গোলকুণ্ডা ফোর্টঃ
চলেছি একটা ধ্বংসাবশেষের সামনে, যা এক দীর্ঘ ইতিহাস বুকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন। আমরা চলেছি গোলকুণ্ডা ফোর্টে। ‘কাকাতিয়া বংশের’ হাত ধরে গড়ে ওঠা এই দুর্গের সমাপ্তি হয়েছিল মুঘল সম্রাট ঔরাঙ্গজেবের হাতে। কাকাতিয়াদের পরে এই সাম্রাজ্যের যথাক্রমে হাতবদল হয় কামা নায়ক, বাহমনি বংশ, কুতুবশাহী ও এখান থেকেই এই দুর্গ দখল করেন সম্রাট ঔরাঙ্গজেব। কাকাতিয়ারা তাঁদের সাম্রাজ্যের কোণ্ডাপল্লি ফোর্ট সহ পশ্চিম অংশের সামরিক সুরক্ষার জন্য এই দুর্গ নির্মান করেন। একটা গ্রানাইট পাহাড়ের উপরে ১২০মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট এই দুর্গের চূড়ায় ছিল সেনাদের নজরদারীর জন্য ছিদ্রযুক্ত পাঁচিল,যেখান থেকে তীর ছোঁড়া অনেক সহজ হত। পরবর্তীকালে রাণী রুদ্রমা দেবী এই দুর্গকে আরও কিছুটা শক্তিশালী করেন। একে একে কামা নায়ক ও বাহমনিদের হাত ঘুরে ১৫৩৮ সনে এই সাম্রাজ্য কুতুবশাহী বংশের হাতে আসে। ১৫৯০সন পর্যন্ত এই দুর্গই ছিল কুতুবশাহিদের রাজধানী। এরপর রাজধানী হাইদ্রাবাদে স্থানান্তরিত হয়। কুতুবশাহী বংশের প্রথম তিন সুলতানের দ্বারাই মাটির এই দুর্গ পরিবর্ধিত হয়ে বর্তমানের এই আকৃতি পায়। ১৬৮৭ সালে মোঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেব দীর্ঘ আটমাস ধরে যুদ্ধ চালিয়ে কুতুবশাহীদের পরাজিত করে এই দুর্গ দখল করে। পথ চলতে চলতেই ইতিহাসের গল্পটা করে নিলাম। অটো যে দুর্গের কাছেই চলে এসেছে বুঝতে পারলাম। দুর্গের পাঁচিলের গা ঘেঁসেই রাস্তা বেঁকে গিয়েছে। ফতে দরজা দিয়ে প্রবেশ করলাম দুর্গে্র ভিতরে। এই দরজার গঠনেও অদ্ভুত স্থাপত্য কীর্তির পরিচয় মেলে। গম্বুজের নিচে একটি বিশেষ পয়েন্টে দাঁড়িয়ে হাততালি দিলে এক কিলোমিটার দূরে দূর্গের সর্বোচ্চ পয়েন্ট ‘বালা হিসার’ পর্যন্ত শোনা যেত আওয়াজ। দুর্গে হঠাৎ শত্রুর আক্রমণ ঘটলে আওয়াজের মাধ্যমে রাজপরিবারের সকলকে আগে থেকেই সতর্ক করে দেওয়া হত।
আমরা পায়ে পায়ে এগিয়ে চললাম দু’ধারে সাজানো বাগানের মাঝের বাঁধানো রাস্তা দিয়ে। এই দুর্গ এখন আর্কিওলজিক্যাল ডিপার্টমেন্টের তত্তাবধানে। সুতরাং সুসজ্জার অভাব নেই,কিন্তু এবাগানে একদা শাহী নবাবদের যে আভিজাত্য ছিল, এখন দাঁড়িয়ে সেসব কল্পনাও কষ্টকর। এঅদি-ওদিক দিয়ে বাঁধানো রাস্তা চারিদিকে ছড়িয়ে আছে। ঠিক বুঝতে পারলাম না