ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়

দ্বিশত জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি     বিদ্যাসাগরের শেষ জীবন
জীবনের উপান্তে পৌছে ঈশ্বরচন্দ্র প্রবল হতাশায় খেদোক্তি করেছিলেন “... এদেশের উদ্ধার হইতে বহু বিলম্ব আছে । পুরাতন প্রকৃত ও প্রবৃত্তি বিশিষ্ট মানুষের চাষ উঠাইয়া দিয়া সাত পুরু মাটি তুলিয়া ফেলিয়া নতুন মানুষের চাষ করিতে পারিলে তবে এ দেশের ভালো হয়” । এই খেদোক্তি থেকে উনিশ শতকী নবজাগরণকালের সামাজিক দ্বন্দের ইঙ্গিত পাওয়া যায় । উনিশ শতকের বাংলার রেনেসাঁসের তরঙ্গ শীর্ষে ঈশ্বরচন্দ্রের নাম । বস্তুত তাঁর জীবনবৃত্তান্ত বাংলার নবজাগরণেরই ঐতিহাসিক বৃত্তান্ত । ঈশ্বরচন্দ্রই প্রথম তাঁর চিন্তাধারা ও কর্মের মধ্য দিয়ে নবজাগরণের বাস্তব ভিত্তি রচনা করেছিলেন ।

১৮২০ – নগর কলকাতার বয়স তখন সবে ১২৯ বছর । কলকাতার নগরায়ন শুরু হয় ১৭৫৭র পলাশীর যুদ্ধের পর । সেই হিসাবে নগর কলকাতার বয়স তখন মাত্র ৬৩ বছর । ভারতের প্রথম আধুনিক মানুষ রামমোহন রায় স্থায়ীভাবে কলকাতায় বসবাস সুরু করলেন তার ৪২ বছর বয়সে ১৮১৫ থেকে । ঈশ্বরচন্দ্রের জন্ম তার পাঁচ বছর পরে আর ১৮৩০এ যখন রামমোহন তাঁর ১৫ বছরের কর্মময় জীবন শেষ করে ইংলন্ড চলে যান ঈশ্বরচন্দ্র তখন বড়বাজারে রাইমণি দেবীর আশ্রয়ে দশ বছরের বালক । ঈশ্বরচন্দ্রের জন্মের দু বছর আগে শুরু হয়েছে বাংলা সংবাদপত্র ও পুস্তক প্রকাশনা । সমাজের জড়ত্ব তখন পুরো মাত্রায় । একটা চেতনাহীন সমাজে অশিক্ষা, অন্ধবিশ্বাস আর কুসংস্কারের ভিতটা নাড়িয়ে দিয়েছিলেন রামমোহন তাঁর কলকাতার ১৫ বছরের কর্মময় জীবনে । নগর কলকাতার সমাজ তখন বেলাগাম দুর্নীতি, কদর্য বিলাসিতা ও বেলেল্লাপনার প্রতিভূ । রক্ষণশীল হিন্দুদের প্রবল বাধা ও দৈহিক ইর্যাতনকে অগ্রাহ্য করে শিক্ষা বিস্তার ও কূপ্রথার নিরলস প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন রামমোহন । ১৮১৮তে মহান শিক্ষাব্রতী ডেভিড হেয়ার রামমোহনের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত হলহিন্দু কলেজ, প্রতিষ্ঠিত হল ক্যালকাটা স্কুলবুক সোসাইটি ।

ঈশ্বরচন্দ্রের জন্মের এগারো বছর আগে কলকাতার এন্টালি অঞ্চলে এক এংলো ইন্ডিয়ান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিল এক শিশু, যার নাম হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও । ১৭ বছর বয়সে তিনি হিন্দুস্কুলে শিক্ষকতা শুরু করলেন । তাঁর শিক্ষকতায় আলোড়িত হলেন একদল যুবক – নতুন যুগের শিক্ষার্থী । ঈশ্বরচন্দ্র তখন বীরসিঙ্ঘ গ্রামের পাঠশালায় ছয় বছরের শিশু । ডিরোজওর শিক্ষায় নবযযুগের যুবকদল পুরাতন সংস্কার আর ধর্মীয় বিশ্বাস অগ্রাহ্য করে জ্ঞানের আলোতে বুদ্ধির মুক্তি আর নতুন চিন্তার স্বাধীনতায় উদ্ভাসিত । এই কথাগুলি বলে নিলাম, ঈশ্বরচন্দ্রের জন্ম ও শৈশবকালীন কলকাতার সামাজিক পরিপার্শ্বটুকু বুঝে নেবার জন্য ।

