সংঘমিত্রা রায়চৌধুরী

বাঙালির হৃদয়ের বাঙালি
বাঙালির নিজস্ব ঘরানার প্রারম্ভ "রেনেসাঁ" সূচিত হয় রাজা রামমোহন রায়ের হাতে, উৎকর্ষতা লাভ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাতে, ব্যাপ্তি সত্যজিৎ রায়ের হাতে। সংস্কৃতিমনা বাঙালির স্বর্ণযুগ ঊনবিংশ ও বিংশ শতক জুড়ে।

আপামর বাঙালি এসে থমকে দাঁড়ায় ১/১ বিশপ লেফ্রয় রোডের সেই বিখ্যাত বাড়ীর সামনে। এখন যদিও এই রাস্তাটির নতুন নামকরণ হয়েছে, তবুও নস্টালজিয়া পুরোপুরি ধরে রাখতে, আমি পুরনো নামটাই বলছি। আজ্ঞে হ্যাঁ, আমাদের পাঠক বন্ধুরা অনেকেই আন্দাজ করতে পারছেন যে, আজ আমি বাঙালির গর্ব বিশ্ববরেণ্য চলচ্চিত্র পরিচালক, সাহিত্যিক, শিল্পী এবং সঙ্গীতকার শ্রী সত্যজিৎ রায়ের কথা লিখছি আমার অতি সামান্য ক্ষমতায়। তাঁর অবসরের সেই বিখ্যাত পোশাক... সাদা ঢোলা পায়জামা ও সাদা ফুলহাতা পাঞ্জাবির হাতা গুটিয়ে রাখা, ঠোঁটের কোণে একই সাথে ঝুলন্ত হাসি আর জ্বলন্ত পাইপ। আগন্তুক অতিথি তাঁর বাড়ির দরজায় কলিং বেল বাজালে, ভিতরে আসার সাদর আহ্বান জানিয়ে নিজে হাতে দরজা খুলে দিতেন সেই দীর্ঘদেহী এবং সদর্থক অত্যুচ্চ মানুষটি, বিশ্ববরেণ্য চলচ্চিত্র পরিচালক শ্রী সত্যজিৎ রায়।

শ্রদ্ধেয় শ্রী সত্যজিৎ রায়ের বর্ণময় ও ঘটনাবহুল বিশাল সফল কর্মজীবনের পাশাপাশি তাঁর ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কেও খুব সামান্য আলোকপাত করার চেষ্টা করবো।

ব্যারিটোন ভয়েসের অধিকারী অগাধ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষটির বংশলতিকাটি দেখা যাক, ১০০ গড়পার রোডের বাড়িতে। ঠাকুর্দা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, ঠাকুমা বিধুমুখী দেবী। তাঁদের তিনছেলে বাবা সুকুমার রায়, কাকা সুবিনয় রায় ও সুবিমল রায়। তিনমেয়ে হলেন পিসি সুখলতা রাও, পুণ্যলতা চক্রবর্তী ও শান্তিলতা রায়। মা সুপ্রভা রায়। ১/১ বিশপ লেফ্রয় রোডের বাড়ির পরিবার স্ত্রী বিজয়া রায় এবং পুত্র সন্দীপ রায়, পুত্রবধূ ললিতা রায়, পৌত্র সৌরদীপ রায়কে নিয়ে।

শ্রী সত্যজিৎ রায়ের ছায়াছবি কিম্বা সাহিত্য রচনা.... সবেতেই ডিটেইলিং খুব বেশী চোখে পড়ে। আর তাতেই একটা অন্যমাত্রা যোগ হয় তাঁর সৃষ্টিতে। তাঁর বিশ্বাস ও দর্শণ, যেকোনো সৃষ্টিধর্মী কাজেই ডিটেইলিঙের ভূমিকা অপরিসীম। ডিটেইলিং আসলে নেপথ্য এবং পরিবেশ সৃষ্টি করাতে ভীষণই গুরুত্বপূর্ণ।