কোন পথে যাব আর কী দেখব? আগেই বলেছি, ইতিহাসের প্রতি আমার চরম অনিহা। স্থাপত্য, কারুকার্য ছাড়া কিছুই বিশেষ জানার আগ্রহও নেই,তাই কোনো গাইডের কঠা মাথায় আসেনি। নিজেরাই খানিক এখান-ওখান চড়ে বেড়ালাম। কখনও আস্তাবল তো কখন কোনও ভাঙা মসজিদের মতো কিছু। দেখলাম কিছু লোক সিঁড়ি ভেঙে উপরে উঠছে। আমরও উঠতে লাগলাম। অনেক সিঁড়ি। উঠতে উঠতে পায়ের শিরায় টান ধরে যাচ্ছে। একটু দাঁড়িয়েই ভাবছি, ‘থাক। আর যাব না। কিই বা আছে দেখার!’ এই সব শব দেখে অনেকেই দেখি ভীষণ মজা পায়। আমার কাছে ধ্বংসাবশেষ মৃতদেহ ছাড়া আর কিছু নয়। আর এই হাইদ্রাবাদের ইতিহাস বিশেষ জানাও নেই। একটা থেকে আড়াইটে পর্যন্ত নিজেরাই এদিক ওদিক ঘুরে সময় কাটালাম। হ্যাঁ, যে কথা বলছিলাম। ঐ যে সিঁড়ি দিয়ে উঠছিলাম, কিছু নেই জেনেও শেষের দিকে আর থামতে পারছিলাম না। একটা একটা সিঁড়ি পেরিয়ে যেখানে এলাম, সামনে তাকাতেই দেখলাম এক বিশালাকার জলাধার। কুয়োর মতো গভীর এবং বেশ দীর্ঘ। যেন কোনো পাহাড় কেটে গভীর অতল পর্যন্ত নেমে গিয়েছে। সম্ভবত এটাই সেই ‘বালা হিসার’। সর্বোচ্চ পয়েন্ট। দুর্গের জল সরবরাহ হত এখান থেকেই। এই সাম্রাজ্য অনেক উন্নত ছিল,এই জলাধার তার প্রমাণ। সেই সময়ে এমন পরিকল্পিত জল সরবরাহের ব্যবস্থা ছিল ভাবলেই আশ্চর্য লাগে। তবে এখানেই শেষ নয়, আশ্চর্যের এখনও অনেক বাকি। যদিও ঠিক ঐ মুহূর্তে ঐখানে দাঁড়িয়ে থাকার সময় আমিও জানতাম না সব কিছু। ওখান থেকে যখন নেমে এলাম, তখন প্রায় আড়াইটে। আর কি করব? কোথায় যাব? কি দেখছি কিছুই তো বুঝতে পারছি না! অগত্যা সন্ধের লাইট এ্যন্ড সাউন্ড দেখার জন্য আমাদের প্রায় সাড়েপাঁচটা পর্যন্ত বসে থাকতে হবে। গিয়ে বসলাম বাগানে,ঘাসের উপর। একটু একটু করে সময় বইয়ে লাগল। সাড়ে তিনটের দিকে আবার উঠে অন্য দিকের রাস্তায় এগোতে লাগলাম। যেদিকে লাইট এ্যন্ড সাউন্ড হয় ঐ পথে। একটা সুদীর্ঘ রাস্তার দু’ধারে বাগান সাজানো। রাস্তাটা আমরা এতক্ষণ যেখানে ছিলাম, সেই জায়গার সাথে এই দিকটাকে সংযুক্ত করেছে। হেঁটে এসে একজন দারোয়ানকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘ ভাই, লাইট এ্যন্ড সাউন্ড কোথায় হবে?’ লোকটি যেখানে দাঁড়িয়ে, ঠিক পাশেই একটা দরজা দেখিয়ে বলল, এখানেই হবে। এখনও অনেক দেরী। আমরা ঐ গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকে গেলাম। গেট, কিন্তু একটা বাড়ির মতো চওড়া। এদিক ওদিক মাথা তুলে, ঘাড় বেঁকিয়ে দেখে চলেছি স্থাপত্য কারুকলা। হঠাৎ দেখলাম একজন বয়স্ক গাইড একদল বিদেশী পর্যটকদের নিয়ে ঐখানে এসে দাঁড়াল। মূল দরজা থেকে বেশ অনেক ফুট দূরেই একটা থাম্বার পাশে একটা উঁচু বসার জায়গায় গিয়ে বসে পড়ল গাইড লোকটি। তারপর যেটা বোঝাতে লাগল, তার সারমর্ম এই, ‘ আসলে ওই বসার জায়গাটি রাণী মহলে ঢোকার আগে পাহারাদারের জন্য তৈরি। এমন এক পজিশনে ওটা নির্মিত যে, ওখানে পাহারাদার বসে থাকলে বাইরে থেকে কোনো অ্যাঙ্গেলেই তাকে দেখা যাবে না, অথচ সে ভিতরে বসেই বাইরের চতুর্দিকে দেখতে পাবে। আশ্চর্য হয়ে গেলাম বিষয়টা জেনে! তখনই হঠাৎ মনে হল, ইসস্ একটা গাইড নিলে খুব ভালো হত। কিন্তু ঐ মুহূর্তে আর গাইড পাব কোথায়! আমরা এগিয়ে গেলাম। পিছনে পিছনে গাইড লোকটি পর্যটকদের নিয়ে কিছুটা আসার পর তাদের বিদায় জানিয়ে এগিয়ে এলো আমাদের কাছে। ‘গাইড লাগেগা স্যার?’
মনে মনে ভাবলাম ভালোই হল। আমরা কিছু বলার আগেই সে বলল, ‘ আভি ফ্রিটাইম হ্যয় স্যার। পুরা দুর্গ তো নেহি দিখনা হ্যয়। ২০০ রুপেয়া দেনা স্যার। হাম আচ্ছেসে ঘুমা দেঙ্গে আপলোগোকো’। বললাম, ঠিক আছে চলো। ছোটো ছোটো বিস্ময় জানার পর একটু হলেও ইন্টারেস্ট তখন তৈরি হয়েছে মনে। গাইড মহম্মদ ভাই আমাদের নিয়ে এলেন এক চারথাম ওয়ালা জায়গায়। নিচে ঠিক মাঝখানে গোল করে দাগ দেওয়া আছে। সামনে একটা উঁচু জায়গা আঙুল তুলে দেখিয়ে মহম্মদ্ভাই বললেন, ‘ ঊঁহাপর সুলতান বইঠকে বিচার করতে থে। আর গোল দাগ দেখিয়ে বললেন, এইখানে কয়েদী দাঁড়িয়ে থাকত’। বিচারের এই বিশেষ ব্যবস্থার কারণ ছিল, বিচার চলার সময় যাতে কেউ সুলতানকে আক্রমণ না করতে পারে তারজন্য একটা বিশেষ এ্যঙ্গেলে তৈরি করা ছিল সুলতানের আসন। আসতে আসতে রাণীমহলের ভিতরে নিয়ে গেলেন আমাদের। দেখলাম রাণীরা তার সখীদের সাথে কোথায় স্নান করতেন। সব কিছু এখন আর নেই। বিশেষ কিছু অংশই শুধু রয়ে গিয়েছে। তবে কোথাও কোথাও দেওয়ালের গায়ে সূক্ষ্ণ কারুকার্যের অবশেষ রয়ে গিয়েছে। একে একে স্নান ঘর ছেড়ে এগিয়ে যেতে লাগলাম রসইঘর, মানে গোদা বাংলায় যাকে বলে রান্না ঘর। চলতে চলতে হঠাৎ গাইড থেমে গেলেন। ঘাড় ঘুরিয়ে উপরের দিকে আঙুল তুলে বললেন, ‘বো দেখিয়ে, হামারা রেইন ওয়য়াটার পাইপ হতে হ্যয় না, উস বখত্ মে ভি থা। দেখিয়ে থোড়িসি আভি ভি বাকি হ্যয়’।
