কোয়েলী ঘোষ

কোয়েলী ঘোষ
মেঘদূত  আলোকে 

ওগো মেঘ , যাও উড়ে যাও সেই অলকাপুরী
নিয়ে যাও আমার তৃষিত বিরহী প্রাণের বার্তা ,
আমি এক অভিশপ্ত যক্ষ ,আছি একা , বড় একা ।

এই নাও কুরচিফুলের অর্ঘ্য , এই মৃদুমন্দ বাতাসে ,
ভেসে যাও রামগিরি পর্বত থেকে সুদূরে ---
সাথে সাথে তোমায়  ঘিরে যাবে বলাকার দল ,
সূর্যের সাতটি রঙের বিচ্ছুরণে রামধনু আঁকা গায় ।

ওগো মেঘ , পেরিয়ে যেও আম্রুকুট পর্বত , নিও উষ্ণতা ,
বারিধারা হয়ে পড়েছিলে ঝরেছিলে যে অরণ্যের দাবদাহে ,
সেই অরণ্যানী দেবে ছায়া , আশ্রয় । ঢেলো জল তৃষিত প্রাণে ।

বিন্ধ্যপর্বতের নিচে বয়ে চলেছে রেবা নদী কুলকুল ,
বরিষণে রিক্ত হয়ে জলপানে পূর্ণ করবে সে ।
যেতে যেতে পথে কদম্ব ফুল সৌরভে দেবে ভরিয়ে ,
নদীর তীরে তীরে ভুঁইচাপা ফুল , ছুটে যাবে হরিণ
কেকাধ্বনিতে পেখম তুলে স্বাগত জানাবে ময়ূরদল ।

কত বন ,উপবন পেরিয়ে বিদিশা রাজ্যে করবে প্রবেশ ,
বেত্রবতীর স্বাদু জলপানে হবে তৃপ্ত ।তীরে যূথিকার ঝাড় ,
নদীর ভ্রূভঙ্গি , বধূদের ভ্রুলতাবিলাস দেখতে দেখতে
উজ্জয়িনীর অট্টালিকা ক্রোড়ে নিও বিশ্রাম ।

,ভেসে যেও মেঘ  তুষার হিমালয়ের পথে
কৈলাসের মানস সরোবরের বুকে , পার্শ্বে অলকাপুরী ,
কুলকুল নিরবধি বয়ে চলে ভাগীরথী ।

সেখানে আমার প্রিয়া আছে বসে , করতলে ঢেকে মুখ্ ,
রুক্ষ কেশ ,মলিনবসনা , সিক্ত দুটি আঁখি ,
অবহেলায় পড়ে তার বীণা ,গায়নি গান ।

ওগো মেঘ , দূত হয়ে যাও তার কাছে
জানিও - কুশলে আছি আমি ,সন্তপ্ত প্রাণ ,
আঁকি প্রিয়ার মুখ ,মুছে যায় নয়নের জলে --
জাগরণে ,স্বপ্নে হয় প্রিয়ার সাথে মিলন ।

ওগো মেঘ , আর চার মাস প্রতীক্ষার শেষে
 ফিরব আমি তার কাছে  , বোলো -রেখ বিশ্বাস ।
আসার সময় একটি  স্মৃতিচিহ্ন নিয়ে এসো তার ।

ও মেঘ দূত  ,দাও জল এ  চাতক প্রাণে
তুমি পূর্ণ হয়ে ফেরো দেশ থেকে দেশান্তরে ,
তোমার বিদ্যুত প্রিয়ার সাথে যেন না হয় বিচ্ছেদ ।




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.