যথাযথভাবে বর্ণনা করতে প্রয়োজন ডিটেইলিং সমৃদ্ধ দৃশ্যায়নের। সংলাপ দিয়ে নয়। তাঁর মতে, সংলাপ হোলো কমিউনিকেশন্স-এর সবচেয়ে দুর্বলতম হাতিয়ার। সেই অসামান্য বিস্তারিত ডিটেইলিং অবশ্য আমরা তাঁর সব চলচ্চিত্রেই পাই। সত্যি বলতে কী, ভারতীয় চলচ্চিত্রে এক অন্য ঘরানার সমান্তরাল চলচ্চিত্র ভাবনার অনুপ্রবেশ বোধহয় ঘটেছে শ্রী সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্রের হাত ধরেই। 

কর্মজীবনে এতো বিভিন্ন রকমের পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি, এতে তো আমরা বাঙালীরা, সমস্ত দেশবাসী গর্বিত। তাঁর অগণিত গুণমুগ্ধ দর্শক ও পাঠক হিসেবে গর্বিত মানুষ তাঁকে নিজেদের হৃদসিংহাসনে আসীন রেখেছে। তিনি ভূষিত হয়েছেন পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ, পদ্মবিভূষণ, ভারতরত্ন, দেশিকোত্তম, দাদা সাহেব ফালকে, অ্যাকাডেমি পুরস্কার, লিজিয়ন অফ অনার, অস্কারের মতো সর্বোচ্চ সমস্ত পুরস্কার পেয়ে। সত্যজিৎ রায় ১টি গোল্ডেন লায়ন, ২টি সিলভার বিয়ার পুরস্কারও লাভ করেন।

"পথের পাঁচালী" ১৯৫৫ থেকে ১৯৬৬-এর মধ্যে ভারত ছাড়াও মোট ১১টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার। "অপরাজিত" পেয়েছে ভেনিস, সানফ্রান্সিসকো, বার্লিন, ডেনমার্কসহ ৫টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার। তথ্যচিত্র ‘রবীন্দ্রনাথ’ ও ‘ইনার আই’ এবং টিভি চিত্র ‘সদ্গতি’ও পেয়েছে দেশ-বিদেশের পুরস্কার। এছাড়া ব্যক্তিগতভাবে তিনি পেয়েছেন বিশেষ সম্মান ও পুরস্কার। তিনি ভারত সরকারের নিকট থেকে ৪০টি পুরস্কার এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ৬০টি পুরস্কার লাভ করেন। এসবের মধ্যে রয়েছে দেশ-বিদেশের বহু বিশ্ববিদ্যালয়ের অনারারি ডক্টরেট ডিগ্রি, বিশ্বভারতীর ‘দেশিকোত্তম’, ‘দাদা সাহেব ফালকে’ ভারতীয় চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ পুরস্কার, ম্যাগসেসেই পুরস্কার, ফ্রান্সের ‘লিজিয়ন অব অনার’ (১৯৮৭), ‘ভারতরত্ন’ (১৯৯২), বিশেষ ‘অস্কার’ (১৯৯২) পুরস্কার ইত্যাদি।

সত্যজিৎ রায়ের তৈরী সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য সিনেমা "পথের পাঁচালী"। এই ছবির কাহিনীকার সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, একথা সর্বজন বিদিত। কিন্তু এই ছবি তৈরীর অনুপ্রেরণা কোথা থেকে কীভাবে পেয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়? তিনি

১৯৪৮ সালে নির্মিত ভিত্তোরিও ডি সিকা দ্বারা পরিচালিত ইতালিয়ান ছবি 'দ্য বাই সাইকেল থিভস' দেখে অনুপ্রাণিত হন। এবং এরপরই তিনি "পথের পাঁচালী" তৈরীর সিদ্ধান্ত নেন। তারপর "পথের পাঁচালী" তৈরী হয় এবং এর পরের ইতিহাস তো আমরা সবাই জানি। "পথের পাঁচালী"র হাত ধরে অস্কার এলো চিত্রপরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ঘরে, বাংলার বাঙালির ঘরে, ভারতবর্ষের একমাত্র অস্কার পুরস্কার।