আট বছর বয়সে পিতা ঠাকুরদাসের হাত ধরে রাস্তার মাইলফলক গুনতে গুনতে কলকাতা এলেন । কলকাতার বৃহত্তর সামাজিক পরিমন্ডলে তখন দুটি পস্পরবিরোধী ভাবধারা । একদিকে ডিরোজিওর শিক্ষায় শিক্ষিত নব্য তরুণদের পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রতি মোহ আর সেই অন্ধ মোহে দেশীয় সংস্কৃতিকে অগ্রাহ্য করার প্রয়াস অন্যদিকে রক্ষণশীল হিন্দুদের প্রাচীণ কুপ্রথা ও সংস্কারের প্রতি অন্ধ মোহ । এই দুই ভাবধারার টানাপোড়েনে ঈশ্বরচন্দ্রের অবস্থান ছিল এই দুইয়ের মাঝখানে । আধুনিকতা মানেই দেশীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে অস্বীকার এটা ঈশ্বরচন্দ্র মানেন নি । হিন্দু ঐতিহ্যের মধ্যেই তিনি আধুনিকতার সন্ধান করেছিলেন । রবীন্দ্রনাথ তাই বলেছিলেন - “ঈশ্বরচন্দ্র পাশ্চাত্য ও প্রাচ্য বিদ্যার মধ্যে সম্মিলনের সেতুস্বরূপ হয়েছিলেন”।দয়ার সাগর, করুণা সাগর, অপার মাতৃভক্তি শুধুমাত্র এইসব গুণের জন্যই ঈশ্বরচন্দ্র উনিশ শতকের রেনেসাঁর সবচেয়ে আকর্ষণীয় চরিত্র হয়ে ওঠেননি,ঈশ্বরচন্দ্রের মত ঐতিহাসিক চরিত্রের বিকাশ সম্ভব হয়েছিল তার তন্ময় মানবচেতনা,মেরুদন্ডের ঋজুতা ও অজেয় স্বাতন্ত্র বোধের জন্য ।আজও ভাবতে বিস্ময় জাগে, সেই কূয়াচ্ছন্ন যুগে অজেয় পৌরুষ ও স্বাতন্ত্র বোধ কিভাবে অর্জন করেছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র ।সমকালীন ‘ইয়ং বেঙ্গল’পন্থীরাও তাঁদের স্বাতন্ত্রবোধ ও স্বাধীন বিচারবুদ্ধির প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তাঁরা পুরাতনকে বিরোধিতা করার জন্য বিদেশের অনুকরণ করতেন,ফলে কিছু ব্যতিক্রম ভিন্ন তাঁদের সেই স্বাতন্ত্রবোধ সেকালীন সমাজে কোন স্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারেনি ।কিন্তু ঈশ্বরচন্দ্র এই পরিবেশে বড় হয়েও নিজের পোষাকে,আচার আচরণে ব্যক্তিস্বাতন্ত্রবোধের ইউরোপীয় ভাবধারাকে আত্মসসাৎ করেও বাইরের বাঙ্গালিত্বটুকু বর্জন করেননি ।ঈশ্বরচন্দ্রের তীব্র ব্যক্তিস্বাতন্ত্রবোধ,গৃহীত কর্তব্যকর্ম সম্পাদনের দৃঢতা ও আপোষহীনতা তাঁর কর্মময় মহাজীবনের অপরাহ্ণকালে নিঃসঙ্গতা এনে দিয়েছিল ।নৈরাশ্য ও বিষাদগ্রস্ত ঈশ্বরচন্দ্র কলকাতার শিক্ষিত ও নাগরিক সমাজকে পরিত্যাগ করে চলে গেলেন নিভৃত ও সারল্যে ভরা সাঁওতাল পল্লীতে ।জীবনের শেষ কড়িটি বছর কাটালেন কর্মাঢাড়ের সহজ-সরল সাঁওতালদের সঙ্গে ।বিধবাবিবাহ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কলকাতার শিক্ষিত সমাজের অনৈতিক আচরণের ফলে তাঁর বিতৃষ্ণা জন্মেছিল ।তাঁর নৈরাশ্যের কারণ, তখনকার শিক্ষিত সমাজ তাকে বোঝেননি ।তিনি যাদের সহযোগী বলে বিশ্বাস করেছিলেন, তাঁরাও সরে গিয়েছিলেন ।

