নিবেদিতা ঘোষ মার্জিত

 

স্রষ্টাকথা

[পূর্ব কথন-মুগা এক সাহসী বালক। তাদের বাছুরকে খেয়েছে এক অজগর। তাকে সে শিকার করার সুযোগ পেলেও করে না। কিরি খুব ভালো ছবি আঁকে।সাবুক বলে এক মন্ত্রী আছে।তার রাজার কাছে এক ওঝা আসে। রাজার শেষ উত্তরাধিকারী নেকড়ের আক্রমণে মারা যায়। মুগা সাপ ধরবার জাল বানায়। তার গ্রামে সাবুক আসে।মুগার বাবা বোঝাতে চেষ্টা করে মুগা তেমন বুদ্ধিমান আর সাহসী নয়। তবু তারা মুগাকে তারা ধরে নিয়ে যায়।]


৫।।

গোটা দল কে পাহাড়ের নীচে নামিয়ে নিয়ে এল জাকু। জাকুদের দল কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল গুহার মানুষদের ধরে নিয়ে আসার জন্যে। গুহার মেয়েরা খুব শক্তিশালী হয়। ওখানে ওরা পুরুষদের কথা শোনে না।যে পুরুষ কে ভালো লাগে তার সন্তান কে গর্ভে ধারণ করে। অদ্ভুত দক্ষতায় ছোট ছোট পাথর ছুঁড়ে পশু শিকার করে।জাকুর অনেকদিন ধরে এই মেয়েদের দেখার ইচ্ছা ছিল।তার বাবা বলে দিয়েছিল এই মেয়েরা খুব বুদ্ধি রাখে,জাদু জানে।অন্ধকার হলে আক্রমণ করতে হবে যখন ওরা ঘুমাবে। চারদিন ধরে পাহাড়ের খুব গোপন জায়গা থেকে জাকু আর দলের লোকজন নজর রেখেছে গুহার ওপর। ওদের প্রধান মহিলা কোন জন, সেটা বুঝবার চেষ্টা করেছে।কাল রাতে ওদের উৎসব ছিল। এক বৃদ্ধা কে ঘিরে ঘিরে আগুন নিয়ে খুব নাচছিল সবাই। জাকু বুঝতে পারে ঐ বৃদ্ধায় এই মেয়েদের দলের প্রধান।ভালো করে দেখে বুঝল দল টা বড় নয়। হাতের যতগুলো আঙুল তার চেয়ে কম পুরুষ। কিন্তু তারা বেশ বড়সর চেহারায়, আর মেয়েদের সংখ্যা তাদের চেয়ে বেশী। যাকে ঘিরে ঘিরে এরা নাচছিল তার অনেক বয়স। চোখের চামড়াও ঝুলে গিয়েছে।তাকে নিয়ে যাবার কোন দরকার নেই। এখানেই ফেলে রেখে যেতে হবে। চাঁদ পশ্চিম আকাশে ঢলে গেলেই জাকু আক্রমণ করে। কেউ যেন মরে না যায়। বেশী আহত না হয়। এদের সবাই কে লাগবে, মন্ত্রী বলে দিয়েছেন। চামড়ার দড়ি দিয়ে সব কটা কে বেঁধে ফেলে । ছেলেগুলোর মধ্যে একটা খুব শক্তিশালী সে ‘খুয়া খুয়া’ বলে চিৎকার করে উঠেছিল। আলো আঁধারি গুহার মধ্যে থেকে একটা খুব উজ্বল বর্ণের মেয়ে তির বেগে দৌড় লাগায়।সকল কে হতবাক করে সে অদৃশ্য হয়। কিন্তু জাকুর কাছে জাদু মনে হয়। এতো উজ্বল কেউ হয়। যেন সারা গা দিয়ে আলো বার হচ্ছে। তাকে খুঁজে পাওয়া গেল না।চোখে দেখতে না পাওয়া সেই বুড়ি প্রতিরোধ করতে আসে।এক ধাক্কা দেয় জাকুর সহচর। মাথা ঠুকে যায়। কাতরাতে থাকে। দুটো গুহা থেকেই মানুষগুলো কে এক জায়গায় করা হয়। ওদের গুহা থেকে একটা খুব হাল্কা কিন্তু খুব ধারালো অস্ত্র খুঁজে পায় একজন। সেটা দিয়ে ভয় দেখিয়ে এদের কে বিরাট দড়িতে করে বেঁধে এক এক করে​ ​ পাহাড় থেকে নামাতে থাকে। জাকুর চোখ থেকে সেই আলো মাখা মেয়েটা কিন্তু সরে না। ওটাকে খুঁজে পেতে হবে। আবার আসবে জাকু একা। নিজেরে জন্যে।এ মেয়েকে তার চাই।

