গার্গী মালিক

স্খলন
ক নামকরা অভিনেতা 'অভি' উপসর্গটি ত্যাগ করে শ্বেতশুভ্র পাজামা-পাঞ্জাবি -জহরকোটে সজ্জিত হয়ে 'নেতা ' বনেছেন। একটি জনসভায় তাঁর বক্তব্য রাখার প্রথমদিন। কী কী বক্তব্য রাখবেন এ বিষয়ে তাকে কারও সাহায্য নিতে হয়নি! কারণ , বহুদিন যাবত তিনি এই ধরণের পাঠ করে এসেছেন -মানুষের মনজয় করা কথাগুলি তাঁর ঠোঁটস্থ , নিজেই রাত জেগে সাজিয়ে ফেললেন- কোনটার পর কোনটা বলবেন !

পরদিন রাত জাগার ফসল মঞ্চস্থ করার পালা ; জনসমুদ্রে নেমেছে জোয়ার! রাজপুত্তুরের মতো রূপখানি এতদিন মানুষ পর্দার আড়াল থেকে দেখেছে - এবার স্বচক্ষে - তাও বিনি পয়সায়! ভাবা যায়! মঞ্চে পদার্পনেই শুরু হল হাততালি ... বক্তৃতা চলল ... সেই সঙ্গে জনতাও মিলিয়ে নিতে থাকল কোনটা কোন ছবির ডায়ালগ! 

অবশেষে জনগণের মন্তব্য - " পর্দার আড়ালেই হোক বা বাইরে , অভিনয়টা গুরু ফাটিয়ে করো! কী আবেগ! চোখের জল ধরে রাখা গেলনা মাইরি!" 

দিন যায় ... ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষের সাথে দূরত্ব কমে, মানুষও তার প্রতি আস্থা স্থাপন করে। নিজেদের দুঃখ দুর্দশার কথা ব্যক্ত করে ...আবেগে ভাসে চোখের জলে ...দেবতা বলে মানে! মঞ্চের মানুষও পদার্পণ করেন ধুলো মাটি কাদার পৃথিবীতে এবং রোদ বৃষ্টি মাথায় করে প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে হাত নেড়ে চলে যান শীততাপ নিয়ন্ত্রিত যানে। 

বাড়ি ফিরে বিশ্রামের সাথে চিন্তা ভাবনার ইতি টানেন সিগারেটের এক এক টানে ... ধোঁয়ার কুন্ডলী উড়িয়ে দিনশেষে তাঁর মন্তব্য - 

" নিজের স্বার্থ সিদ্ধিতে অভিনয়টা মানুষ আজকাল ভালোই পারে! কী আবেগ! অভিনেতা হয়েও চোখের জল ধরে রাখা দায়! "


gargimalik1984@gmail.com

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সুচিন্তিত মতামত দিন

নবীনতর পূর্বতন