■ বিদিশা সরকার

বিদিশা সরকার , sobdermichil


"প্রকৃত সারস উড়ে যায় "

এই চারপাশ,শুকিয়ে যাওয়া খানাখন্দ – কোনও মড়ক নয়।ভোরের মতই সত্য। আমরা ঘুমের মধ্যেও যেমন টের পাই,অন্ধও।তবে তার চোখ বোধে।সেখানে বোধই

প্রথম বোধই শেষ কথা। স্পর্শের মধ্যেই লালন।স্পর্শই আধিদৈবিক।অন্বেষণের উড়ানের বিকল্প গানই তাকে পথে নামায়।পথ দেখিয়ে দেয়,উপার্জনও।

উপার্জনের ফলনে পেস্টিসাইড ফলনকে জারি রেখেছে। অথচ সেই অনন্ত মাঠ,যেখানে অপু’র বিস্ময়! সংহারের প্রয়োজনীয়তাকে স্ববশে আনাও তো স্বশিক্ষার বিষয়।তাই পাঠ্য-পুস্তক থেকে বেরিয়ে এসেছে স্বাধিকারে। আর্তের কাছে পরিবেদনা নিরাময় নয়।আসল বিষয় ঈশ্বর প্রদত্ত দুটি হাত, যা কখনও কখনও দশভুজার কাজ করে।

অর্জন আর বর্জনের দ্বিধা কাটিয়ে উঠতে পারেনি বলেই মানুষ সিদ্ধান্তের নিরিখে দোলাচলে।সেখানে প্রতিবাদও ভঙ্গুর।আর যথার্থ প্রতিবাদের থেকে উঠে আসে টায়ার পোড়ার গন্ধ।আঘাত প্রত্যাঘাতের মাঝখানে জন্মদাগও মুছে যায়।সংশোধনাগার থেকে ঠিকানার দূরত্ব ভাবেনি কেউ।ভাবেনি হাজার চুরাশির মা’র প্রয়াণ কোন কঠিন বাস্তবকে পর্যায়ক্রমিক প্রহসনে রূপান্তরিত করেছে।একটা চরিত্র কত বছর বেঁচে থাকে ?কলম যাকে চরিত্রের স্বীকৃতি দেয় তেমন পোস্টমর্টমের পড়ও আরও

কয়েকযুগ বাঁচিয়ে রাখতে পারে কলমই। অভয়ারণ্যেও ঘেরাটোপ!সেই আপ্তবাক্য

“মানুষ নিকটে গেলে প্রকৃত সারস উড়ে যায়” – স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে – প্রকৃত সারসই তাহলে উৎকৃষ্টতর।

ভাববার সময় এসেছে। প্রতিবাদটা কোথা থেকে আসে—বোধ ?মস্তিষ্ক ?মুঠো? না বাহুবল? আসলে মানুষ আদপে শান্তিপ্রিয়।পিঠ বাঁচান পলায়নবৃত্তি সুশীল সমাজকে যতটা পঙ্গুত্ব দিয়েছে তার অধিক দিয়েছে বিনোদনের টোপ।দর্শকের কাজ হাততালি দেওয়া।আরেকটু উচ্চকিত হলে দু’একটা সিটি-ও।শীত আকাঙ্খিত, শীত গুহাভিমুখী।শীত সত্যিকে মিথ্যের জ্যাকেট পরিয়ে দিয়ে ব্র্যান্ড ম্যানিয়াক কফি মগ।

তুমি আমি’র মাঝখানে যে ফায়ার-প্লেস সেটা সৌখিনতার মনোগ্রাম।এই বৈকল্যের কাছে অসহায় মানুষ অগ্নি-নির্বাপক আপোষ।অন্যথা হলে প্রতিবাদের মাশুল ট্র্যান্সফারের চিঠি ধরিয়ে দেবে।
গণধর্ষণের সরেজমিন তদন্ত আর্তকে চিরুনিতল্লাশ করবে,ঘটনার অনুপুঙ্খ নগ্ন করবে জনআদালতে।মনোবিদ চ্যানেলে সমাজের এই ব্যধি বিষয়ে সুচিন্তিত মতামত রাখবেন।অন্ধকারে পিছন ফিরে বসে থাকা ভিক্টিম এক খপ্পর থেকে আরেক খপ্পরে।তারপর ফিরে এসে পায়ের তলার অবলম্বনটাকে সরিয়ে দিয়ে হ্যাং।আবার পোস্টমর্টম।