৬।।

মুগা কে ঘোড়ার ওপরে উপুড় পা,হাত বেঁধে রাখা হয়েছে।এই জন্তুটাকে মুগা আগে কয়েকবার দেখেছে। নদীর অন্য পাড় থেকে আসে। খুব জোরে ছুটতে পারে। এরা তাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে কেন?তবে কি আর কোন দিন বাবা মার সাথে দেখা হবে না। মা পাগলের মত পেছনে ছুটতে ছুটতে আসছে। বাবাকে ধরে রেখে দিয়েছে মুখে সাদারঙ মাখা লোকেরা। মা হোঁচট খেয়ে পরে গেল। মুগা চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে গলা ব্যাথা করে ফেলল।ঘোড়ার আরোহীর সামনে তাকে উপুর করে রাখা আছে। তার কোমরের ঘুনশিটা আরোহী ধরে আছে। ​ নদীর পারে চলে এলো ঘোড়াটা। মুগার বসতির কাছে নদী যেমন গভীর এখানে নদী ছড়িয়ে গিয়েছে। মাঝে মাঝে জল, আর অনেক জায়গাতেই বালি।আর কেঁদে কোন লাভ হবে না মুগা বুঝে গেছে। মুগার পায়ের বাঁধন টা আলগা হয়ে আসছে।ঘোড়ার গতি কমে এসেছে। এতক্ষনে ঘোড়া চালাচ্ছে যে তার মুখটা ভালো করে দেখল মুগা। ইস... কি বিচ্ছিরি মুখ। একটা চোখ পুরো সাদা। দেখে বুকটা আরও দমে গেল। এর হাত থেকে যেভাবেই হোক নিস্তার পেতে হবে।নদীর জলে ঘোড়া নামলো। পেট অবধি জল। হঠাৎ জলে নামতেই নাক মুখ ডুবে গেল মুগার।সে ছটপট করতে থাকায় এক চোখ সাদা লোকটা তাকে এক ঝটকায় তুলে বসাল। পায়ের বাঁধন জলের সাথে ভেসে গেছে। আরোহীর সামনে বসে গেল মুগা।মুকুট পরা সাবুক ঠিক তার পাশে পাশে যাচ্ছে। সাবুকের হাতের পাঞ্জা দেখে চমকে গেল মুগা। সাবুক খুব গম্ভীর কিন্তু মুগার দিকে তাকিয়ে হাল্কা ভাবে হাসল। অবাক হল মুগা। “ভয় পেয় না। তোমাকে আমাদের খুব দরকার”, সাবুক শান্ত ভাবে বলে। ওদের ঘোড়সওয়ার দলটা নদী পার হয়। এর আগে মুগা কখনো নদীর অন্য পারে আসেনি।নদী পার করে বালির ঢালু থেকে উপরে উঠে একটা ঘাস শুকিয়ে যাওয়া ফাঁকা জায়গা।মুগা চারিদিক ভালো করে তাকায়।তাকে এই পথ ভুলে গেলে হবে না। বাবা আর মায়ের কাছে ফিরতে হবে। সাদা চোখ লোকটা ঘোড়া থেকে লাফ দিয়ে নামে।সূর্যাস্তের সময় হয়ে আসছে। বালিতে আলো চকমক করছে। হাতটা খোলার চেষ্টা করছে মুগা। মুখে সাদা রঙ মাখা মাথায় ছোট একটা লোক খুব রেগে কাছে এলো। একটানে তাকে মাটিতে ফেলে এবার হাত ,পা সব বেঁধে দেয়। খুব প্রতিরোধ করে মুগা। বাঁধা হয়ে গেলে খুব চিৎকার করে । অন্ধকার নেমে আসার সময় লক্ষ্য করে তাদের গ্রামের বুড়ো লিয়ামের হাঁদা ছেলেটাকেও নিয়ে আসা হয়েছে। তার কেবল হাত বাঁধা। সে চুপ করে হাঁটুর ওপর হাত রেখে বসে আছে। শুকনো গালে কান্নার দাগ।

