জয়া চৌধুরী

জয়া চৌধুরী
মাতৃভাষা নিয়ে আজকে অনেকেই নিজের মত করে উদযাপন করেছেন করছেন করবেন। এই সুযোগে বাঙালি হিসাবে বলতে চাই আমরা আজকের দিনে শপথ নিই শুধু ভাষাই নয় ভাষার সঙ্গে জড়িত সংস্কৃতি কেও নতুন করে সম্মান দিতে শুরু করি। আমরা ভুলে গেছি। ভুলে যাচ্ছি আমরা কে আমাদের চাল চলন ভাবনা ব্যবহার কত অন্যরকম আরো অনেক ভাষা ও সংস্কৃতির ভেতরেও। বাঙালি চিরকাল অন্যের ভালোটি চট করে নিয়েছে। ইংরেজ এদেশে এলে বাঙালিরাই সবচেয়ে আগে ভাষাটি শিখে নিয়েছে। কারো থেকে কিছু নিতে গেলে সঙ্গে বুদ্ধির প্রয়োগও করতে হয়। আমাদের স্বীকার করতেই হবে গড়পড়তা বাঙালির বুদ্ধি বাড়লেও মেধা কমছে । কেননা মেধা আসলে মননের সঙ্গে জড়িত। মননের বিপুল ঘাটতি বিপুল বাঙালি সমাজে মেধার অবনমন ঘটাচ্ছে। যে বাঙালি অনুভূতি প্রবণ, কল্পনা প্রবণ ও সুমিষ্ট জাতি বলে সারা দুনিয়ার নাম অর্জন করেছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাতেও ধ্বস নামছে। আজ এক্ষুণি শুরু করতে হবে সেই সরে যাওয়া ভুলে যাওয়া কৃষ্টি। ব্রাজিলের প্রথম যে ভারতীয় মানুষটি সে দেশের গৃহযুদ্ধে লড়াই করেছিলেন তাঁর নাম কর্নেল সুরেশ বিশ্বাস। বাঙালি মানেই অনেক অনেক ঐতিহ্য। বীরত্বের, সৌন্দর্যের, কৃষ্টির, আতিথেয়তার কত কত গুণের উল্লেখ করব। আজকের তরুণকে বিশ্বাস করাতে হবে তাদের পূর্বসূরিদের নিয়ে আনন্দ করবার অনেক জায়গা আছে।

ম্যায় নু কালা চশমা ... বলে গান করাতে যেমন কোন লজ্জা নেই ঠিক তেমনই নিজেদের মধ্যে অনাবশ্যক ইংরিজি না বলে ঝরঝরে সুকুমার বাংলা আলাপেও দারুণ ভাল লাগা আছে। আমরা বাপ মায়েরা খুব আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে নিজেদের সম্মান দিতে শুরু করি, ছেলেমেয়েরাও আমাদেরই অনুসরণ করবে।

অবশ্য বাংলার অতীত নিয়ে পড়ে থাকলেও পিছিয়ে পড়তে হবে। এক শ্রেণীর বাঙালি আবার সেই রোগে ভোগেন। ভবিষ্যৎ তখনই আশাপ্রদ হবে যখন আমরা অতীতের তৈরী ভিত্তিতে দাঁড়িয়ে বর্তমানে ক্লীবতা হটাই।

বিদ্যাসাগরের মত পারফেক্ট বাঙালি কজন আছেন বলুন! কিন্তু তা পড়ার বইতেই থেকে গেছে। ভারী ভারী প্রশংসা আর মালা পরানো ছাড়া আমরা কতটুকু তাঁকে অনুসরণ করি! সাধারণ আমরাই যদি জীবনে নিজেরা বাঙ্গালিত্ব বজায় রাখি ছোটরাও ঠিক তাইই করবে।দেখবেন।

Previous Post Next Post