চিত্রাভানু সেনগুপ্ত

চিত্রাভানু সেনগুপ্ত

■ তৃতীয় পর্ব ■ পুব দিগন্তে ঊষার ঈষৎ রক্তিম আভা যখন ফুটে উঠলো, আঁধার তত ম্লান হয়ে এল। বিটপী শাখায় ঘুমভাঙা পাখপাখালির কলতানে চতুর্দিক মুখরিত হয়ে উঠলো। কুমুদিনী উঠানে গোবর ছড়া​ দিয়ে মাটির উনুনে ছাই ঝেড়ে কাঠ কেটে বেছে নতুন দিনের কাজে হাত লাগালো। রামকানাই এখনো বিছানা ছাড়েননি। রেডিওটা হাতে নিয়ে নবটা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে কচকচ ঘরঘর শব্দে ঘরের নিস্তব্ধ ঘুমন্ত পরিবেশটাকে বিব্রত করে তুলেছেন। সরোজ চোখ বন্ধ করে পাশ ফিরে শুয়ে রইল কিছুক্ষন তারপর এই অনবরত যান্ত্রিক শব্দটা ক্রমশ অসহ্য হতে লাগলো। বালিশটা কানে চাপা দিয়ে বলল......

__"বাবা, ওটা থামাও না!

__"আজ ভালো নজরুল গীতি দেবে বুঝলি?"

সরোজ একটা "হুম" ছাড়া আর কিছুই বলে উঠতে পারলো না। বিছানা ছেড়ে উঠে মাজন হাতে কুয়োর পাড়ে গিয়ে চিৎকার করে কুমুদিনী কে বলল....

__"কড়া করে চা বানাওনা মা! আমি কিন্তু বড় কাপে খাবো।"

​উনুনের গনগনে আঁচে চায়ের পাত্র চড়ে গেছে। কানাই রেডিওটা বন্ধ করে ওপাশ ফিরে শুলেন। সরোজু ঘরে ঢুকে বলল...."বাবা! তুমি এখনো শুয়ে আছো? উঠবে না? চার দিন হল বাবা, এবেলাও চেম্বার খুলবে না?"

কানাই উঠে বসে বললো....

__"শরীরটা খুব একটা ভালো নেই রে মা। আমি ভাবছিলুম তোর সাথে একটা বিষয়ে কথা বলবো। বরং সেইটে বলি?" খাটের উপর নিজের কোলের পাশের জায়গাটা নির্দেশ করে বলল...."আয় বোস"।

বাপের চোখের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে কিছু যেন বোঝার চেষ্টা করল সরোজ তারপর ধীর পায়ে কানাইয়ের পাশে গিয়ে বসলো।

কানাই বললেন...."বাঁকুড়া থেকে আলো বেশ কিছুদিন ধরে বলছে, সবাই মিলে একবার সেখানে গিয়ে ঘুরে আসি। আমি এই গাঁয়ের মনিষ্যিদের কথা ভেবে সারাটা জীবন দিলাম। এখন ভাবি, তোদেরও তো কত সখ আল্লাদ ছিলো, আমি কেবল আমার মত সব সময় তোদের উপর জোর করে চাপিয়ে দিলাম।"

সরোজ বাঁধা দিয়ে বলল __

__" এসব​ তুমি কি বলছো বাবা? কেন বলছো এসব?"


__"বলছি কি আর সাধে? সবই আমার অদৃষ্ট! থাকগে, যা বলছিলাম, তোর মাকে আর তোকে নিয়ে চল সেখানে কদিন ঘুরে আসি।"

সরোজ মাথা নেড়ে বলল...."না বাবা, তুমি আর মা যাও, আমি এই গাঁ ছেড়ে কোথাও যাবো না।"

__"কেন শুনি? কি আছে এখানে?"

সরোজ অধৈর্য ভাবে বলল,

__"আজই বা যেতে চাইছো কেন বাবা? আমি এখন চলে গেলে গাঁয়ের লোক হাসবে। বলবে, আমি পালিয়ে গেছি। আমি পালিয়ে যাবো না বাবা। কক্ষনো না।"

__"আহা পালাবি কেন? কদিন ঘুরে এসে তারপর নাহয়..."

সদর দরজার বাইরে থেকে কে যেন বেশ জোরে হাকডাক দিয়ে উঠলো..."ডাক্তার আচো নাকি? ডাক্তার! বলি কেউ আচে? ডাক্তারকে ডেকে দাওনা একটি বার, বড্ড​ জরুরি গো!"