সাবুক কোমর থেকে শক্ত করে বাঁধা চামড়ার দড়িটা খোলে। অন্ধকার নামার আগে আগুন জ্বালানোর ব্যবস্থা করতে হবে।ঘোড়াগুলোকে জল খাওয়ানোর জন্যে জলের কাছে নিয়ে গেল একচক্ষু লুলু। লুলুকে দেখে খুব খারাপ লাগে সাবুকের। বড় বাধ্য যোদ্ধা লুলু। ওর ছেলে জাকুও বড্ড সাহসী। কিন্তু লুলুর বুদ্ধি আজকাল ঠিক মতো কাজ করে না। আগের শীতে,গুহামানুষ দের সাথে মারামারি করতে গিয়ে মাথায় খুব আঘাত পায়। আজকাল চুপচাপ ​ হয়ে গেছে। ওর কাছে এই দুষ্টু ছেলেটাকে রাখা ঠিক হবে না। কিন্তু দায়িত্ব নিয়ে নিলে দুঃখ পাবে। সাবুকের আজকাল এই সব ছুটোছুটি কাজের দায়িত্ব নিতে ভালো লাগে না। রাজার বোঝা উচিৎ। রাজা কেবল ওঝার কথা শুনছেন।ভেড়ার সংখ্যা কমে যাওয়াতে রাজার মেজাজ খারাপ। সাথে উত্তরাধিকার নিয়ে চিন্তা। রাজা আর সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন না সেটা তো বোঝায় যাচ্ছে। লুলুর ছেলের আজ সূর্য ওঠার আগে আদোয়া পৌঁছে যাবার কথা। গুহামানুষদের একটা ছোট দল কে নিয়ে। শুকনো ঘাসে আগুন জ্বালানোর চেষ্টা চলছে। যে চেষ্টা করছে তাকে অল্প বয়সি একজন ঠাট্টা করছে। মজা লাগল সাবুকের। একটু ভয় পাইয়ে দেওয়া দরকার। ছোকরার দিকে তাকিয়ে ছদ্ম হুংকার করে বলে উঠল সাবুক, “ ও পারছে না। তুমি করে দেখাও দেখি। না পারলে হাতের আঙুল কেটে নেবো।” সাবুক অবাক হল, ছোকরা একটুও বিচলিত না হয়ে খুব দ্রুত কাজে লেগে গেল। আর আশ্চর্য দক্ষতায় দ্রুত আগুন জ্বেলে দিল। শুকনো ঘাস থাকায় আগুনের পরিমাণ বেশ অনেকটা করা গেল।​ দলে দুহাতের আঙুলের সমান মানুষ আছে। বন্দী আরও তিনজন। আসলে বন্দী দুজন দুটি বিশেষ পুরুষ বালক। আর একজন আছে যে বন্দী নয় আবার দলেরও নয়। যার কাছে থেকে সাবুক এই ​ দুজনের খবর জেনেছিল- লোকটা লোভী। আদোয়া গিয়ে ভেড়া আর মাটির পাত্র দিতে হবে।

আগুন জ্বালানো ছেলেটিকে সাবুক ডেকে পাঠাল। ওর নাম জাকুজাকু, লুলুর ছোট ছেলে।

আদোয়াতে ফিরে সে যেন সাবুকের সাথে যোগাযোগ রাখে, লুলুর সামনে জাকুজাকু কে নির্দেশ দিল।

