মৌ দাশগুপ্ত

মৌ দাশগুপ্ত
খাপছাড়া

ভুগোল বইয়ে পেন্সিল দাগিয়ে
আমরা যখন শস্যের ভাগাভাগি শিখতাম
তখন সে কাঁটাতার সীমান্তের গল্প বলত।

পড়ন্ত বিকালে ছায়া দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হলে
আমরা বাড়ি ফেরার পথ খুঁজতাম
তখন সে পরিযায়ী পাখি ডানায় ঘরের ঠিকানা লিখত।

আজ যখন আমাদের নাগরিকত্ব দিশা খুঁজছে
ছাপানো কাগজের টুকরোয়,
দুহাতে মাটি আঁকড়ে সে ডুকরে উঠেছে,
মা হারানোর যন্ত্রণায়।

অনিকেত

শব্দে শব্দে তবু শুধুই বিস্ময়!
অথচ, একদিন কি নিঃশব্দেই না কবিতায় ভাষা পেয়েছিল 
কিশোরীবেলার পলাশরঙা ভালোবাসা,
দাঁড়ি, কমা, সেমিকোলনের সব বিপত্তি পার হয়ে এসে
আচমকাই থমকে গেছিল জিজ্ঞাসা চিহ্নের সামনে,
তারপর জীবনময় সেই ছেঁড়া খোড়া পাতায় লিখে গেছি যত আষাঢ়ে গল্প 
ঝরাপাতার রহস্য অথবা দুর্বোধ্য বিরহের পান্ডুলিপি।

আজ যখন অস্পষ্ট কুয়াশায় হারিয়ে ফেলেছি সেই প্রিয়মুখ,
হাতের শাঁখা পলায় লিখে নিয়েছি অন্য পুরুষের নাম, 
তখন ও মরশুমি বাতাসে টের পাই সেই উষ্ণ পুরুষালী পরশ,
ঋতুমতী হয় অবসর , নিলাজ লহমায় সে উষ্ণতা আগুন ছড়ায়,
পতঙ্গের মত সে আগুনে জ্বলি, জ্বলনসুখে পুড়তে পুড়তে -

আঁচলে কুড়িয়ে নিই শহরময় ছড়িয়ে থাকা দিনযাপনের টুকরোটাকরা শব্দ,
প্রার্থনা একটাই, সে শব্দমালায় আমৃত্যু লেখা থাক প্রিয় ডাকনামটুকু।

Previous Post Next Post