রত্নদীপা দে ঘোষ

রত্নদীপা দে  ঘোষ

আমসবুজে মাতোয়ারা 

মাধ্যাকর্ষণের বীজ ফেটে বেরিয়ে আসছে বর্ষাতুমুল।
তুমুলটুকু। আষাঢ় বিভঙ্গে জারিয়ে রাখুন। বর্ষা ঢেলে নিন দেরাজের আধারে।
মিশিয়ে দিন কোয়েলের পিউ। কাহারবায় মেশামেশি হোক শ্রাবণের ডুব।
ঘড়ি ধ’রে ঠিক পাঁচমিনিট ভরাডুবি। তারপর,  একটু টই আর একগোছা টম্বুর।
অপেক্ষা করুন। মিশ্রণটিকে ডেকে নিন চোখে। করিয়ে দিন আলাপ, ছলাতজলের সাথে।
দেখুন আর অনুভব করুন আমসবুজ অক্ষরেখাটি মিড়। মুখরা আর অন্তরার গন্তব্যে পৌঁছে
প্রাণের বান্ধবকে ডেকে নিন প্রাণে। তারপর? মনে প্রাণে এক চুমুক । 


লেমনতাজের তরজা

মন কী চাইছে?  নম্রনদীর উপত্যকায় একটু উচ্ছল হ’তে?
ইচ্ছে করছে টিয়াদ্বীপের গোধূলি? ইচ্ছে করছে এক গেলাস লেমন-তরজা?
জানি বন্ধু জানি। এমন নিভৃত সপ্তক, মন তো হরষিত হবেই।
ঊষাপাত্রে জড়ো করুন প্রণয়জাত শিহরণ। কিঞ্চিৎ সাওন-কণার দে’দোল।
মনে রাখবেন, দুলুনির পরিমান যাতে কিছুতেই এক গেলাসের বেশি যেন না হয়।
মনিপদ্মের পালক ঢেলে দিন আকুল আহ্বানে। কর্ণফুলীকে প্রকাশ করুন স্রোতস্বিনীর দিগন্তে।
সদ্যজাত চুম্বকের অনুরণন শুনতে পাচ্ছেন? ঢেউ? রাগরাগিণীর মালঞ্চ? মনে রাখবেন,
রূপ আর অরূপ, এই দু’জনই স্বাদের কোরক। খিলখিলিয়ে ওঠা লেমন-লেবুর জেসমিন।


কমলা শিউলি সদা বাহার 

তুলাইপাঞ্জি প্রদেশটি ছুটছে কুলুঙ্গির দিকে।
উড়তে উড়তে বলে যাচ্ছে, বেঁচেথাকাটি আসলে এক উৎসব। নরম আর সুগন্ধি।
আতপের দখিনা পেরিয়ে তাদের সাথে পৌঁছে যান বাতিস্তম্ভের ডানায়।
আগুন এক উত্তম রাজপ্রাসাদ। সেই সুধায় হাল্কা নভোনীল,  বিস্তারিত হোক তারিণীর তারাজগত।
গানাঞ্চলে ঈষৎ ইষ্টদেবতা মিলিয়ে দিন। পাঞ্চজন্য জ্বলে উঠুক স্বপ্নস্বম্ভবের চারুকলায়। পাঁচ বাই ছয়। অবচেতেনের লালিমা। কে বলে রেখাচিত্র দিয়ে আকাশের কারুকলা আঁকা যায় না।
এই যে দেখুন, কেমন ফুলে-ফসলে পেকে উঠছে ধানরুটির সদাশিউলি।
ঝরিয়ে ফেলুন বহুতলের কমলা অ্যাপ্রন। প্রিয়জনের মুখে তুলে দিন হিল্লোরের ডাকবাক্স,  চিঠিদানায় চিকচিক সুফিশরত। প্রিয় হোক দিনদুনিয়ার আলোপাঠক।


Previous Post Next Post