তাপসকিরণ রায়



⤺দেশের মাটি 

আমার পূর্ব পুরুষদের ছোঁয়া এই ধূলি কণার অস্তিত্বে আমরা হেঁটে চলেছি….
অনন্ত মৃত্যুর পথ ধরে বারবার ফিরে আসে জন্ম,
সেই ঘ্রাণ সেই জলজ হাওয়ায় প্রকৃতির সাধ
যেমনটা প্রতিমার দেখো তিল তিল গড়ে ওঠা
শিশুর অঙ্কুর থেকে এক আস্ত আমি বেরিয়ে আসছি !
বালক বেলা ছাড়িয়ে ঝাঁকরে ওঠে উদ্যত যৌবন।
হঠাৎ দেখি তুমি ফুল হয়ে গেলে--কালিদাসের সৃষ্টিতে এক মেঘদূত দেখেছি, 
দেখেছি প্রিয়ার অনন্ত বিরহ ব্যথা।

আমি পূর্ণতা দেখেছি--অনন্ত বিরহ ভেঙে ভেঙে ধান-শীষের পুরুষ্টতা দেখেছি, 
মায়ের আগলে রাখা শাবকের তৃষ্ণা থেকে অমৃত ঝরে পড়তে দেখেছি,
দেখেছি সৃষ্টিস্থিতিপ্রলয়ের শাশ্বত রূপের মাঝে আমাদের চালচিত্রছবি।
দেশ মৃত্তিকার মাঝ থেকে মাকে উঠে আসতে দেখি,
সেই মায়ের মাঝ থেকে সন্তানের অস্তিত্ব টের পাই।
শুনেছি উজানি গান, পাখি ঠোঁটে বওয়া বীজের পাকুড়ে
লেগে থাকে জটাধারী সহস্র বছরের বৃত্তান্ত।
নদীর বুকে সবুজ বসতি গড়ে, আবার নদীর তোলপাড় জীবনের পার ভাঙতে দেখি।
ভাঙা গড়ার খেলায় তবু সৃষ্টিকে ধরে রাখে দেশমাটি, যেখানে আমি বারবার জন্মেছি !

বৃহৎ তোমাতে আকাশ দেখেছি।
মাটির সাক্ষী থাকে আকাশ, মৃত্তিকা তুমি জন্মজন্মান্তর ভার, তোমার মধ্যে এই
সৃষ্টিস্থিতির বাঁধন আঁটা, তার একান্ত স্পর্শ তুমি যা ধারণ করেছো
এক বিস্তৃত পাখার নিচে দেশমাতৃকার রূপ নিয়ে সৃষ্ট তুমি,
মা আমার, স্বদেশ ভূমি তুমি, আমার দেশের মাটি।


তাপসকিরণ রায়



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.