সবচেয়ে আনন্দের বিষয় যে একটি সম্পূর্ণভাবে বাংলা সাহিত্যনির্ভর ভারতীয় সিনেমা বিশ্বের দরবারে জায়গা করে নিতে পেরেছে। এবং সেই সিনেমার পরিচালক হিসেবে সত্যজিৎ রায়ও গর্বিত যে তাঁর তৈরী করা সিনেমাটি বিশ্বের সিনেমাপ্রেমীদের কাছে ভারতীয় চলচ্চিত্রের প্রেক্ষাপটকে খানিকটা বদলে দিয়েছে।

তাঁর তৈরী সব সিনেমাই ভীষণভাবে সাহিত্যনির্ভর। বাংলাসাহিত্যের দিকপাল অনেক প্রবীণ ও নবীন সাহিত্যিকের কাহিনী নিয়ে তিনি সিনেমা করেছেন। এমনকি তাঁর নিজের লেখা অনেক কাহিনীও তিনি নিজের তৈরী সিনেমায় ব্যবহার করেছেন।

সাহিত্য এবং চলচ্চিত্র... দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন মাধ্যম। মূল উদ্দেশ্য যদিও দুটিতেই এক... গল্প বলা। কিন্তু সাহিত্যে গল্প বলা কাগজে কলমে শব্দসম্ভার সাজিয়ে গুছিয়ে, আর সিনেমায় গল্প বলা ক্যামেরার চোখে দেখানো দৃশ্য থেকে দৃশ্যান্তর জুড়ে জুড়ে। আপাতদৃষ্টিতে মনে হলেও, আসলে দুটি ভিন্ন মাধ্যমে গল্প বলার ঢঙটি কেবল ভিন্ন। আদতে তাতে গল্প অনুভবের ক্ষেত্রে কোনো তারতম্য ঘটে না। দুটি মাধ্যম দিয়েই কাহিনীটি সমান উপভোগ্য থাকে। যিনি পাঠক তিনিই যখন দর্শক তাঁর কাছেও গল্পের আবেদনটি সমানই থাকে, এইটি প্রমাণ করে দিয়েছেন শ্রী সত্যজিৎ রায়।

তিনি শুধুমাত্র একজন চলচ্চিত্র পরিচালক নন, তিনি সুরকার, কথাকার, চিত্রনাট্যকার, আর্ট ডিরেক্টর, এবং সর্বোপরি একজন সাহিত্যিক ও সম্পাদক তিনি কিন্তু নিজেকে প্রতিটি ভূমিকায় নিজেকে সমানভাবে উপভোগ করতেন। এমনকি আগ্রহী ছিলেন অভিনয়েও। "গুগাবাবা"র ভূতের রাজার কন্ঠাভিনয়ে তাঁর থেকে বেশী পরিণত কোনো কন্ঠাভিনেতাকে বাঙালি বনাম সমগ্র দর্শককুল পেতো কি? সাহিত্যিক সত্যজিৎ রায়ের সৃষ্ট অমর ও জনপ্রিয় চরিত্রগুলি হোলো, গোয়েন্দা ফেলুদা ও সহকারী তোপসে এবং বন্ধুবর জটায়ু, মহান বিজ্ঞানী শ্রী ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কু এবং তারিণী খুড়ো। লেখক হিসেবেও সত্যজিৎ রায় অত্যন্ত খ্যাতিমান। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থগুলি হোলো: বিষয় চলচ্চিত্র, একেই বলে শুটিং, আওয়ার ফিল্মস দেয়ার ফিল্মস, ফেলুদা সিরিজ, শঙ্কু সিরিজ, পিকুর ডায়েরি এবং একগুচ্ছ চমকপ্রদ ছোট গল্প।

সত্যজিৎ রায় এবং সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় একসঙ্গে মোট ১৪ (চোদ্দো) টি সিনেমায় কাজ করেছেন। তাঁদের এই জুটি সিনেমা ইতিহাসে বিখ্যাত। ঠিক যেভাবে বিখ্যাত মিফুন ও কুরোশাওয়া, মাস্ত্রোইনি ও ফেলিনি, ডি নিরো ও সোরসেসের মতো জুটি।