আমরা চোখ তুলে তাকিয়ে বিস্ময়ে অবাক হলাম। সত্যিই তো! কেল্লার ছাদের জল যাতে বেরিয়ে নিচে পড়ে, তার জন্য সেসময়েও রেইন ওয়াটার পাইপ ছিল! ভগ্নাবশেষ এখনও ঝুলে আছে। তারমানে আমরা বর্তমান প্রজন্মের মানুষ আমাদের আবিষ্কার বলে লাফাই, আসলে বেশিরভাগই অনুকরণ। অনুকরণই তো। একটু এগিয়ে যেতেই এই সত্য আরও ভীষণ ভাবে প্রমাণিত হল। একটা ভাঙা দেওয়ালের গায়ে মাটি থেকে হাত দুয়েক উঁচুতে একটা বেসিনের মতো গর্ত অংশে পাশাপাশি দুটি গর্ত। মহম্মদ ভাই ঐ গর্ত দুটো দেখিয়ে বললেন, ‘ইহাঁ সে গরমপানি অউর ঠান্ডাপানি নিকলতে থে’। মানে হাত ধোয়ার বেসিন। রান্নাঘরের এদিক-ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে কিছু উপকরণ। ছাদের কোনও অস্তিত্ব নেই। শুধু কয়েকটা ভাঙা দেওয়াল জেগে আছে। রান্না ঘর ছেড়ে সামনে এগোতেই একটা বিশাল প্রাচীর চোখে পড়ল। উচ্চতা চারতলা বাড়ির সমান হবে। কিছুটা অংশ ভেঙে পড়েছে। কিন্তু যেটা বলার বিষয়, এতো বড় প্রাচীর দাঁড়িয়ে আছে কেবলমাত্র কাঠের সাপোর্টে।
এবার যেখানে পৌঁছালাম, সেটা রাজা রাণীর বিশ্রাম কক্ষ। মোটা মোটা দেওয়ালেরও কান আছে এখানে। ‘দেওয়ালের কান আছে’ প্রবাদটা ছোটো থেকেই আমরা শুনে এসেছি।এখানে তার বাস্তব প্রয়োগ দেখলাম। মহম্মদ ভাই আমাদের ওখানে চলে গেলেন। সেই প্রথম বিচারের স্থানে। সেখানে গিয়ে ফিসফিস করে এক থেকে দশ পর্যন্ত গুনলেন,আর আমরা বিশ্রাম কক্ষের ভিতরে বসেই সেটা শুনতে পেলাম। আশ্চর্যের বিষয়, অতো মোটা দেওয়ালের ওপারের কথা এখনকার বাড়িতে হলেও শোনা সম্ভব নয়, অথচ জানি না সেখানে কোন টেকনোল্যজি ব্যবহার করা হয়েছে,যাতে এটা সম্ভব হল। আপনারা হয়তো ভাবছেন মহম্মদভাই আমাদের বোকা বানিয়েছেন। না, কারণ আমরা নিজেরাও যাচাই করে দেখেছি বিষয়টা।
শয়নকক্ষ থেকে বেরিয়ে কিছুটা এগোতেই চোখে পড়ল একটা লোহার শিকে ঘেরা দরজাহীন বেশ বড় আকারের ঘর। যার দেওয়ালে তাকের মতো খাঁজ কাটা। আবার আয়না লাগানোর মতো ফাঁকা জায়গাও। রাণীদের সাজঘর। রিঠা দিয়ে মাথা পরিষ্কার করে দিত দাসীরা। বেসন ছিল মুখ, গা-হাত,পা পরিষ্কারের উপাদান। ওখানে কিছুক্ষণ দাঁড়ালাম। এই প্রথম যেন ইতিহাসকে অনুভব করতে পারলাম। চোখের সামনে কল্পনার চোখ খুলে একবার দেখে নিলাম, বড় বড় আয়নার ঝলক,তাকে সাজানো প্রসাধন দ্রব্য। রাণীরা কলকল, খলখল করে হাসছেন, আর দাসীরা তাঁদের গা ডলে দিচ্ছে যেন। একটা অদ্ভুত সুন্দর জীবন্ত দৃশ্য!। দূরে দেখা যাচ্ছে দেওয়ানেখাস। ধাপে ধাপে সিঁড়ি উঠে গিয়েছে উপরে।