সসব্যস্ত​ হয়ে সরোজু জানালার বাইরে তাকিয়ে বলল..."বাবা ধীরেন কাকা এসেছে।"

তারপর উৎকন্ঠায় চিৎকার করে বলল...

__"কি হয়েছে কাকা?"

__"ছেলেটার বড় শরীল খারাপ রে মা"

__"ওমা! কি হল কালির?

__" দুদিন ধরে জ্বরে মাতা তুলতি পারেনা। কিস্যু খাতি পারেনি ক'দিন।​ তোর বাপকে একটি বার ডেকে দে না মা!"

__"ওওমা! এতো বাড়াবাড়ি, আগে আসোনি কেন?"

__"ভাবলুম তোরা ব্যস্ত, ডাক্তারখানা খুলচে না...."

__"দাঁড়াও কাকা বাবা আসছে"

সরোজ ছুটে গিয়ে কানাইয়ের হাত ধরে বলল..."ওমা! তুমি এখনো বসে আছো বাবা? কালিটার শরীর খারাপ। ওওঠোওও,​ আমি দরজা খুলছি। তুমি তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নাও। "

রামকানাই মাথা নিচু করে বসে রইলেন, সরোজ বলল.....

__"ছিঃ বাবা! এই গাঁয়ের মানুষগুলো তোমার সন্তানের মতো। সেই ছোটবেলা থেকে দেখেছি, তুমি বিপদে আপদে সব সময় ওদের পাশে দাঁড়িয়েছো। এতো পথ পেরিয়ে বড় দপ্তরে গিয়ে ডাক্তার দেখাবে ওদের অতো পয়সা কোথায়?​ তুমি ছাড়া এই গরীব মানুষগুলো বড় অসহায়।​ আমি তোমাকে সেভাবেই দেখেছি, এর অন্যথা​ আমি দেখতে পারবো না।​ তুমি এমন করলে আমি এদের কাছে অপরাধী হয়ে যাবো বাবা, ওদের চোখে আমি নেমে যাবো। আমাকে তুমি হারিয়ে দিও না।"

​কাঁদতে জানেনা সরোজ , অন্তরমনে​ নিরন্তর চলছে যে রক্তক্ষরণ সে ক্ষতের অংশীদার কেবল সে নিজে, কেউ তার হদিস পায়না, হদিস রাখার​ প্রয়োজনই বা কার? এক বুক চাপা অভিমান মনকে কুরে কুরে ক্ষয় করে চলে, এই অভিমান যে কার উপর তা সে নিজেও জানে না। হৃদয় যখন তার , তবে তার গহীনতলে ঘোর প্রভঞ্জনের দায় ও তার একান্ত ব্যক্তিগত।​ আত্মাভিমান​ তার বড়ই প্রকট, অনর্থক দুঃখ বিলাস করে মানুষের সহানুভূতি কুড়াতে​ মন চায়না,​ সে বরং সবকিছুই অতিমাত্রায় স্বাভাবিক দেখাতে চায়।

কন্যার চোখের ভাষা কানাই ভালোই বোঝেন। ব্যগ্র ভাবে সরোজের মাথায় হাত রেখে বললেন...

