প্রেম আর দূষণের ভিতর লাট্টুর মতো পাক খাচ্ছে বাসি যৌন-বাসনা। কুসুম বাসনা ছেড়ে এলে মৃতপ্রায় স্টেশনে জারবেরার বাগান জন্ম নেয়, ভ্রমর বসে অকাল প্রণয় ভঙ্গের বেদনা থেকে সেরে ওঠা পাপড়ির ভ্রু-মধ্যে।
একটা ট্রেন হুশ করে চলে যায়। যাত্রীহীন ট্রেন ও পৃথিবী। মাধুকরী চাঁদ সংসারের স্বপ্ন দেখে। কত-কী বলিতে চাওয়া রঙ্গ-রসিলা সময় কী আশ্চর্য আসক্তিতে এজীবনের তামাম যতিচিহ্ন থেকে নিজেকে মুক্ত করে। নির্লজ্জ্ মিথ্যে সত্য সেজে go as you like থেকে সত্যি পুরস্কার নিয়ে যায়। তামাম আলো তার মুখে। সত্যি তো চিরকালই নিঃস্ব। একা। কিন্তু বৈভবময়। দ্যুতিময়। আমি ভুল থেকে মন সরাই। মন থেকে ভুল। আমি চোখ থেকে কাজল মুছি। কলঙ্ক থেকে গল্প। ঘষে-ঘষে মুছি। চেটেপুট মুছি। সব স্তব্ধতা ভেঙে কে-যেন গেয়ে ওঠে, 'আঁধার
আমার ভালো লাগে...'
বাতাস ভাঙছে... শুনতে পাও কেউ?
শেষ চিঠি লিখে নদী উধাও হল... কেউ কি দেখেছো কোথাও তার পায়ের ছাপ? আঁচলের দাগ?
আমি মৃত্যুবোধ ছেনতে-ছেনতে কাদা জলে নিজেকে খুঁজতে থাকি...অথচ, সেই আশ্চর্য জানালাটাই বারবার বিম্বিত হয় ওই জলে...
একটা ছদ্মনামের গল্প...
ইঙ্গিত লিখে যায় অসমাপ্ত ঘুঙুরের কথা।
দুপুরের কথা। নরম মাংসের কথা।
ব্যাকস্পেস মুছতে থাকে
জলঙ্গির পাড়ে অন্য বনলতার মুখ।
ছদ্মনাম থেকে সরে ছদ্মনামে
ঘুঙুরের আত্মজীবনী...
সব মাংসের কী একই স্বাদ? সব ছাইয়ের কী একই নেশা? সব নেশাই কি উড়ে যাওয়ার কথা বলে? সব পুড়ে যাওয়া আউটফিট কি একইরকম? সব চিৎকারের কি একইরকম আওয়াজ? খুব জানতে ইচ্ছে হয় এসব। যার পাশে সবচেয়ে বেশি থাকতে চাওয়া, তার থেকে বহুদূরে থাকাই বোধহয় ডেস্টিনি অথবা রেড-ওয়াইনের ভিতর থেকে ওই লাল রঙ সরে যাওয়া কি কোনোভাবে হ্যালিউসিনেট করে আমায়? বিশ্বাস করুন, তার বলা কোনও কথাই কখনোই আমি আমার অন্য কানেও নিইনি, পাছে সে ধরা পড়ে যায়, তার কথাগুলো আমার ঠোঁটে কী আশ্চর্য ভাবে বসিয়ে তিনি 'গুরু-মা' হয়ে উঠলেন! এই নামটা আমার দেওয়া নয়। যিনি একদিন ব্যঙ্গ করে এ নাম দিয়েছিলেন, সত্যিই আজ তাঁকেই সে 'গুরু-মা' বানিয়েছে! মা গোসাঁই গো, খুব বলতে ইচ্ছে করে, 'কতই রঙ্গ দেখি দুনিয়ায়...'!
আত্মজীবনী থেকে সেই কবে ঘুঙুর একটা-একটা করে ছিঁড়ে ছিটকে গেছে! কোত্থাও কোনও আওয়াজ শোনেনি কেউ। আচ্ছা, জলেরও তো একটা নিজস্ব আওয়াজ আছে তাই না? আকাশেরও তো! কম্পেনসেট করা বা না-করা জীবনের ভিতর একটা আওয়াজ আছে; সে হামাগুড়ি দিতেই ভালোবাসে।হাওয়া আর মেঘ হাত ধরে হাঁটছিল। হাওয়াটার মুখে একটা প্লাস্টিক এসে পুরো মুখটাকেই তার দখলে নিল। নীচ থেকে ভাপা ইলিশের গন্ধ ছুটে আসছে; ঘরের কাছে আসতেই থমকে দাঁড়িয়ে পড়লো; ঘরের ভিতর তীব্র মেঘ... জানালাটাও আস্তে-আস্তে অস্পষ্ট; কিলবিল করা সাপেরা শ্বাস নিতে পারছে না। অক্সিমিটার পড়ে আছে কে-জানে! সারা বাড়ি ছেয়ে ফেলেছে মেঘ! আমরা কেউ কাউকে দেখতে পাচ্ছি না... কেবল একটা হুইসল শোনা গেল আবার মুহূর্তে মিলিয়ে গেল...
এক্সপেক্টেড আরাইভাল টাইমটা যেন ক'টায় ছিল?
সুচিন্তিত মতামত দিন