৭।।

কিরির ঘুম ভেঙ্গে দেখল, তার পাশে কেউ নেই। একটু বৃষ্টি হলেই তার গা গরম হয়,তাই তার দিদি আর মা একটা ছাগলের চামড়া জড়িয়ে দেয় ঘুমাবার সময়।সে উঠে দাঁড়িয়ে অবাক হয়ে দেখল ওদের এই ছোট গুহা টাতে সব কিছু লন্ডভন্ড। বাইরে আগুন ধরে রাখা গোল মঞ্চটা থেকে কেবল সাদা ধোঁয়া বার হচ্ছে। সবাই কোথায় গেল। গুহা থেকে বার হয়ে কিরি চমকে গেল। সবচেয়ে বুড়ো সাদাচুলের থিয়াম্মা মুখ গুঁজে মাটিতে পড়ে আছে। সাদাচুলে রক্ত জমে খয়েরী হয়ে আছে। কিরি চারপাশে আর কাউকে খুঁজে পেল না।মা আর দিদি কে খুব চিৎকার করে ডাকতে লাগলো। খুব দ্রুত গুহার ওপরের দিকে উঠে গেল কিরি। দাবানলের পরে খুব দ্রুত আবার সবুজ হয়ে উঠছে নদীর ধার । চারিদিকে তাকিয়ে দেখল। তাকে কেউ কিছু না বলে কোথায় চলে গেল। খুব অভিমান হচ্ছে তার। থিয়াম্মা যে এই ভাবে শুয়ে আছে তার বা কি হবে।কিরির গায়ে কি অত জোর আছে! কি ভাবে তুলে ধরবে! গুহার ছাদ থেকে সে দ্রুত নামতে থাকে। বড় বড় শিকড় ধরে নামতে খুব কম সময় লাগে তার। মাটিতে নাবার আগে সে দেখতে পায় বিরাট পাখি। শিকারের দিন এরা আকাশে গোল গোল করে ঘুরতে থাকে। বিরাট ডানা। থিয়াম্মার শরীরের খুব কাছে গিয়ে বসেছে পাখিটা। সামনে পরে থাকা একটা ছোট পাথরের টুকরো হাতে তুলে নিয়ে ছুঁড়ে মারে পাখিটা কে। বিরাট পাখা ঝাপটিয়ে একটু দূরে গিয়ে বসে। কিরি থিয়াম্মার গায়ে হাত দেয়।পাথরের মত ঠাণ্ডা গা। “ থিয়াম্মা থিয়াম্মা ওঠো ,বড় পাখিটা তোমায় কামড়ে দেবে। ওঠ ওঠ।” কানের কাছে মুখ নিয়ে কিরি অনেকবার বলল। পাখিটা একটু দূরে চুপ করে বসে আছে।সে এবার ধোঁয়া ওঠা আগুনের মধ্যে ছোট এক টুকরো কঞ্চি গুঁজে দেয় ,ফুঁ দিতে থাকে। আগুন দিয়ে পাখিটা তাড়াতে হবে।পাখিটা আবার এগিয়ে আসে। পাথর ছুঁড়ে মারে কিরি। আগে সে এতো জোরে মারতে পারত না। কিন্তু পাখিটার গায়ে পাথর ছুঁড়তে পেরে তার বেশ আনন্দ হল। আগুন জ্বলতে শুরু করেছে। কিন্তু সে চারপাশে তাকিয়ে দেখে খুব ভয় পেয়ে যায়। পাখি একটা নয় অনেক গুলো। তার দুহাতে যত আঙুল আছে তার চেয়ে বেশী। কিরি দৌড়ে গুহার মধ্যে যায়। লম্বা হাল্কা একটা কঞ্চি মত আছে ওর দিদি খুয়া ফল তুলবার জন্যে ব্যবহার করে সেটা নিয়ে এল। আরও চারখানা পাখি খুব কাছে এসে বসেছে। কি ভয়ানক এদের ঠোঁট। দেখেই বুঝতে পারছে কিরি। এরা খুব শক্তিশালী আর ভয়ানক। কিরি মাথার ওপর লাঠিটা ঘোরাতে লাগে, পাখিগুলো দূরে সরে যায়। হঠাৎ কিরির মনে হয় থিয়াম্মা কি তবে মরে গেছে!ভালো করে মুখের কাছে মুখ নিয়ে যায়। নাক দিয়ে কোন বাতাস আসছে​ না।পিঠের কাছে কান দিয়ে দেখে কোন আওয়াজ নেই। নাহ্ মরে গেছে বলেই মনে হচ্ছে। লাঠিটা হাতে নিয়ে ,থিয়াম্মার শরীরের পাশে পা ছড়িয়ে বসে থাকে কিরি।​ অনেক বার চিৎকার করে ডাকে খুয়া আর মায়ের নামে। কোথায় গেল তারা!