__"আচ্ছা আচ্ছা, আমি দেখে দেব ক্ষণ। তুই চিন্তা করিস না।"

সরোজ ছুটে গিয়ে চেম্বারের দরজাটা খুলে দেয়। তারপর মায়ের হাতের থেকে কাজ কেড়ে নিয়ে দশটার জায়গায় খান পঁচিশেক রুটি বেলে তোলে।

গোয়াল থেকে এক গামলা গোবর কাঁচিয়ে এনে খড়ের ভুষি ঠেসে দেওয়াল ভরে ঘুঁটে দেয়, পাতকুয়া থেকে বালতি ভরে জল তুলে দুটো চৌবাচ্চা ভরে ফেলে। কুমুদিনী হেঁকে বল...

__" ওও সরোজ!! আজ তোর এতো কাজের হিড়িক ক্যানে? বলা নেই কওয়া নেই জল ভরে, ঘুঁটে নাগিয়ে কি কত্তিছিস? আর এই এতো রুটি খাবে কে?"

__" তুমি খাবে, বুঝলে? চেহারার কি হাল দেখেছো?​ নিজের দিকে তাকাও কখনো? এতো অনিয়ম করলে চলে মা?"

আজ বেশ কিছুক্ষণ হল রেণু এসেছে। উঠানে পা ঝুলিয়ে বসে আড়চোখে একমনে সরোজের​ কাজের বহর দেখতে দেখতে কখন যেন চোখের কোনায় জল জমে আসে, হঠাৎ পেছন থেকে দুই বাহুর বেষ্টনীতে জড়িয়ে ধরে সরোজ, আজ সে অকারণ গান ধরে, ....."ওলো সই, ওলো সই, আমার ইচ্ছে করে তোদের সাথে মনের কথা কি"। সরোজের অকস্মাৎ স্পর্শে কেঁপে ওঠে রেণু, তারপর ওড়নার খুঁটে চোখ মোছে। সরোজু বিস্ময় প্রকাশ করে বলে...."তুই এতো কাঁদিস কেন সই ? আমায় দেখ, আমি কাঁদি কখনো ?

__"ওমা! কাঁদলাম আবার কখন? চোখে যেন কি পড়েছে তাই....।"

সরোজু আলতো হাতে ঠেলা দিয়ে বলল....." ওমনি মিছিমিছি কথা।"

তারপর রেণুকে টেনে ধরে বলল..."শোননা , শোন...... চল্ একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসি। ঘরে বসে থেকে আমার দম বন্ধ লাগছে।"

রেণু হেসে বলল...."সত্যি যাবি বল ? চলনা সই কত দিন তোর সাথে কথা হয়না। "

বহুদিন পর দুই সইয়ের আজ গাঁয়ের মেঠো পথে উদ্দেশ্যহীন পদচারণ,​ এলোপাথাড়ি বাক্যালাপ চলতে থাকলো...."হ্যাঁরে দাদার চিঠির উত্তর দিলি?​ সেকি!! এখনো দিলিনা? আবার নতুন কোন উটকো মেয়ে এসে দাদার ঘাড়ে জুটবে, আমার সাথে বাঁধিয়ে দেবে তখন , তার থেকে তুই-ই উত্তরটা দিয়ে ফেল।"

রেণু হাসে, বলে...." বেরো এখান থেকে, মরন দশা।"

হাঁটতে হাঁটতে মাটির সাঁকোটার পাড়ে এসে থমকে দাঁড়ায় সরোজ। চিত্তপটে স্পষ্ট ভেসে ওঠে , এক সাইকেল আরোহী যুবকের অপেক্ষারত চোক্ষুযুগল , তার বিহ্বল সরল হাসির আকর্ষণ, মাঝে কেবল এক ঝুলন্ত সাঁকো, আজ আর তা টপকে যাবার উপায়​ তার নেই ........রেণুর হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে বলে......

