।। দশম পর্ব ।।
'ভোর থেকে বসে আছি, গড়িয়ে গড়িয়ে চলে কাল,
আমি আর আমি নেই, ঝাপসা হয়ে আসে দিগবিদিক---
আকাশপ্রান্তরে হয়তো চাঁদ উঠে আসবে একফালি
থালায় সাজানো কিছু স্থলপদ্ম কিছু-বা শেফালি
শুকনো মুখে আজও কোনো প্রতীক্ষায় থেকে যাবে ঠিক।
আমিও বেপথু হাতে আজও তবু ধরে আছি হাল।'
--- শঙ্খ ঘোষ
'একটা অর্বাচীন গদ্য লিখেছিলাম। 'ভালোবাসা, ভালো হয়ে ওঠো'। তোমার সঙ্গে হয়ে চলা, বয়ে চলা, বলা ও না-বলা শব্দের ঝাঁক। কিছু স্বগতকথন। কিছু ধারাবাহিক অন্ধকারের সলিলোকি। সে-লেখার প্রতি কোনো মায়া দেখিনি তোমার! ভালোলাগা দেখিনি। কিছু উচ্চারিত সমস্যা দেখেছি, আর কিছু অনুচ্চারিত ক্ষোভ: 'তুমি যে এসব লিখে ওদের কত সুবিধে করে দিচ্ছ সোনা...'
সত্যিই? অনেক সুবিধে করে দিচ্ছি, তাই না? যেন লেখাটার আগে বিস্তর অসুবিধের মধ্যে ছিল ওরা! তবুও 'কী জানি, হয়তো তাই' ভেবে সে-লেখাকে অবরুদ্ধ রাখা গেল। কী দরকার তেমন লেখা ছড়িয়ে পড়ার, যে-লেখায় নাকি আমাদের সমস্যা হবে! আমাদের? 'আমাদের' ভাবাটাই যে ভুল হয়েছিল, বুঝিনি!
একদিন তাই তুমি উচ্চকন্ঠ, 'পাঠাও না তুমি! আমার তো কোনো সমস্যা নেই, সমস্যাটা হবে তোমার!'
শুধুই আমার? আমাদের নয়? এমন তো কথা ছিল না, বন্যা! সেদিনই ভেবে রেখেছিলাম, এর উপযুক্ত উত্তর দেবো একদিন। হ্যাঁ, একদিন সময়মতো তোমার কাছে পৌঁছে যাবে লেখাটা। আর ছড়িয়ে পড়বে, যতদূর ছড়িয়ে যাওয়া সম্ভব একটা ফালতু লেখার পক্ষে। হারানোর তো কিছু নেই আর!
একটা মজার ঘটনা বলি তোমায়। সেদিন আধশোয়া হয়ে কী যেন পড়ছিলাম একটা। যেমন ভিডিও কল করে তুমি দেখতে পাও, আর কী! পাশেই শুয়ে ছিল ফোনটা। বেজে উঠলো কোনো ভূমিকা না-করেই। তোমার? নাঃ, তোমার কল বলতে তো ইদানীং কিছু মূক-বধির ছায়াছবি! নম্বরটাও অচেনা। নাইন ফাইভ ফোর জিরো...
ধরতেই একটা রিনরিনে গলা, 'আপ সেলিম বোল রহে হো?'
একটা সময় পর্যন্ত আমার ধারণা ছিল, ক্রস-কানেকশন শুধু ল্যান্ডফোনে হয়! ধারণাটা বহুদিন আর নেই বলে অবাক হই না এখন। ছোট্টো উত্তরে 'নেহি, রং নাম্বার' বলে রেখেই দিতে যাচ্ছিলাম ফোনটা, তখনই রিনরিনে কন্ঠ বললো, 'লেকিন নাম্বার তো সহি লাগায়ি থি ম্যায়নে!'
তো আমি কী করবো রে বাবা!'বোলা না, রং নাম্বার হো গয়া!'
