রাণা চ্যাটার্জী

বেঁচে থাকা দায়
বেঁচে থাকাই তো দায়, সুস্থ আত্মমর্যাদায়
চোখে দেখো অপরাধ,প্রতিবাদে প্রাণ যায়।
চুপচাপ ভয়ে দেখি,প্রাণ পাখি যায় নাকি,
সন্ত্রাসে আঁতকে মন ,এই বুঝি নিশানায় ।

মো সাহেবে ভরছে দেশ,পিঠ চাপড়ে আহা বেশ
অকর্মার ঢেঁকি অসহিষ্ণু ভিড়-সবজান্তা,পক্ককেশ।
শব্দের মিছিলে ঘেরাটোপে পাঁচিলে জীবনকে ধিক
নিজ সুখ ভরা,স্বার্থপর ব্যাধি জরা-হায় এআধুনিক

তবুও নাকি এটাই সুখ যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে বুক
যে মরছে জাহান্নামে, বিন্দাস তুমি বাকিরা মরুক!



ট্রেনে কি বাসে নির্ভয়ে চড়বেন কি, পা দেবার উপায় আছে ?গেটের সামনে সর্বদাই থিক থিক ভিড়। কন্ডাক্টর দাদা যতই বাজখাঁই গলায় ভেতরে এগিয়ে যাবার পরামর্শ দিন না কেন,শুনতে বয়েই গেল যাত্রীগনের তাও যদি কানে হেড ফোন গোঁজা নও জোয়ান হয় তো আর কোন কথা নেই। সবাই নয় তবু যে কিছু শতাংশ বিকার হীন অথচ টনটনে জ্ঞান সম্পন্ন যাত্রী থাকেন তাতেই পরিবেশ পরিস্থিতি রসাতলে যায়।

"দাদা দাঁড়াতে অসুবিধা হচ্ছে একটু সাইড দেবেন, ভেতরে যাই"-নরম মোলায়েম গলায় অনুরোধে কাজ হলেও হতে পারে আর একটু জোরালো গলায় বলে দেখুন ,"গেটে যে কি মধু আছে,না দেবে সাইড না দেবে দাঁড়াতে"-ব্যস হাড়ে হাড়ে টের পাবেন সত্যি কথা বলে কি যে অন্যায় করেছেন।

বেশ করেছি মশাই,উঠতে না পারেন পেছনের বাসে যাবেন,ভাবখানা এমন আপনি নিচে গড়িয়ে পড়লেন কি ঝুললেন আমাদের বয়েই গেল!তাতে বাচ্চা হোক আর বয়স্ক বয়স্কা নো কর্ণপাত।

আমরা আমাদের মতো বয়ে চলি অবিরত।
কার কি এসে গেল,বুঝুক তারা হোক ক্ষত!

আহা যদি কোন যুবতী ,পথিমধ্যে বাসে ওঠে ,তবে তো কোন কথাই নেই সোনায় সোহাগা । আরে বাবা বোঝেনই তো হিরো সেজে চুলের স্টাইল বাগিয়ে এমনি কি পা দানিতে অপেক্ষা।হৃদয়ে তুফান ছোটা ছুটি কনুইয়ের গুঁতো গুঁতি। একটু টাচ মি টাচ মি না হলে তো দিন টাই বেকার। যাক ভাগ্যদেবী সুপ্রসন্ন বলতে হবে বলে হাসির ঝিলিক চোখে মুখে ঠিকরে পড়ছে-

কি দারুন হর্ষ 
আহা যদি আসে স্পর্শ।

রাস্তাঘাটে ট্রেনে গা বাঁচিয়ে চলা পাবলিক সংখ্যা বাড়ছে। প্রকাশ্যে অন্যায় হোক,শালীনতা মাত্রা ছাড়াক সব দেখেও ভিজে বেড়াল হয়ে স্পিকটি নট জনতা ।পাবলিক প্লেসে তাই অন্যায় বাড়ছে ক্রমশ,শালীনতা মাত্রা ছাড়াচ্ছে ,আর অন্যায় করে ঘুরে বেড়াচ্ছে মস্তান। রাস্তাঘাটে প্রকাশ্যে মহিলাদের ওপর যৌন হয়রানি,ইভ টিজিং এর রমরমা কেন বাড়ছে বলতে পারেন?চোখ থাকতেও অন্ধ বলে আমরা,ওই যে গানটা আছে ঠেলায় না পড়লে বেড়াল গাছে ওঠে না-ভগবান না করুক কারুর বিপদ হোক তবু নিজে না পস্তালে মানুষ,অন্যের বিপদের গভীরতা বোঝে না। কোথাও ঝগড়া অশান্তি হলে পুলিশ তদন্তে আসে,কেউ সামান্য মুখ না খুলে এড়িয়ে যায় পাছে উটকো ঝামেলা ভেবে আচ্ছা বলুন তো সবাই গা বাঁচালে কি করে দুনিয়া টিকবে।পাপের ভাঁড়ার এমনি তেই পূর্ণ তারওপর তো রয়েছেই হঠাৎ দুর্ঘটনা,প্রাকৃতিক দুর্যোগ।

কিছুদিন আগে মেট্রোতে রোমান্টিকতার নজির তৈরি হলো। এত পাল্টা যুক্তি তর্ক যারা আচরণ করলো তাদের পক্ষে-বিপক্ষে যেন ইতিহাস রচিত হলো। দ্রুত পরিবর্তন কামীদের কথা শুনে বাইরে বের হন ,আপডেট রাখুন মস্তিককে। যা কিছু শ্লীল অশ্লীল ঘটতে পারে প্রকাশ্যে দেখিয়ে দেখিয়ে বেশ করেছি পয়সা দিয়ে উঠেছি,আপনার না পোষালে ,লজ্জা লাগলে ফুটুন। বস্তা পচা রুচিশীল নৈতিকতার মাদুলি ঝুলিয়ে রাখা ছাড়া উপায় নেই। স্মার্ট আধুনিক হন,আপডেটও, বিদেশে এসব হামেশাই হয়। আর যদি কিঞ্চিৎ অস্বস্তি হয় চুপ থাকুন নইলে লোকে বলবে সমাজ সংস্কারক,ন্যায় বাগিস বলে ঠাট্টা তামাশা। বিবেক আপনাকে খোঁচা দেবে,চুপ থাকা শ্রেয় বলে অনেকে পরামর্শ কিন্তু সবাই যদি ফ্যাল ফ্যাল করে কিংবা মুখ ঘুরিয়ে পিঠ বাঁচায় চলবে তো এ সমাজ।ভেঙে পড়বে না তো অচিরেই শিক্ষা নৈতিকতার ভর করে মনীষীদের ছোঁয়ায় তিল তিল করে তৈরি হওয়া এ সমাজ কাঠামো।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.