একটা ঝোরার মুখে কয়েকটা বোল্ডার গড়িয়ে দিয়ে শাসন করছে গতিপথ।যদিও বিস্মিত নই।দাবী দাওয়ার সংসারে অবুঝ অনটন বুঝে সুখদা বরদা হয়ে বিসর্জনের পরবর্তী অধ্যায়।প্রতিদিন ভাসানের পরই একটা স্তব্ধতা ঘাটের অন্ধকারে পরিমিত হয়।চলাচল থেমে গেলে বাস্তুভিটে দরজা খুলে দেয়।ঘর ও বাসা সেখানে তুলনামূলক। দু’পক্ষের দোলাচলে যে নীরবতা – তাদের ঘুম পাড়িয়ে সিন্দুক খোলার আয়োজন। সদ্যজাতরা মুখ গুঁজে অভিমানে। সমস্ত রসদ ফুরিয়ে গেছে বলেই তো বেবিফুড।মাপা সময় থেকে মাপা কথারা বাকি রাত একটা জানলাকেই জেনেছে জেরুজালেম।একটা নির্দিষ্ট তারাকেই ধ্রুবক।ইঞ্জিনের ধোঁয়ায় প্রতিবেশী ছাদে হারিয়ে যায় চাঁদ।

জোড়া লাগাবার কিছু পদ্ধতি থাকে। অনুশোচনা বা বিবেক পরমুখাপেক্ষী।সামনে রাখা রয়েছে অ্যাডেসিভ,সেলোটেপ আরও সব বাজার চলতি জোড়া লাগা।ক্রোধ নাস্তিক অথবা আস্তিককে আয়নার সামনে দাঁড় করিয়ে প্রমান করেছে অস্তিত্ববাদের পরাকাষ্ঠাকে।আসলে অস্তিত্বের আস্তিক অথবা নাস্তিক হিসেবে আলাদা কোনও ফুট নোট নেই। একটা ইমারত ভেঙে যাচ্ছে দেখে ক্যামেরার ভূমিকায় অবাক হওয়ার কিছু নেই।সম্পর্কের ফয়সলার দিনে আদালতে পাড়া প্রতিবেশীর ভিড়ে কনুই সক্রিয়। ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে থাকা সন্দেহ,বিশ্বাস,কনডোম, ডুপ্লিকেট চাবি বা সিসি টিভি, আপাতত তারা ফরেনসিক ডিপার্টমেন্টের এক্তিয়ারে।

এই এক্তিয়ার অথবা চিহ্নিত এলাকার বাইরে যে দ্বিতীয় পৃথিবী বা ভুবন- কৌতূহল সেখানেই।পরিশ্রমের বিকল্প পন্থা হিসেবে যা নির্ধারিত তার তাগিদকে শাসন করছে একনায়কতন্ত্র।সেক্ষেত্রে একার পক্ষে কতটুকু সম্ভব ? বিপণনযোগ্য স্তুতি খোলা বাজারের বাম্পার অফার।মানুষ ভীত মানুষের থেকেই,গৃহপালিতের কাছে নিশ্চিন্ত।

মাঝে মাঝে মনে হয় দেবতা কৃপণই ! সে কারনেই পৃথক পৃথক ঘর গেরস্তি। ক্রমশ সারা দিতে দিতে জিজ্ঞাসা ও উত্তর ক্ষীণ হলেই --- সে তো শব্দেরই আর্তনাদ ! সেই আর্তনাদ যখন রক্তের রঙ নীল প্রমানিত করতে পারে -- তাকে সার্থক না বলে উপায় নেই। আমরা নিরুপায় বলেই ভাঙন কে রুখতে পারিনি, অন্যদিকে সার্থক বিশেষ্য হয়েই নামবাচক । আর অপেক্ষা নিরুত্তরকেই সর্বশ্রেষ্ঠ অলৌকিক জেনেছে, ব্যাকরণকে নয়।


বিদিশা সরকার
কলকাতা

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.