৮।।

ওরা মাকে খুব ভালো করে বেঁধেছে। মাথায় বকের পালকের মুকুট পরা ছেলেটা দ্রুত ঢালু বেয়ে নামছে সবার আগে নামছে। অন্যরা খুব ধীরে নামছে। ওদের লোকগুলো বেশ বেঁটে ।পূষন আর বারিক বিরাট শরীর নিয়ে দুলে দুলে নামছে। এরা যদি একবার এই লোকগুলোকে প্রতিরোধ করত এরা কিছু করতে পারতো না। কিন্তু দুজন এতো শান্ত। মা চিৎকার করে কালো ছেলেটা কে কিছু বলল।খুয়ার রাগে দুঃখে চোখের জল হু হু গাল ভিজিয়ে দিচ্ছে। তাদের অত কষ্ট করে বানানো পাথরের হাল্কা অস্ত্রটা ওরা নিয়ে নিল। খুয়া সবচেয়ে উঁচু গাছটার ওপরে উঠে বসে আছে।এখান থেকে নদীর ধার দিয়ে তার পরিবারের সবাই কে

সারিবদ্ধ ভাবে বন্দী বানিয়ে নিয়ে যাওয়া দেখছে। গোটা এলাকায় সেই ঝিমুনি ধরা গন্ধের ফুল ফুটেছে। ভোরের আকাশের পাখিরা উড়ে বেড়াচ্ছে।গোটা দলটা ধীরে ধীরে অদৃশ্য হল।খুয়া খুব চেষ্টা করল ঠিক কোন দিকে গেল। গুহার মাথায় চাপলে দেখা যাবে। গুহার দিকে দৃষ্টি ফেরাল, আরে গুহার ওখানে এতো শকুন কেন? থিয়াম্মা তবে! হুড়মুড় করে গাছ থেকে নামে খুয়া। ওর পায়ে কাল বিরাট একটা ক্ষত হয়েছে সেটা তে ব্যাথা পেল। খয়েরী হয়ে যাওয়া ক্ষত থেকে নতুন করে রক্তপাত শুরু হল।খুয়া ওষধি গাছ চেনে। থিয়াম্মা শিখিয়েছে। সেই পাতা মুখে চিবিয়ে ক্ষতস্থানে লাগায়। প্রচুর শকুন উড়ছে। খুয়া কেঁদে ফেলে। হাতের তালুতে চোখের জল মুছে পাহাড় বেয়ে গুহার দিকে এগিয়ে যায়। কিরি কে কি ওরা ধরে নিয়েছে।তিন জন বাচ্চার কথা মনে পড়ছে।কিরি এদের চেয়ে লম্বা। বুকের মধ্যে ধকধক করছে। তবে কি কিরি ও থিয়াম্মার সাথে! বুকের ভেতর জমাট হয়ে যাচ্ছে রক্ত। এতো খারাপ কখনো লাগেনি খুয়ার। খুয়া গুহার সামনের পাথরের পাশ দিয়ে ওপরে উঠে পরে। সামনে থিয়াম্মা উপুড় হয়ে পড়ে আছে । পাশে বড় একটা সরু গাছের ডাল হাতে কিরি শকুন তাড়াচ্ছে। কিরি অবাক হয়ে খুয়া কে জিজ্ঞেস করে, “তোরা কোথায় দিদি, থিয়াম্মা মরে গেছে। নাক দিয়ে বাতাস আসছে না।মা কই খিদে পেয়েছে ”।খুয়া হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে কিরি কে জড়িয়ে ধরে। শকুনরা দল বেঁধে ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া থিয়াম্মার খুব কাছে চলে আসে।​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​

■আগের পর্বগুলো ​ ​ ​ ​■ লেখক পরিচিতি

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.