আলোর সন্ধানে
এতো আলো, তবু এতো অন্ধকার! আর কত অন্ধকার চাই? কার মুখ দেখতে না পেলে বলতে পারবো – সত্যি সত্যি অন্ধ হয়ে গেছি! সে কি তোমারই মুখ? তবেই কি সমগ্র চৈতন্য জুড়ে বেজে উঠবে সেই দাবি স্লোগানের মত – আলো চাই আলো। তবে যে অনেক আলো চারদিকে? দেওয়ালে খুঁটিতে পিলারে গাছেদের সমস্ত শরীরে - যেন মেকি অলংকার। সেদিনই তোমাকে বলেছি, যে অন্ধকার চোখে পড়ে অহরহ, সংসারে গলিতে ফুটপাথে প্লাটফর্মে সাবওয়ে আর ফ্লাইওভারের নিচে, তা কোন আলোর মালায় ঢাকেনা বরং আরও প্রকট হয়। জীবন তো থামতে জানেনা, আমি তাই জানতাম। অথচ তুমিই শিখিয়েছিলে সেদিন – জীবন থেমে যেতে পারে কখনও কখনও। অন্তত থেমে থাকতে চায় অথবা বাধ্য হয়। শুধু সময়ের অমোঘ ইঙ্গিতে তাকে এগুতে হয় অবিরত। তাহলে এতো যদি টান, এত যদি মাখামাখি জীবনে - সময়ে, পথে এত অন্ধকার কেন? আলোর অভাবটুকু মেনে নেওয়া যায়, তাই বলে অবহেলা, মিথ্যাচার? রঙিন প্রতিশ্রুতি কেমন ফ্যাকাসে হয়ে পড়ে থাকে প্রকাশ্য রাস্তায়। লজ্জাহীন। সময় সাক্ষী থাকে অথচ কিছুই বলেনা।
তাহলে তুমি কি বলো? জীবন মূল্যহীন? মৃত্যুরই মতো? মৃত্যুও কি মূল্যহীন? মৃত্যু নিয়ে অতটা ভাবিনা কেউ। তাই কি জীবনও একটা কুড়িয়ে পাওয়া খেলনার সমান? সময়ের শুধু দাবি আছে তার কাছে, আর কিছু নেই? আর আমাদের? কবে আর সময়কে বাধ্য করে বলতে পারবো – ঘাড় তোলো, চলো পথ ভাঙি, রুখে দিই বঞ্চনার বেনোজল। আমার তো না হয় তুমি আছো, অতল দীঘির মতো। ডুব দিয়ে আমি না হয় কাটিয়ে দিতে পারি বাকিটা সময় শরীর আর হৃদয় মেশানো প্রিয় অন্ধকারে। কিন্তু তার আগে সবাইকে ডেকে নিয়ে একবার বাইরে যাই চলো। কেউ কিছু কম নয় মেধায় ও মননে। দুইয়ের সঙ্গত হলে অনায়াসে ছিঁড়ে দেওয়া যাবে দারিদ্রসীমার দড়ি, যাওয়া যাবে অনেক গভীরে। মুখের হাসিই শুধু অনির্বাণ আলো হতে পারে। সেকথাটা বলে আসি চলো।
tarasankar.b@gmail.com
সুচিন্তিত মতামত দিন