বিদিশা সরকার

বিদিশা সরকার

■ পাতালকন্যা


পরতে পরতে অন্ধকার
অন্ধকার পেরিয়ে আরও অন্ধকারেই

অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে , অথচ
খিদের কথা বলতে নেই
গাছকেও নয়

যারা সূর্যের আলোর কিঞ্চিৎ ও পায়নি
সেই ক্লেদ ভূমিতে শুয়ে রয়েছে পাতালকন্যা

ভোর হলে সিন্দুকের ঢাকনা খুলে যায়
ভাঁড়ারের অনটনে অন্নপূর্ণা পুজোয় আতিথ্যে

ভাসানে একবারও তোমাকে দেখিনি


■ কাঙ্গাল করেছ

আমারও সম্ভবত কিছু ইচ্ছা ফোল্ডারে ঢুকিয়ে নিয়ে গেছে। তারও অধিক কিছুস্বেচ্ছায় দিয়েছি। উপহার, প্রত্যাশা করেনা। গৃহ- প্রবেশের দিন সঙ্গত কারণে
ডাকেনি। এদিকে আগাছা বড়, যজ্ঞ ডুমুরের ঝোপে বাসা বেঁধে দিব্য বাঁচে পাখির সংসার। এভাবে আমিও পারিনি। আমরা শুধু শর্ত অনুযায়ী ফি বছর তালসারি
অথবা লাদাক!
কুমুদিনী মেয়ের বিয়েতে আলমারি দিল। পিতলের কলসিও। ভয় করে ডুবে মরে
যদি।দধি-মঙ্গলের ভোরে দুঃস্বপ্নে জেগে উঠি, বাঙ্গাল বস্তিতে এভাবেই উৎসব লাগে
এবং আগুনও। আমিও যে নিঃস্পৃহতা শিখি, যেভাবে শেখালে। কাঙালি ভোজন
দেখি-- অনশন তৃপ্তি দেয় বুঝি । বারো ঘর এক উঠোনে জমাট সংসার , টিভি
ম্যানিয়াক। রোশেনারা ফুল তোলে নিজস্ব রুমালে

■ বিকেল ফুরিয়ে গেলে

​অস্ত যাওয়ার আগেই মেঘ ঢেকে দিলো যার মুখ
​আমি তার সঙ্গে জলপ্রপাত -
মুখোমুখি দৈবাৎ
​জল বিষয়ক কিছু নিষেধাজ্ঞা, পাওয়ার প্রোজেক্ট
​নিঃসাড় হলেই বুঝি স্টেথো চেপে বসে বুকে
​পালা করে জেগে থাকা
​যদি নিভে যায়

যারা যারা জেগেছিল ক্রিয়াকলাপের লোকাচারে
​চেনা সেই মুখগুলো
​নিরুদ্দেশের মানে জানে

মুখোমুখি আবার যেদিন
​কয়েক বছর পরে
​আঁকা'র ইস্কুল থেকে সোজাসুজি ছবিঘরে
​প্রাসঙ্গিক বৃষ্টি এলো যেচে

বিকেল ফুরিয়ে গেলে প্যাপাইরাসের মতো
​সম্পর্ক রচনাগুলো
​ছিল হাইফেনে !


■ কুষ্ঠ

জমে যাচ্ছি শীতে , জানো ? ...
খুব জমে যাচ্ছি ---

উদ্বাস্তু ভেবে খুলে দিয়েছিলাম দরজা
​যদিও তাদের মধ্যে তুমি ছিলে না
​থাকবেও না
​তবুও তোমার কথা ভেবেই

এই বিশাল ভারতবর্ষ
​এই বিপুল ভারতবর্ষ
​একটা বরফের চাদর গায়ে দিয়ে যেদিন হারিয়ে গেল
​সেদিন থেকে মাধ্যাকর্ষণই একেকটা পরিবারকে
​আয়তক্ষেত্রে আয়তন দিলো
​বর্গক্ষেত্রকেও

যদিও পরিব্রাজকের দেশ
​তবুও কেউ কারো কাছে পৌঁছাতে পারছি না
​হয়তো পৌঁছতে চাই না বলেই

জমে যাচ্ছি শীতে
​একটা বিনীত লজ্জাবস্ত্র ছুঁড়ে দাও প্রভু


■ অনস্তিত্ব

ওদের অনেক রঙ ছিল
কিন্তু যেতে বললেই কি আর যাওয়া যায় ?
ভাবনাও তো একটা রঙ
অনুভবের কয়েক পশলায় ধুয়ে যাওয়া সেই সব অসমাপ্ত
সম্পূর্ণ হবে না জেনেও
রঙ্গনকে বার বার ডাকি

অভিযোগের থেকে অভাবের কথাই বেশি -
একটা রঙ চটা অবয়বে কিছু রঙিন তাপ্পি দিয়েই তো
অসম্পর্ক সম্পর্ক বাঁচায় --

জমে ওঠে ঘর
গাড়ি বারান্দার নীচে অন্ধকার বুঝে নেয় প্রেম
অথবা হাই ভোল্টেজ টর্চ
বায়োডাটা খোঁজে

ব্যারিকেড ভেঙে শুধু উদ্বাস্তুর মতো
জমি জমা নগন্য সঞ্চয়
আগুনে পুড়িয়ে দিচ্ছে কারা ?


■ বোষ্টুমি


যদি ফিরে আসো​
​চাবি তুলে দেবো, ভারী চাবি, লকারের সুহাগ রাত্তির​
​জয়েন্ট একাউন্ট, নমিনির আজব খুঁড়োর কল.........
যদি ফিরে আসো​
​আবার সঙ্গমে যাবো​
​কুতুব মিনারে​
যন্তর মন্তর​
​বেগম হাভেলি​
​কান্না দিয়ে ভাত মেখে নিয়ে একপাতে​
​তোমার বোষ্টুমি !


■ সন্দেহ

আমার শৈশব নিয়ে দু'চারটে স্ন্যাপ​
​বৃন্দাবন গার্ডেন থেকে ফোয়ারার স্বাধীন সাওয়ার​
​আমার পাশেই বসলি​
​ভেজা জামা
​আমিও কিছুটা ...............
হাসি'র বানানগুলো ইচ্ছে করে​
ভুল ভুল ভুল​
​তারপর দিন মাস​
​গুনে গুনে বানান শিখলাম​
​শিখতে শিখতে ভোর আর​
​শিখতে শিখতে অষ্টোত্তর রাত​

​হঠাৎ বাধুক হয়ে কার জন্য এতবার যাওয়া ?​
হাসিখুশি ফুল কিনল​
​ডট পেন​
​খুচরো দিলি তুই​

​যারা দেখেছিল তারা বৃষ্টিতে ভেজেনি কোনোদিন​
​আমার বিশ্বাস বলতে অধীন বা পরাধীন কিছু​
​ তোরই জিম্মায় রেখে ---​
শান্তিতে ঘুমোতেও দিবি না ?​

এখন আমিই কিন্তু তোকেই সন্দেহ করছি​
​তোকেই হারাচ্ছি বারবার​



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.