বৃক্ষচ্ছায়া
গঙ্গার পাড় ঘেঁষে শ্মশান, লাগোয়া বাঁধানো ঘাট,
ঘাটের চাতাল নেমেছে শহরমুখী রাস্তাটায় সিধে,
রাস্তা আর ঘাট যেখানে নব্বই ডিগ্রী সমকোণ তৈরী করেছে...
ঠিক সেখানটাতেই এক বিরাটাকার মহীরুহ, বটবৃক্ষ।
সুবৃহৎ তার তলা ছায়া সুশীতল গ্রীষ্মের ভর দুপুরেও,
শীতের বেলায় সে ছায়া কাঁপন ধরায়, গভীরেও।
বটবৃক্ষের তলাটি নিকোনো পোঁছানো চ্যাটালো,
কত লোক সমাগম, শ্মশানযাত্রী থেকে ফেরিওয়ালা,
অথবা ক্লান্ত শ্রান্ত পাটকল শ্রমিক, কিম্বা মাতাল গোরক্ষ।
মুখে মুখে ফেরে বটের স্নিগ্ধ ছায়ার সুনাম,
কে খোঁজ রাখে, বৃক্ষচ্ছায়ার অভিসন্ধির পরিণাম?
অভিসন্ধি, ঘোর দুরভিসন্ধি, চক্রান্তকারী বৃহৎ বৃক্ষেরা!
ছায়া? সে যে কেবলই এক মায়া! সে এক সুগভীর ষড়যন্ত্রে ভরা।
শিশুবৃক্ষ বিনাশক এ ছায়া, বৃক্ষসন্ততিদের ধ্বংসক,
ছায়া সৃষ্টি করে বৃক্ষ জীবজগতের অগোচরে বিনষ্ট করে আপন প্রজন্মরক্ষক।
কী নিষ্ঠুর শোনায় না, এই কথা?
তবুও নির্মম সত্য, বৃক্ষ বৃক্ষচ্ছায়া নির্মাণ করে,
কেবল তার আশেপাশে আর কোনো চারাবৃক্ষ...
যেন কখনো মহীরুহ না হতে পারে।
রৌদ্রবিহীন বৃক্ষচ্ছায়ে নিরক্ত খুন হয়ে যায় আগামীর মহীরুহেরা।
নায়ক বৃক্ষ হয়ে ওঠে মহানায়ক মহীরুহ,
একাধিপত্য বিস্তারিত হয় বৃক্ষের,
সন্তানের মৃত্যুর মূল্যে, চর্মচক্ষে অধরা।।
সুচিন্তিত মতামত দিন