__."অন্য কোথাও চল সই।"

__"কোথায় যাবি বল? মন্দিরের দিকে যাবি?"

__"না, কক্ষনো না!" চেঁচিয়ে বলে সরোজ।

__"আচ্ছা বেশ, তাহলে কোন দিকে যাবি বল।"

__"কালিদের বাড়ি যাবি? ওর বলে বড্ড শরীর খারাপ। সকালে ধীরেন কাকা এসেছিলো। "

__"তুই যাবি ওদিকে? ওদিকে তো...."

__"ওদিকে কার বাড়ি তাতে আমার কি? পৃথিবীতে যেন আর কারো বাড়ি থাকতে পারেনা সেদিকে? আমি কেবল কালির বাড়ি যাবো, আর কোনদিকে তাকিয়েও দেখবো না ।"


​কালিদের পরিবারে এক ঘোর সংকট নেমে এলো । কিছুক্ষণ আগে রামকানাই বলে গেছেন

....."জ্বরটা খুব একটা সুবিধার লাগছে না , সাধারণ সর্দি-গর্মি থেকে হয়েছে এমনটা মনে হয় না। অহেতুক বিলম্ব হয়েছে ঢের।​ পুরিয়ায় কাজ হতে হাতে সময় চাই। এই জ্বরে রক্ত পরীক্ষা প্রয়োজন। এরমধ্যে আবার পর পর দুই দিনের অনাহার।​

রামকানাই কালির মা কে ডেকে বললেন..."আমি বলি কি বৌমা, সবথেকে ভালো হয়, কালিকে যদি একেবারে কলকাতার চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারো। অনর্থক সময় নষ্ট না করাই ভালো। ভেবে দেখো কি করবে।"

​ধীরেন কাকা টাকা যোগাড়ে বের হয়েছে,​ অস্থির ভাবে কালির মা​ বারবার ঘরে এসে দাঁড়াচ্ছে, কালির বুকে মাথায় হাত বুলিয়ে বলছে...

__"ওও কালি! বাপ আমার , একবারটি চোখ খুলে দেখ। কি কষ্ট হচ্ছে বল!"

পরক্ষণেই আবার ঘরের কাজ সেরে, জামাকাপড় গুছিয়ে কলকাতায় যাবার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছে।​ সরোজ কালির মাথার কাছে বসে কাছে একবালতি ঠান্ডা জলে অনবরত মাথাটা ধুয়ে চলল। কালির মাকে ডেকে বলল,

__"নুন চিনির জল করনা কাকি! চট্ করে নিয়ে এসো আমি খাইয়ে দিচ্ছি। দুদিন কিছু খায়নি। পেটে কিছু পড়াটা দরকার।"

রেণু একটা তালপাতার পাখা জোগাড় করে অবিরাম বাতাস করে চলেছে।​ এক অতি পরিচিত কন্ঠস্বর আকস্মিক দমকা বাতাসের মত অন্তরাত্মায় অশনি শিহরণ জাগিয়ে তুললো। একদিন এই স্বর যতটাই​ অন্তরঙ্গ মনে হত আজ তার মাধুর্য ঠিক ততটাই যন্ত্রণাদায়ক দংশনের মত হৃদয় বিদারক। হঠাৎ এক গভীর সংকোচবোধ কোথা থেকে উড়ে এসে মনকে নানা ভাবে বিদ্রুপ করে চলল, সরোজ নিজেকে প্রাণপন অবিচল রাখার চেষ্টা করে চলিয়ে​ বিরামহীন হাতে কালির মাথায় জল ঢেলে চলল । এই বিশ্বসংসারে তক্ষণি​ ঘটে যাওয়া সমস্ত সংবাদ সম্বন্ধ সে যেন অবগতই নয়, সবকিছুই তার অজানা।​ রেণু অনাবশ্যক ভাবে সাময়িক নড়ে চড়ে বসলো। চিরপরিচিত সেই কন্ঠস্বরটি ক্রমশ ঘরের এসে প্রবেশ করলো....

__"কাকি, কালির শরীর কেমন? কি বলল ডাক্তার?"

কালির মা কেঁদে উঠে বললো....

__"আর কেমন? আমার কালির কি হবে গোবিন্দ? ওই​ দেখো জ্বরে কাহিল।​ ও-ই তো আমার একটামাত্তর শিবরাত্তিরের শলতে, কত করে ডাকতিচি ঠাকুর মুখ তুলে তাকাও। দুইদিন ভর কিস্সু দাঁতে কাটেনি। কেন যে ভগবান এমনি করে আমার পরীক্ষা নিচ্চে?"

