মৌ মধুবন্তী

মৌ মধুবন্তী
জল ঠিকানা

-   তুমি কোথায়?
-   জলে ভাসছি।
-   জল কোন ঠিকানা নয়।
-   সমুদ্রের জলে ভাসছি, জলের ঠিকানা থাকে না। জলকে কেউ চিঠি লেখে না। তুমি কোথায়?
-   আমি ডাঙ্গায়। ডানায় হিলিয়াম গ্যাস ভরেছি। উড়ে যাব নতুন ঠিকানায়।
-   ঠিকানা পেলে আমাকে জানিও।
-   কি হবে জানিয়ে? তুমি জলে ভেসে ভেসে যাবে হয়তো কোন নতুন সমুদ্রে। আমি সমুদ্র ও না, আকাশ ও না। মাঝের স্তরে ভাসমান হারান। বায়বীয় ও  নই।
-   এতো অভিমান করো না। নেমে আসো জলে। হিলিয়াম ছেড়ে দাও। মিশে যাক বাতাসে। আমি আর তুমি মিলে জল ও সমুদ্র ।
-   সে আর হতে পারলাম কই? না সমুদ্র না জল। কিছুই নেই আমার। বৃক্ষ ছিলাম কোন কালে । পাতা ঝরে গেছে। মাটিও শেকড় গ্রহণ করেনি। উদ্ভিদের ভাষা আমার জানা নেই তাই সমূলে উৎপাটিত হলাম।
-   জলে ডুবলেও গভীরে যাওয়া যায়। উপড়ে ফেলার ছেয়ে ভালো। উদ্বাস্তু হবে না। নেমে আসো জলে।
-   কলেও জল আছে পান করি।
-   পারবে বটে, হাতের তালুতে করে, সমুদ্র সেচ দিতে যেওনা। হবে না। যেমন ভালোবাসা ছাড়া ভালোবাসা জমাট বাঁধেনা। আমাদের দিন যদি একসাথে সুর্য ডুবায়, সমুদ্র ও জল দেবে দেহ ভরে।
-   তুমি আমাকে ভালোবাসো?
-   সন্দেহ কেন? সুর্য ওঠে পুব দিকে। এই নিয়ে বিতর্ক আছে নাকি?
-   না নেই। বিতর্ক নেই। তুমি সুর্য হলে রোজ পুব দিকে তাকিয়ে থাকতাম। তুমি জলে ভাসো
-   সে না হয় হলো, জলের ভেতরে সুর্যের আলো যায়, জল গড়ায়, মানুষ পরিবর্তনশীল। ঘুমের ঘোরে...
-   ভুল নাম ধরে ডাকে
-   সেই ভুলের অপরাধ কি মার্জনা করা যায় না? -   দুঃখ জলের মুছে দিয়েছি জলের স্পর্শ দিয়ে।
-   এবার আমাকে স্পর্শ করো।
-   জলে নামো।
-   ডাঙ্গায় আসো।
-   জলে নামো।
-   ডাঙ্গায় আসো।
জল উঠে আসলো  ডাঙ্গায়, ঘরবাড়ি বসতি সব ভেসে গেল জলের তলে।
-তুমি একা এলে আর সবাই স্বস্তি পেতো।
- তোমার ভালোবাসা সবার সাথে ভাগ করে নিলাম।
সেই থেকে জলেই বাস শুরু। ঠিকানা পাওয়া যাবে না। চিঠিও পাঠানো হবে না। খামটাই সমুদ্রে ফেলে দিলাম। ভালোবাসা আরেক ভাগ হলো।
টরন্টো, কানাডা, পৃথিবী

Previous Post Next Post