রোজকার মতো আজও ঢেঁকিশাক নিয়ে এসেছে রতন। সকালের বাবুদের এই বাজারে, এর চাহিদা আছে তাই রতন প্রতিদিন ভোর বেলা শাক তুলে এনে বাজারে বিক্রি করে।কতই বয়স হবে সবে সাত পেরিয়ে আটে পড়েছে।বাবা নেই ,মা লোকের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালায়।রতন শাক বিক্রি করে সকালে। দুপুরের বাড়ির কাছে এক সরকারি প্রাথমিক স্কুলে পড়ে।
সকাল বেলা আর পড়া করা হয় না রতনের। স্কুলে একদিন বাংলা স্যারের পড়া না পাড়ার জন্য কী মারই না খেয়েছিল রতন। সত্যি কথাটা সেদিন মুখ ফুটে বলতে পারেনি।বিকেলের আলোতে যেটুকু পড়া।
আজ রতন শাক নিয়ে বাজারের গেটে বসেছে ।বাংলা স্যার রতন কে দেখে এগিয়ে এলো বললো কিরে তুই এখানে ? শাক বিক্রি করিস ?
রতন ভয়ের ভয়ে বললো হ্যাঁ স্যার। আমার খাতা কলম যে আমাকেই কিনতে হয়। মা তো অতো খরচ করতে পারে না।
স্যার চলে যায়।
ক্লাসে ঢুকেই রতন কে ডেকে নেন বাংলা স্যার। রতন সন্তর্পণে স্যারের সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়ায়। রতন কে কাছে ডেকে নেয় বলে রতন আমি সেদিন তোকে খুব মেরেছিলাম নারে ? বুঝতে পারিনি তুই এতো কষ্ট করিস ! তোকে আর বকবো না। আজ থেকে তোর লেখাপড়ার খরচ আমি দেব।
রতনের চোখ ছলছল করে উঠলো কী এক অজানা আনন্দে !
বাংলা স্যার তাঁর শৈশব দেখতে পেলেন রতনের ভিতর !
subhashis.dinhata@gmail.com
সুচিন্তিত মতামত দিন