ঈশ্বরচন্দ্র কোন স্থায়ী কর্মময় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেননি, ইজেও কোন প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠেননি ।তিনি ছিলেন একক কর্মবীর, মানবতন্ময় অখন্ড ব্যক্তিত্বের একক চিন্তাশীল কর্মবীর ।রবীন্দ্রনাথের কথায় “বিদ্যাসাগর এই বঙ্গদেশে একক ছিলেন ।এখানে যেন তাঁহার স্বজাতি-সোদর কেহ ছিল না ।এদেশে তিনি তাঁহার সমযোগ্য সহযোগীর অভাবে আমৃত্যুকাল নির্বাসন ভোগ করিয়াছেন”।সমকালীন হিন্দু সমাজের বিধবাবিবাহ, বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ প্রভৃতি নিষ্ঠুর আচার-বিধির সপক্ষে সেকালীন বুদ্ধিজীবিরা সনাতন ধর্ম রক্ষার নামে নানান কূযুক্তি অবতারনা করেছিলেন, এই ব্যবহার ঈশ্বরচন্দ্রকে বিমূঢ করেছিল । বঙ্কিমচন্দ্র তাঁর বীষবৃক্ষ উপন্যাসে সূর্যমুখীর মুখ দিয়ে বলিয়েছিলেন”যে বিধবার বিবাহের ব্যবস্থা দেয় সে যদি পন্ডিত হয়, তবে মূর্খ কে ? ঈশ্বরচন্দ্র ষাটটির মত বিধবা বিবাহ দিয়েছিলেন যার অধিকাংশ ব্যয় তিই নিজেই বহন করেছিলেন এবগ ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন ।যারা এ কাজে অর্তগ সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তাঁরা কথা রাখেননি,ঈশ্বরচন্দ্রকে একা ফেলে সরে গিয়েছিলেন । রক্ষণশীল সমাজ তারকর্মকান্ডের বিরোধিতা করবেন, ঈশ্বরচন্দ্রের কাছে তা অস্বাভাবিল ছিল না, কিন্তু তিনি আহত হয়েছিলেন সেকালীন নব্য পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত মহলের বিরোধিতায় যা তাঁকে ক্রমেই নিঃসঙ্গ করে দিয়েছিল । নিঃসংত ঈশ্বরচন্দ্র শিক্ষিত নাগরিক সমাজকে পরিত্যাগ করে চলে গিয়েছিলেন সাঁওতাল পল্লীতে ।

শুধু কলকাতার শিক্ষিত সমাজকেই পরিত্যাগ করেননি,নিজের স্ত্রী,সন্তান ও পরিজনদেরও পরিত্যাগ করেছিলেন ।৪৯ বছর বয়সে, ১২৭৫ সনের ২৩শে অগ্রহায়ন ঈশ্বরচন্দ্র তাঁর পিতা,মাতা ও অন্যান্য ঘনিষ্ঠদের কয়েকটি পত্র লিখে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করেন ।ঈশ্বরচন্দ্র তাঁর দৃঢ ও আপোষহীন চরিত্রের সঙ্গে পরিবারের কাউকেই মেলাতে পারেননি ।ভাই ঈশানচন্দ্র কিছুমাত্র বিদ্যাশিক্ষা করেননি,পুত্র নারায়ণচন্দ্র পিতার স্নেহ ও প্রশ্রয়ে অশিক্ষিত ও কুপথে গিয়েছিলেন, পিতার জীবদ্দশাতেই তাঁদের যৌথ পরিবার ভেঙে গিয়েছিল । পুত্র নারায়ণচন্দ্রের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক এমন তিক্ততায় পৌছেছিল যে ঈশ্বরচন্দ্র তাঁর সম্পত্তির বিলিব্যবস্থায় নারায়ণচন্দ্রকে নিজের উত্তরাধিকারী করতে অস্বীকার করেন । এই পত্রগুলি লেখার পর ঈশ্বরচন্দ্র আরো বাইশ বছর বেঁচে ছিলেন, কিন্তু আর কোনদিন নিজ জন্মস্থান বীরসিংহ গ্রামে যাননি । ৫৫ বছর বয়সে নিজ হাতে লিখে অন্তিম ইচ্ছাপত্র বা উইল করেছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র । আত্মীয়, অনাত্মীইয় ৫৩ জনকে মাসিক বৃত্তি দেওয়া, দাতব্য চিকিৎসালয় ও মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়ের জন্য আর্থিক বরাদ্দ করেছিলেন, কিন্তু বিস্ময়করভাবে পুত্র নারায়নচন্দ্রকে তাঁর উত্তরাধিকারী করতে অস্বীকার করেন । এই উইল করার পর আরো ১৬ বছর জীবিত ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র, কিন্তু উইলের একটি শব্দও তিনি বদল করেননি । উইলের ২৫নম্বর অনুচ্ছেদে ঈশ্বরচন্দ্র লিখেছিলেন 'আমার পুত্র বলিয়া পরিচিত শ্রীযুক্ত নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় যারপরনাই যথেচ্ছাচারী ও কুপথগামী। এজন্য, ও অন্য অন্য গুরুতর কারণবশত আমি তাহার সংশ্রব ও সম্পর্ক পরিত্যাগ করিয়াছি। এই হেতু বশত বৃত্তিনির্বন্ধস্থলে তাহার নাম পরিত্যক্ত হইয়াছে এবং এই হেতুবশত তিনি চতুর্বিংশধারা নির্দিষ্ট ঋণ পরিশোধকালে বিদ্যমান থাকিলেও আমার উত্তরাধিকারী বলিয়া পরিগণিত অথবা এই বিনিয়োগ পত্রের কার্যদর্শী নিযুক্ত হইতে পারিবেন না।'

