গ-বাবুর বাড়ি থেকে প্রায়ই মুরগি, গাছের ফল, সব্জি খোওয়া যায়। গ-বাবু পরিষ্কার দেখেছেন ল-বাবুর ছেলেদের কীর্তি। কিন্তু ছেলে ছোকরার কাজ ভেবে উপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই। এত সামান্য ব্যাপারে নালিশ করা যায় না, শালিসিও ‘এ্যাই পপ’ বলে ক্ষমা করার পক্ষে। চুরিটার ক্রমশ পদন্নোতি হতে থাকল – ফল-পাকুড় মুরগি থেকে জলের পাম্প, সাইকেল, গরু ইত্যাদি। পুলিস এল দেখল, একটু বুঝিয়ে সুঝিয়ে কিছু টাকা খেয়ে চলে গেল।
“প্রতিবেশীর সঙ্গে সদ্ভাব রেখে চলুন গ-বাবু। পাশাপাশি থেকে এত কমপ্লেন করলে চলে? একটু অ্যাডজাস্ট করুন। কোথায় না কোথায় আপনার গরু পালিয়েছে, ল-বাবুদের বিরুদ্ধে ফলস্ অ্যালিগেশন আনছেন।”
গ-বাবুর মেয়েটাকে স্কুল যাওয়ার পথে ল-বাবুর দুই ছেলে আরও কিছু শাকরেদ জুটিয়ে কখনও প্রেমের কখনও বিয়ের প্রস্তাব দেয়। বাপরে! যা সব অবতার! চুরি ছাড়াও আরও কতরকম গুণপনা আছে কে জানে? গ-বাবুর মেয়ে শুনেও না শোনার ভান করে নিজের পথে চুপচাপ চলে যায়।
পুলিসে খবর দিলে চোখ মটকে হাসে। বলে, “ছেলে ছোকরারা অমন করবেই। তুমি প্রোভোক করো কেন?”
সেদিন ওরা পথ আটকাল। হাত মুচড়ে কামড়ে খামচে একটু আদর টাদর করার চেষ্টা করতেই ঠ্যাঁটা মেয়েটা নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে ছটফট শুরু করল। সেই সঙ্গে চিৎকার।
কী করা যায়? বাধ্য হয়ে বেচারা ছেলে ছোকরার দল একটা ঝোপের ধারে নিয়ে গিয়ে দল বেধে খানিক দুষ্টুমির পর জীববিজ্ঞান ব্যবহারিকের পরীক্ষা চালাতে শুরু করল। তারপর এক বোতল অ্যাসিড দিয়ে এক্সপেরিমেন্ট শেষষস্স্!
বেহায়া মেয়েটার উলঙ্গ ছেঁড়া-খোঁড়া পোড়া দেহ নিয়ে এবার গ-বাবুর গোবেচারা আত্মীয় পরিজনদের কী নাকি কান্না আর তড়পানি! পুলিস আত্মহত্যার ডায়রি লিখতে চায়। মেয়েটার স্বভাব মন্দ, ল-বাবুর ভালো ছেলে ও বন্ধুদের ইশারা করে পাত্তা না পেয়ে বদনামের ভয়ে ...ইত্যাদি ইত্যাদি।
ল-বাবু পুলিসের সামনেই গ-বাবুর গালে দুটো থাপ্পড় কষিয়ে বলল, “খবরদার! আমাগো পোলা তো মামুর বাড়ি। সে কী কইরা অপকর্ম করব?” বলে খ্যা খ্যা করে হাসতে লাগল।
গ-বাবু তার টুঁটি টিপে একটা চড় বাগাতেই পুলিস সেই হাতে হাতকড়া পরিয়ে বলল, “আপনি বড় অসহিষ্ণু। এলাকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার অপরাধে আপনাকে গ্রেপ্তার করা হল।”
sriparna405@gmail.com
সুচিন্তিত মতামত দিন