__" আহা​ কেঁদোনা কাকি। সব ঠিক হয়ে যাবে দেখো! কাকা কোথায়? কি করবে এখন? ভাবছো কিছু?"

__"কাকা মহাজনের কাছে গেছে, ঘরে কুইরে কাঁইচে হাজার খানেক পেলাম, ওতে কি হবে? কলকাতায় যেতেও তো অনেক টাকা নাগবে।"

__"কলকাতা? কলকাতা যেতে হবে? কত টাকা লাগবে কাকি, জানো কিছু?"

কালির মা মাথা নাড়ল।​ কলকাতায় নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার কথা শুনে হঠাৎ কেমন চিন্তান্বিত দেখালো গোবিন্দকে ...."এতো টাকা এখন.....?"​ ​

মাটির দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে আপন মনে কত কি হিসেব নিকষে করে চলল। ঘরের মধ্যের থমথমে পরিস্থিতিটার প্রতি এতোক্ষণে তার চেতন জাগালো ।​ একি!! এক কঠিন বাস্তবের সম্মুখে​ দন্ডায়মান​ তার সেই ফেলে আসা অতীতটা নিদারুণ নিষ্ঠুর পরিহাস হয়ে তার সকল হিসাবের গড়মিল বাঁধিয়ে দিলো ।​ এক স্থির অপলক চাহনি​ ধনুকের থেকে সদ্য নির্গত বাণের ফলা মত বারংবার ছুঁয়ে আসতে চায়​ সরোজের অন্তরের অতল প্রেম , দিনের আকাশে শুখতারা খুঁজে পাওয়ার​ মত অবাস্তব চাহিদাগুলো,​ যা একদিন অনেক যত্নে লালন করেছিলো তারা দুইজনে মিলে । আজ সে জীয়নকাঠির গল্প, রূপকথার মত ঘোর অবাস্তব শোনালেও​ তাই চিরন্তন সত্য । এতোগুলো দিনের পর​ দুটি​ চিত্তের মধ্যে এই বেদনাবিধুর সংঘাত, বড় ভারাক্রান্ত​ করছে গোবিন্দর হৃদয়।​ বারবার নিঃশব্দে নিবেদিত হল তার মৌন ব্যকুলতা ......."ক্ষমা কর,​ ঘোর পাপী আমি,​ অকৃতজ্ঞ...বেইমান।​ ভৎসনা কর, সাজা দাও, চরম চরম সাজা......তবু ঘৃণা করোনা আমায়। তোমার ঘৃণা, তোমার উপেক্ষা আমার কাছে মৃত্যুর সামিল। "​

​সরোজ তখন ঠিক কি ভেবেছিলো কি জানি, ফিরে চায়নি একটি বারও। গামছা দিয়ে একটু একটু করে আলতো হাতে মুছিয়ে দিলো কালির মাথাটা। এই সবে ধীরেন কাকা ঘরে এসে ঢুকলেন। অনেক চেষ্টা করেও হাজার তিনেকের বেশি ধার জোটেনি মহাজনের থেকে। আগের বকেয়া না মেটালে সেখানে আর কোন টাকা জুটবে না। তাহলে উপায়? এতোক্ষণে সরোজ কথা বলে উঠলো.........

__" কাকি, জ্বরটা বোধহয় নেমেছে। আমি বাড়ি থেকে থার্মোমিটার নিয়ে আসি।"​

তারপর ধীরেন কাকার হাতটা ধরে বলল....

__"চিন্তা করোনা কাকা। আমরা গাঁয়ের এতো লোক থাকতে কালির চিকিৎসা টাকা জোগাড় হবেনা, এ হতে পারেনা। তুমি যাবার জন্য তৈরি হয়ে নাও। আমি এক্ষুণি আসছি।"

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.