তিনি তাঁর খুব শৈশবেই বাবাকে হারিয়েছিলেন। তাঁর বাবা সুকুমার রায়ও একজন স্বনামধন্য সাহিত্যিক ছিলেন। তাঁর বাবার সেই রসবোধের পরিচয় আমরা তাঁর সাহিত্যেও পাই। কোনো কোনো বিশেষ খণ্ডচিত্র তাঁর বাবার সাহিত্য থেকে সত্যজিৎ রায়ের সৃষ্টিতে সরাসরি প্রভাব ফেলেছে। যেমন, "সোনার কেল্লা" সিনেমার সেই বিখ্যাত ট্রেনের দৃশ্য, যেখানে লালমোহনবাবুর সঙ্গে প্রথমবার আলাপ হচ্ছে ফেলুদার। লালমোহনবাবু ফেলুদাকে বলছেন, "ছাতি ২৬, কোমর ২৬, গলা ২৬, আপনি কি মশায় শুয়োর?" এই অংশটা সুকুমার রায়ের লেখা "হযবরল" থেকে নেওয়া।

সত্যজিৎ রায় পরিচালিত মোট ৩৬ (ছত্রিশ)টি সিনেমার মধ্যে, মোট ৩২ (বত্রিশ)টিই জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে। এর মধ্যে আবার ৬ (ছয়)টিতে তিনি পেয়েছেন সেরা পরিচালকের পুরস্কারও। এই প্রসঙ্গে অবশ্য কিছু বিরুদ্ধ সমালোচনাও শোনা যায়।

সত্যজিৎ রায়ের ছবি অধিকাংশই বিয়োগান্তক, অথচ অনেক উল্লেখযোগ্য বার্তাবাহী। মানুষের জীবনটাই যে আদ্যোপান্ত বিয়োগান্তক! মৃত্যু আর হার... জীবনের চরম দুই সত্য যে এড়ানো অসম্ভব, তা তাঁর অধিকাংশ সিনেমায় পরিস্ফুটিত।

তাঁর স্পষ্ট রাজনৈতিক ধারণা ও মতবাদ দেখা গেছে অনেক ছবিতে, ভারতবর্ষের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য তাঁর সিনেমার মাধ্যমেই। তাঁর আদতে কোনো রাজনৈতিক মতবাদ এবং দৃষ্টিভঙ্গি ও সব বক্তব্যই তাঁর "রিল"-এই আছে।

সিনেমার দুনিয়া জয় করার আগে গ্রাফিক ডিজাইনার ছিলেন সত্যজিৎ রায়। বহু বইয়ের কভার পাতা তিনি ডিজাইন করেছেন। এর মধ্যে অন্যতম হোলো জিম করবেটের "ম্যান ইটার্স অব কুমায়ুন" ও পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর "ডিসকভারি অব ইন্ডিয়া"।

সত্যজিৎ "তোড়ায় বাঁধা ঘোড়ার ডিম" নামে একটি ননসেন্স মজার ছড়ার বই লেখেন, এবং তাতে লুইস ক্যারলের "জ্যাবারওয়কি"র একটি অনুবাদ রয়েছে। সত্যজিৎ রায় “রে রোমান” (Ray Roman) ও “রে বিজার” (Ray Bizarre) নামের দু'টি টাইপফেসের নকশাও করেছিলেন। এর মধ্যে "রে রোমান" ১৯৭০ সালে একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার জেতে। চলচ্চিত্র জগতে পদার্পণের এবং চূড়ান্ত সাফল্যের পরেও গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে নিজে কাজ করতেন। আর তা অধিকাংশই নিজের জন্যই। সত্যজিৎ রায় তাঁর নিজের লেখা সমস্ত বইয়ের প্রচ্ছদ ও ভেতরের ছবি নিজেই আঁকতেন। এমনকি তিনি তাঁর নিজের পরিচালিত চলচ্চিত্রের সব বিজ্ঞাপনগুলো পর্যন্ত নিজেই তৈরী করতেন।

