⤺স্বাধীনতা
নিশুতি রাতের স্তব্ধতা ভেদ করে
গহীন আঁধারের বুক চিরে এগিয়ে চলেছে,
জননী আমার।
এলোকেশে চুল, পরনে ভিখারীর বেশ,
মুখে তার বিষণ্ণতার ছাপ, নয়ন হতে
বারিধারা ঝরছে অবিরত।
এগিয়ে চলেছে সে –
আলোকবর্ষ থেকে আলোকবর্ষ দূরে
কৃষ্ণগহ্বরের দিকে,
যেখানে নির্বাসিত আছে আমার বিপ্লবী
ভাইদের রক্তে অর্জিত স্বাধীনতা।
তাই যদি হয়, তবে
কি দোষ ছিল রাজতন্ত্রের?
কি দোষ ছিল ইংরেজদের?
তবে, কি দোষ ছিল প্রাক্তনের?
কেন দেওয়া হয়েছিল এত প্রাণ বলিদান?
কেন আমার ধর্ষিতা বোনের রক্তাক্ত শাড়ি
উড়েছিল আকাশে পতাকা সমান !
কেন তবে সন্তানহারা জননী হয়েছিল পাষাণ !
এ দেশ দেখার আশায় কী
তেত্রিশকোটি গেয়েছিল সাম্যের গান !
তোমাদের কাছে সে'সব আজ অতীত হয়েছে
রাজতন্ত্র, ইংরেজ, ইঙ্গ মহীশূর থেকে বঙ্গভঙ্গ
সব-ই আজ স্থান পেয়েছে ইতিহাসে।
ইতিহাসের প্রতিটি পাতায় স্বর্ণাক্ষরে
খচিত হয়েছে তাদের নাম।
অতি ধীর ক্লান্ত পায়ে সত্তর এসেছে আজ!
স্বাধীনতার জীবনে –
আরও কত সত্তর আসবে
কত সত্তর হবে পার !
তোমরাও একদিন অতীত হবে
ইতিহাসে স্থান পাবে,
আসবে কত উত্তরাধিকার ;
কালের নিয়মানুসারে ....
স্বাধীনতা হয়তো তখনও নির্বাসিত থেকে যাবে
আলোকবর্ষ থেকে আলোকবর্ষ দূরে –
কৃষ্ণগহ্বরে !
![]() |
পিন্টু ঘোষ |
সুচিন্তিত মতামত দিন