সন্ধ্যা নামার আগেই মহম্মদ ভাই টাকা নিয়ে আমাদের বিদায় জানিয়ে চলে গেলেন। ক্ষণিকের পরিচিতি এখন মগজেই শুধু জেগে আছে। নামটাও পুরো মনে নেই। স্মৃতির ঝলকে শুধু মনে পড়ল মহম্মদ শব্দটা ছিল। সেটাই লিখে ফেললাম লেখাতে। নামে কি যাই আসে। এই পৃথিবীতে একটাই সত্য, সম্পর্ক, তা সে শত্রুতা হোক বা বন্ধুতা। ওটুকুই বেঁচে থাকে অন্তরে। রাণী মহলের ভিতরেই চলে লাইট এ্যান্ড সাউন্ড। টিকিট অনুসারে দুটো শ্রেণী আছে। সাধারণ আর ভি.আই.পি। আমারা সধারণের দর্শক। অন্ধকার নামতেই দিওয়ানেখাসে জ্বলে উঠল লাল আলো। তারপর খটখট ভারি জুতোর আওয়াজ। কুতুবশাহী বংশের শেষ নবাব নেমে আসছেন সিঁড়ি দিয়ে। অসাধারণ সাউন্ড সিস্টেম! উপর থেকে নেমে বারান্দা দিয়ে যেন সত্যিই কেউ হেঁটে যাচ্ছেন। হঠাৎ গমগমে কন্ঠস্বর ভেসে এলো। কারোর সাথে কোনও গোপ্ন পরামর্শ চলছে। গলার স্বরটি বিখ্যাত এক মানুষের। আমাদের অমিতাভ বচ্চন স্যারের। আলো সরে সরে যাচ্ছে। কখনও সেপাই দৌড়াচ্ছে। কখনও স্নান ঘরে রাণীরা জেগে উঠছেন যেন ইতিহাসের পাতা থেকে। কলকল, খলখল হাসছেন। দাসীদের সাথে মশকরা চলছে। কোথা দিয়ে যেন কেটে গেল একঘন্টা সময়। ঘড়িতে তখন সন্ধে সাতটা প্রায়। অটোটা ছেড়ে দিয়েছিলাম। অচেনা জায়গায় বেশ একটা গা ছমছমে অনুভূতি নিয়ে কেল্লার বাইরে এসেই খুঁজতে লাগলাম অটো। মিনিট পাঁচেক ফাঁকা রাস্তায় দাঁড়িয়ে। একটা আধটা মানুষ হেঁটে যাচ্ছে সামনে দিয়ে। হঠাৎ দেখা মিলল একটা অটোর। সোজা হিমায়ত নগরের হোটেলের সামনে নেমে পড়লাম। পরের দিনটা ফাঁকা। সন্ধে সাতটায় সেকেন্দ্রাবাদ থেকে বিশাখাপত্তনাম যাওয়ার ট্রেন। আমাদের বেরতে হবে অন্তত ঘন্টা দুয়েক আগেই। দুপুরে কাকাবাবুর বাড়িতে খাওয়ার নিমন্ত্রণ। সকালেই কাকাবাবু গাড়ি নিয়ে হাজির হলেন। হোটেল ছেড়ে লাগেজ নিয়েই চলে গেলাম সেখানে। কাকিমার রান্না পুরো প্রফেশন্যাল। হোটেলে খাচ্ছি না বাড়িতে, তফাৎ করতে অসুবিধা হল। আন্তরিকতার হাফবেলা ওখানে কাটিয়ে বিকেলের দিকে চলে গেলাম সেকেন্দ্রাবাদ স্টেশনে। খুব ইচ্ছা ছিল বিজয়ওয়ারাতে একটা দিন থাকার। সময়ের সাথে মেলাতে পারলাম না। অগত্যা ঠিক সাতটায় চেপে বসলাম বিশাখাপত্তনমের ট্রেনে। পৌঁছাব ঠিক ভোর সাড়ে পাঁচটাতে। সেখানেও অনেক ঘটনা, তবে সে গল্প পরের পর্বে। ...ক্রমশ।
Tags:
ভ্রমন