৫০-৬০-এর দশকের কলকাতায় বাংলা ভাগ নিয়ে কখনো কোনো অযাচিত মন্তব্য করলে এক মাতালের কাছে গালিগালাজ খাওয়া ছিলো অবধারিত। একদিন রাতে কলকাতার ময়দানে হাঁটছিলেন সেই মাতাল। নেশার পরিমাণ এতটাই বেশী ছিলো যে একা বাড়ি ফেরার ক্ষমতা নেই। অতএব অগত্যা ট্যাক্সি নিলেন সেই মাতাল। ট্যাক্সি করে গন্তব্যে পৌঁছে ভাড়া চাইলেন ট্যাক্সি ড্রাইভার। টাকা দিতে পারলেন না সেই মাতাল। বদলে মাতাল ব্যাক্তিটি ট্যাক্সি ড্রাইভারকে বললেন, "আমার কাছে টাকা নেই, তুমি বরং এক কাজ করো, সোজা চলে যাও ১/১ বিশপ লেফ্রয় রোডে। সেখানে গিয়ে দেখবে একটা ঢ্যাঙা লোক দরজা খুলবে। ওকে বলবে, ঋত্বিক ঘটক ট্যাক্সি করে ফিরেছে, কিন্তু সঙ্গে টাকা নেই। ও টাকাটা দিয়ে দেবে।"

সেই 'ঢ্যাঙা লোকটিই হলেন বাংলা ও বাঙালির গর্ব 'সত্যজিৎ রায়' আর সেই 'মাতাল'টি হলেন আরেক বাঙালি পথিকৃৎ চলচ্চিত্র পরিচালক ঋত্বিক ঘটক বা ঋত্বিক কুমার ঘটক। সত্যজিৎ রায় যাঁকে অগ্রণী মানতেন এবং তাঁর কাজের প্রকৃত সমঝদার ছিলেন।

দেশ বিদেশের বহু বিখ্যাত চলচ্চিত্রনির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্রশৈলীর অনুসারী। তাঁরা বিভিন্নভাবে সত্যজিৎ রায়ের কাজ দ্বারা প্রভাবিত।এই দলে ভারতের অপর্ণা সেন,দীপা মেহতা, ঋতুপর্ণ ঘোষ ও গৌতম ঘোষ। বাংলাদেশের তারেক মাসুদ ও তানভীর মোকাম্মেল। এমনকি ইরাকের আব্বাস কিয়ারোস্তামি এবং ফ্রান্সের জঁ লুক গদারের মত পরিচালক পর্যন্ত রয়েছেন। কেউ কেউ আবার সত্যজিৎ রায়ের ছবি বা ছবির অংশবিশেষের অনুকরণ করেছেন। কখনো কখনো তাঁর নির্মিত কোনো একটি ছবির নির্দিষ্ট একটি চরিত্র অবলম্বনে নতুন কাহিনী তৈরী করে ছবি নির্মান করেছেন।

মনে মনে অনুভব করার বিষয়... একজন মানুষ বড়ো মাপের মানে বড়ো মনেরও অধিকারী। বাঙালির নিজের ভগবান দর্শন হয় স্বামী বিবেকানন্দ, রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জগদীশচন্দ্র বসু, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, মাইকেল মধুসূদন দত্ত ছাড়াও আরো অগণিত প্রতিভাবান বাঙালির অবদানে। সত্যজিৎ রায় তাঁদের সুযোগ্য উত্তরসূরি। বাঙালির মনের ফ্রেমে অমলিন দাঁড়ানো দীর্ঘদেহী বৃহৎ মানুষটিকে বাঙালির আবেগমথিত শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। সত্যজিৎ রায় বাঙালির হৃদয়ের বাঙালি।

তথ্যসূত্র:- গুগল সার্চ (ইন্টারনেট)

১) উইকিপিডিয়া
২) বিকাশপিডিয়া
৩) সত্যজিৎ রায়ের লেখা ছোটগল্প সংকলন ও রচনাবলী এবং সেরা সন্দেশের সম্পাদকীয়
৪) আনন্দবাজার পত্রিকা
৫) কল্পবিশ্ব পত্রিকা


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.