সৌমিতা চট্টোরাজ

সৌমিতা চট্টোরাজ

জনতার গাঁড় তারা মারিয়াছেন
অতএব​
ধর্মের গাঁড় ফাটানো যাইবে না আর...

ক্ষমা করবেন জীবনানন্দ বাবু তথা বাংলা কবিতার একনিষ্ঠ ভক্তরা। পাঠক আউটরেজের ভয়ে আগেভাগে মাফি চাইছি ঠিকই তবে আমি নিশ্চিত দাশ মশাইয়ের সময়কালটা কল্লোল যুগ না হয়ে বর্তমান ভারতের উৎপল যুগ হলে তিনি তার কবিতায় এহেন বিষ না উগড়ে চুপচাপ হজম করে দিতে পারতেন না। আরে তিনিও তো মানুষ! ঢ্যাঁং মা কালীর ন্যাংটা পাদপদ্মের নীলকন্ঠ তো নন! যাকগে সেই সময় এবং তদানীন্তন কাব্য ঘরানার কথা। বরং হাঁটা যাক এই সময় ও আজকালের পাকদণ্ডী বেয়ে। 

কি বললে! সিট বেল্ট নেই! তাতে কি! ঘাবড়ানোর কি আছে! জেনে রাখো এটা ধর্মের পাকদণ্ডী, রাজনীতির পাকদণ্ডী... যেখানে বার্থরাইট প্রয়োগ করে আম আদমি পার্টি ( কেজরীওয়াল ওয়ালা নয় কিন্তু ) মা-বাবার কোলে হিসু করতে করতে এন্ট্রি নেয় তারপর বেশ কিছু বছর গায়েগতরে মস্তিষ্ক মেধায় তন্দুরস্ত হয় এবং আঠারো হলেই রাইট টু ভোটের সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে আচ্ছা করে পোঁদের কাপড়চোপড় তুলে বুথে বুথে দাঁড়িয়ে পড়ে নিজেদের গাঁড় মারাতে। খুনফুন হলে কিংবা আত্মহত্যাটত্যা করলে আলাদা ব্যাপার, কিন্তু যতক্ষণ শ্বাস চলছে ততক্ষণ তুমি ফেঁসে আছো গুরু... না ট্যাঁসা পর্যন্ত শান্তিতে চোখ বুজে নির্ভয়ে নাক কান খুলতে পারবেনা। প্রত্যেক সকালে ত্রিফলার জল গিলে কোমডে হাগবার সময়েও তোমাকে মনে পড়ানো হবে তুমি হিন্দু না মুসলমান, বাম না ডান, কাটা না সাঁটা। 

জিডিপি কমছে, বার্থরেট বাড়ছে, একের পর এক প্রাইভেটাইজেশন, বেকারত্ব, ভুখমারি, চিকিৎসা পরিসেবায় গ্র্যান্ডক্যানিয়ন, শিক্ষা ক্ষেত্রে বিপর্যস্ততা, কৃষক বিল, শ্রমিক বিল, সংখ্যালঘু নিপীড়ন ইত্যাদি ইত্যাদি কে পিচের বাইরে ছুঁড়ে ​ ফেলে দিচ্ছে করোনা বাউন্সার আর সুশান্ত সিক্সার... দুধের থেকে যেন মাছি ফেলা! আম আদমি, শোতা হুয়া শের থেকে থেকে ঘুম থেকে উঠে কেঁদেকেটে ককিয়ে একেক্কার... এদিকে 'গোরু'জনেরা লাল সবুজ গেরুয়া কমলা গোলাপি প্রভৃতি মাস্ক (ইন-বিল্ট) পড়ে পদ্মডাঁটির পাছায় ল্যাবেঞ্জুস গেঁথে আম জনতা কে ভাঁওতা আর বাতেলা দিতে দিতে দেখিয়ে যাচ্ছে নরুবাবাজীর খেল। আর আমরা বসে আছি। অপেক্ষা করছি পাইলস কিংবা ফিসার হয়ে যাওয়ার। যারা যারা পথে নামছে তাদেরও পা টেনে ধরছি, প্রতিটা পদে পদে প্রমাণ দিচ্ছি কতবড় বোকাচোদা হলে এখনও মিডিয়ার বহুব্যবহৃত ডিলডো গুলির জন্যে প্রশস্ত পশ্চাৎ প্রস্তুত রাখা যায়। দেশের শতকরা সত্তর ভাগ নিরক্ষর লোকজন নিয়ে আমরা জগৎ সভায় শেষ্ঠত্বের আসন অলঙ্কৃত থুড়ি কলঙ্কিত করবো... আর গান গাইবো, আরেএএএএএ ওওওও... কলঙ্কিনী রাধা।

কেন জানি না আমার খুব মনে হয়, মানুষের কাছে ধর্মের ধ্বজা টা এখনো পর্যন্ত বাঁকুড়া গামছার টুকরো বিশেষ। বিভেদের দুর্গন্ধ, বারো হাত জাতের ত্যানা। তুমি হিন্দু হয়ে মসজিদ ভাঙবে আবার মুসলিম হয়ে মন্দির। দলীত হয়ে ব্রাহ্মণ্যবাদের আর ব্রাহ্মণ হয়ে দলীত সংরক্ষণের খুলে ফেলবে কাছা। কেউ কেউ আবার জুম্মা রাখবেন, নামাজ পড়বেন, ডিমভাত খাওয়াবেন, থিমের পুজোর ফিতে কাটবেন, সিগনালে সিগনালে রবীন্দ্র বাজাবেন, শিলান্যাস করবেন এবং ক্রমশ বাড়তে থাকা ফুটপাতের ভিখিরিদের মাথার ওপর লটকে দেবেন মনিষীদের ফটো... এতে রোদ জল বৃষ্টি ক্ষিদে তেষ্টা লজ্জা মিটবে তো! 

কে কি বলছেন শুনি একটু...এই যে শ্রদ্ধেয়া দিদি প্রাণের দাদা'রা, বলছি, কাতারে কাতারে ডিহিউম্যানাইজেসন আর কতো! হে আ'বাল'বৃদ্ধবনিতা, ধর্ম আর অধর্মের ফারাক বোঝো। মানুষ তোমার ধর্ম, মানুষ তোমার কর্ম...ঈশ্বর কেবলমাত্র বিশ্বাস। 

আগা তোমার পাছাও তোমার বোধও তোমার পোঁদও তোমার... কুশপুত্তলিকা জ্বালিয়ে কোনো লাভ নেই যদি না অন্তরে মানবধর্মের মশাল জ্বালতে পারো। সেকুলারিজম গাঁড়ে ঢোকানো ​ অত সহজ নয় যতটা বমিতে উগড়ানো সোজা। বিশেষ বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায় সংখ্যা লঘু নয় আসলে, সংখ্যা লঘু হলো মানুষ... অমানুষ বিজবিজ রাষ্ট্রে। তাই তো প্রথমেই লিখেছিলাম, ​ প্রতিটি সকালে কোমডে বসে হাগতে হাগতেও মনে পড়ানো হবে তুমি হিন্দু না মুসলিম, বাম না ডান, কাটা না সাঁটা... চয়েসটা তবুও ​ তোমার, নিজেকে কেউকাটা ভাববে? না ভাববে জনৈক কেউ একটা?


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.