ঈশ্বরচন্দ্রের ৭১ বছরের মহাজীবনের শেষ ৩২ বছরকে বলা হয় তাঁর জীবনের অবরোহন পর্ব। সেদিন থেকেই বিদ্ধ হতে শুরু করেন নৈরাশ্য ও বিষাদে । ১৮৫৮র নভেম্বরে সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষের পদ থেকে পদত্যাগ করা থেকে এর শুরু । এইপর্বের মধ্য বিন্দুতে পৌঁছে এসেছে বন্ধু ও আত্মীয় বিচ্ছেদ,পিতা-মাতার সঙ্গে গভীর মনান্তর ও বিচ্ছেদ,পুত্রকে ত্যাগ এবং কলকাতার শিক্ষিত সমজ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে কর্মাঢারের নিভৃতি পল্লীতে সাঁওতালদের মাঝে যাপন । এই সব কিছুর কার্যকারণ ছিল ঈশ্বরচদ্রের মানবকেন্দ্রীক চিন্তা ও সেই কর্ম সম্পাদনের জন্য দৃঢতা,আপোষহীনতা ও অজেয় পৌরুষ ।

সমকালীন শিক্ষিত সমাজের মানুষের সামাজিক জীবনকে প্রবলভাবে নিয়ন্ত্রিত করতো ধর্ম । কিন্তু ঈশ্বরচন্দ্রের ধর্মের প্রশ্নটি দুর্ভেদ্য রহস্যে আবৃত । তিনি ঈশ্বরে বিশ্বাস করতেন কি না,ধর্মের প্রতি তাঁর আস্থা ছিল কি না, থাকলেও তার স্বরূপ কি ছিল এই সব প্রশ্নের কোন নিঃসংশউ উত্তর কেউই দেননি । ধর্ম বা ঈশ্বরচেতনাকে একান্ত ব্যক্তিগত অনুভুতির স্তরে আবদ্ধ রেখেছিলেন । তাই ঈশ্বরচন্দ্র তাঁর কর্মজীবনে কখনও প্রকাশ্যে বা ঘরোয়া বৈঠকে ধর্ম বিষয়ে আলোচনা করেননি । মানুষের ধর্ম বিশ্বাসের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ সংগ্রাম করে মানুষকে ধর্মের মোহমুক্ত করা যায় না, এই সত্য বুঝেছিলেন । জীবনের শেষদিন পর্যন্ত তার চিন্তাধারা ছিল ইহজগৎ ও মানবকেন্দ্রীক । আমরা নিশ্চিতভাবেই মনে রাখবো যে ঈশ্বচন্দ্রের দীর্ঘ উইলের আর্থিক বিলিব্যবস্থায় একটি পয়সাও কোন ‘দেবসেবা’ বা ‘দেবমন্দির’ বাবদ বরাদ্দ করা হয়নি ।

১৮৯১ সালের জুন মাসে বাদুড়বাগানে বাড়িতে একা ফিরে আসেন ঈশ্বরচন্দ্র প্রবল অসুস্থতা নিয়ে ।চিকিৎসকদের সন্দেহ দুরারোগ্য কর্কট রোগে আক্রান্ত । ১৮৯১ সালের ২৯ জুলাই রাত্রি সোয়া দুটোয় একবার চোখ খুলে দেখেছিলেন পায়ের কাছে বসা পুত্র নারায়নচন্দ্রকে, তারপর সব শেষ । 

‘বিদ্যাসাগর চরিত’ নিবন্ধে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন “এই দুর্বল,ক্ষুদ্র, হৃদয়হীন, কর্মহীন, দাম্ভিক, তার্কিক জাতির প্রতি বিদ্যাসাগরের এক গভীর ধিক্কার ছিল । কারণ তিনি সর্ব বিষয়েই ইহার বিপরীত ছিলেন” । এই ধিক্কার থেকেই শহুরে মধ্যবিত্ত ও ঊচ্চবিত্ত মানুষের সম্পর্কে ঈশ্বরচন্দ্রের মোহভঙ্গ ও নতুন মানুষের চাষ করার অন্তিম উৎকন্ঠা । আর এই জন্যই বিদ্যাসাগরচর্চা আজও প্রাসঙ্গিক । 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.