুপি করে ভোটের ফলাফল নির্ধারণের অভিযোগ নিয়ে একাধিক মামলা ঝুলে রয়েছে খোদ সুপ্রীম কোর্টেই। মামলার বাইরেও বহু অভিযোগ উঠে এসেছে বিভিন্ন তথ্যসূত্রে ও গবেষণায়। তথ্যসূত্র
সত্য সেলুকাস কি বিচিত্র এই দেশ। ৫৪২টি আসনের ভিতরে তিনশতাধিক আসনেই ইভিএম কারচুপির অভিযোগের মামলা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে আদালতেই। ইতিমধ্যেই চলে গিয়েছে দেড় বছর। আরও চার বছর অতিক্রান্ত করে দিতে খুব বেশি কাঠখড় পোড়াতে হবে না। ফলে সময়ের সাথে প্রমাণ লোপাটের রাজপথ দিনে দিনে প্রশস্ত করে দিয়ে আদালতের কাজ অনেক সহজ করে দেওয়াও সম্ভব হবে। মাখনের ভিতর দিয়ে ছুরি চালানোর মতোন। তথ্যসূত্র
না মার্কিণ যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনে এবং সেই দেশের আইন ব্যবস্থায় এইরকম দুর্নীতির প্রশ্রয় দেওয়া হয় না। ফলে যখনই সেই দেশের প্রশাসন অনুধাবন করতে পেরেছে। ইভিএম মেশিনে ভোট কারচুপি করা এতটাই সহজ। তখনই তারা সমস্ত বিষয়টি খতিয়ে দেখে নিজেদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তিকেই বাতিল করে দিয়ে ফিরে গিয়েছে সেই শতাব্দী প্রাচীন পদ্ধতিতে। তাতে সময় অনেক বেশি লাগলেও ফলাফল নির্ভুল হওয়ার সম্ভাবনা ষোলআনা। যেটি একটি উন্নত রাষ্ট্রব্যবস্থার নিদর্শন। বিশ্বের একমাত্র সুপারপাওয়ার সেই সহজ সরল পথটিই বেছে নিয়েছে। ভুল পথটিকে পরিহার করেই। তাতে সে দেশের রাজনৈতিক দলগুলির কারুরই স্বার্থহানি ঘটে নি। তার একটাই কারণ। সেই দেশের রাজনীতিতে দলের উর্ধে দেশ। রাজনীতির উর্ধে স্বজাতি। এবং বজ্জাতির উর্ধে সমাজ।
এবার আসুন একটা সহজ হিসাবের দিকে নজর দেওয়া যাক। যারা প্রতিদিন ইনটারনেট ব্যবহার করেন। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় ব্যয় করেন। সকলেই জানেন অনেকেরই একাউন্ট হ্যাক করা হয়ে থাকে। যারা এটিএমে টাকা তোলেন। সর্বদাই ভয় ভয় থাকেন এই বুঝি কেউ প্রযুক্তির সহায়তায় জমানো অর্থ হাপিশ করে দিল। এবং খবরের কাগজের পাতা খুললে আকছাড় এরকম সব ঘটনা চোখে পড়ে। যেগুলিকে আইনের পরিভাষায় সাইবার ক্রাইম বলা যেতে পারে। এবং আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নিয়েই হার্ডওয়্যার কিংবা সফ্টওয়্যার ট্যাম্পার করেই এই সকল অপরাধগুলি সংঘটিত করা হয়ে থাকে। ইভিএম মেশিনে কারচুপি করে বিশেষ কোন প্রার্থীকে বিজয়ী করে দেওয়াও কি একই ধরণের অপরাধ নয়? এটিও কি সাইবার ক্রাইমের আওতায় নয়? মার্কীণ সমাজ ও রাষ্ট্র, রাজনৈতিক সংগঠন ও প্রশাসন কিন্তু এইভাবেই বিষয়গুলি বিচার করে তবেই আধুনিক প্রযুক্তিকে বাতিল করে ফিরে গিয়েছে শতাব্দী প্রাচীন পদ্ধতিতে। সময়ের অপব্যায় সেখানে কোন অজুহাত হয়ে উঠে দাঁড়াতে পারে নি। তার একটাই কারণ। জাতিগত ঐতিহ্য। দেশ সমাজ ও ব্যক্তির প্রতি রাষ্ট্রের সামগ্রিক দায়দ্ধতা। সে দেশের রাজনৈতিক দলগুলির ভিতরে পরস্পরের নীতি লক্ষ্য ও মতাদর্শগত যত বিভেদই থাকুক না কেন। রাষ্ট্রের স্বার্থে, দেশের স্বার্থে জাতির স্বার্থে তাদের ভিতরে কোন বিরোধ নাই। সকলেরই একটাই লক্ষ্য বিশ্বের একমাত্র সুপারপাওয়ার হিসাবে মার্কিণ যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিশ্চিত করা। এবং মার্কিণ জনগণকে স্বচ্ছ এবং শক্তিশালী সরকার উপহার দেওয়া। সেই বিষয়ে কোন রাজনৈতিক দলই কোন রকম দুর্নীতির সাথে আপোষ করতে রাজি নয়। আজকের ভারতবর্ষের অধিকাংশ মানুষই মার্কিণপন্থী। অধিকাংশই মার্কিণ প্রশাসনের কথাকে বেদবাক্য জ্ঞানে বিশ্বাস করে। অধিকাংশ ভারতীয়ই মার্কীণ স্বার্থ সুরক্ষিত থাকলে নিশ্চিন্ত বোধ করে। সেই মার্কিণ প্রেমী ভারতীয় সমাজের অন্তত ইভিএম প্রযুক্তির গলদ নিয়ে সোচ্চার হয়ে ওঠা উচিত। তাদের আদর্শ সেই মার্কিণ মুলুক যে ধরণর ভোট গ্রহণ পদ্ধতিতে ফিরে গিয়েছে, ভারতবর্ষও যাতে তার বড়ো দাদার পদকাঙ্ক অনুসরণ করে। সেই বিষয়েও অন্তত একটা জনমত গড়ে উঠলে। আখেরে কিন্তু লাভ হতো ভারতবর্ষেরই।
২১শে নভেম্বর’ ২০২০
আরও তথ্যসূত্র:
US-based ‘cyber expert’ alleges 2014 General Elections were rigged, makes other sensational claims
EVM ‘tampering’: activists send legal notice to foreign microchips makers
India's Election Ghosts In The Machine?
India election 2019: Are fears of a mass hack credible?
সুচিন্তিত মতামত দিন