থেমে গেছে ভার্চুয়াল ইনডিপেন্ডেন্স সেলিব্রেশন।সারাদিন যার গায়ে লেপ্টে ছিলো চিকেন, মাটন আর ওয়াইনের আস্বাদ। বৃষ্টি পড়ছে। শহীদ বেদীতে যথারীতি ক্লান্তি মেখে পড়ে আছে কিছু অবিন্যস্ত ফুল। বাঁশের খুঁটির মাথায় ভিজে যাচ্ছে নিঃসঙ্গ তেরঙ্গা।
ক্রমে রাত নেমে আসে। পৃথিবী ঘুমিয়ে গেলে মধ্যরাতে অভিধান ফুঁড়ে যে দ্যুতিময় অক্ষরমালা জেগে উঠেছিলো একদিন তার ক্ষয়িষ্ণু আলোর নীচে দাঁড়িয়ে থাকে মূঢ় বাতিস্তম্ভ।
একটা আটপৌরে মাানুষ সংসারের সাজানো তাকে এক এক করে ব্যক্তিগত আনন্দ বিষাদ সাজিয়ে রেখে, নিভিয়ে দেয় জোরালো আলোর ডিজিটাল বাল্ব। বাইরে অন্ধকারের আয়োজন সম্পূর্ণ না হলে ভেতরঘরে আলো জ্বলেনা যে! তার বুকের ভেতর বয়ে যায় একটা তেরঙ্গা নদী।টলটলে জলে ছায়া ফেলে কবেকার চেনা সব মুখ !
কোথায় যেন মানুষের মিছিল ছিলো! সামনে হেঁটে যাচ্ছেন একজন আলোমানুষ! কয়েকপা এগোতেই যার বুক ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিল ঘাতকের শানিত ঘৃণায়। ধীর পায়ে ভেসে আসে আরো এক হিরন্ময় পুরুষ! আশপাশের বিবর্ণ মুখগুলো রাঙিয়ে উঠতো যার শব্দের রঙমশালে!
জমাটবাঁধা গ্লানি আর বিশ্বাসহীনতায় ধুঁকতে থাকা বুকের ওপর এঁকে দ্যায় সহজ নিরাময়। মনের ভেতর রূপসাগরের অরূপরতন ঢেউ। বাউলের একতারায় ভেসে আসে অনশ্বর সুর "ও আমার দেশের মাটি তোমার 'পরে ঠেকাই মাথা।"
কতোবার মারী আর মড়কের দুর্বিসহ ঝাপট এসে পড়েছে মাথার ওপর! কতোবার 'ধর্মের নামে মোহ এসে' খুবলে খেয়েছে ভাইয়ের অস্থিমজ্জা! তবু আলোমানুষেরা ঠিক সময়ে বাড়িয়ে দিয়েছে হাত। তলিয়ে যেতে যেতেও ত্রিবর্ণ আঁকড়ে উঠে দাঁড়িয়েছে মানুষ!প্রখর সন্তাপে তো মানুষ এসে বসে কিছুক্ষণ মানুষেরই বুকের ছায়ায়!
আমাদের দরজায় সিঁধকাঠি নিয়ে দাঁড়িয়েছে ঘাতকের ঘৃণামাখা তীর! বসুমতী গুটিয়ে নিয়েছে শুশ্রুষার হাত!আমাদের যাপন আজ অনিবার্য ধ্বংসের মুখে। ইতিহাসের পাতা হতে এসো আজ ডেকে আনি সেইসব পূর্বপুরুষদের। আলো ফুরিয়ে এলে যাদের চোখের তারাগুলো অনায়াসে মশাল হয়ে ওঠে। মানচিত্র ফুঁড়ে ওঠে হাতের রেখায়। অন্ধকার প্রগাঢ় এখন।
জেনো এখনই প্রকৃত সময়! গলা তুলে প্রশ্ন করার, "রাজা তোর কাপড় কোথায়?"