কিন্তু রিনরিনে কন্ঠ সে-কথা বিশ্বাস করতে চাইলে তো! 'আপ ঝুট বোল রহে হো না? সেলিম হি হো না আপ?' তখন কিঞ্চিৎ হাসিরও ঝলক যেন তার উচ্চারণে! যেন ভারি মজা পেয়েছে কল্পিত এই লুকোচুরি খেলায়! ভিতরের ফিচেল-আমিটা জেগে উঠতে চাইলো একবার। মনে হলো মজা করে বলি, 'কেন, আপনি কি আনারকলি?'
কিন্তু বললাম না। পরিবর্তে বললাম, 'নেহি বোলা না আপকো!'
'আচ্ছা, কাঁহাসে বোল রহে হো, ইতনা তো বাতা দিজিয়ে!' রিনরিন তখনও নাছোড়বান্দা।
'কলকাতা সে...' ইচ্ছে করেই 'কলকাত্তা' বা 'ক্যালকাটা' আমি কখনও বলি না।
'কলকাত্তে সে! হায় রাব্বা, দিল্লি কা নাম্বার লাগায়ি, ওয়াহাঁ ক্যায়সে পৌঁছ গ্যয়ি ম্যায়! দিল্লি সে ওয়াহাঁকে নাম্বারমে কল করনেকে লিয়ে পহেলে তো জিরো লাগানা পড়তা হ্যায় না? ইস নাম্বারকে পহেলে তো কোই জিরো হ্যায়হি নেহি!'
'হো জাতা হ্যায় কভি-কভি। আপ ইয়ে কল কাটকে ফিরসে ডায়াল কিজিয়ে।'
'নেহি, মুঝে পতা হ্যায় আপ মজাক কর রহে হো! আপ সেলিম হি হো। আরে, আলিয়া বোল রহি হুঁ ম্যায়...' রিনরিন এবার কিঞ্চিৎ অধৈর্য হয়ে উঠছে।
আর 'আলিয়া' শোনামাত্রই আমি ফিরে যাচ্ছি, নেড়েচেড়ে দেখছি কয়েকটা সাম্প্রতিক অতীত! সেই যে 'ডিয়ার জিন্দেগি'। রুপোলি পর্দায় জীবনকে কী আকুলতার ডাক! 'অ্যায় জিন্দেগি, গলে লাগা লে...', তার মানে তো 'সদমা'ও! গুলজার সাব কী অসাধারণ লিখেছিলেন, না!
আবার সেই একই টানে আলিয়া ভাট থেকে আমি পৌঁছে যাচ্ছি আলিয়ার খাবারের টেবিলে । রেস্তোরাঁর নাম আলিয়া। টেবিলে মাটন বিরিয়ানির প্লেটে হালকা ধোঁয়া। কী খিদে পেয়েছিল আমাদের, বলো! অথচ বুঝতে পারছি, ব্যথার চোটে তখন তোমার শক্ত খাবার চিবিয়ে খাওয়ার উপায় নেই! বিরিয়ানির মাংসকে তাই মাছের কাঁটা বাছার মতো করে বেছে নরম অংশগুলো তোমার জন্য খুঁজে দিতে হয়েছিল আমায়।
কলকাতার বিরিয়ানির একটা অন্য ব্যাপার আছে, জানো বন্যা? এমনিতে তো তুমি জানো, বিরিয়ানি নিয়ে লিখতে বললে এখনই চারপাতা আমি লিখে ফেলতে পারি অনায়াস। ঠিক জিন্স নিয়ে লিখতে বললে যেমন অনর্গল হতে পারি। জীবনের প্রিয় জিনিসগুলোকে এভাবেই গভীর থেকে চিনে রাখি বরাবর। কিন্তু কলকাতার বিরিয়ানি নিয়ে যতই বলি, একটু যেন কম পড়ে যায়! এ-শহরের নানা দোকানের নানা স্বাদ ও গন্ধের বিরিয়ানি। তাদের ভ্যারাইটি। রং ও রন্ধনশৈলীর বিশেষত্ব। মনে হয়, আরও কত কী বলা বাকি থেকে গেল! অথচ দ্যাখো, কলকাতার বিরিয়ানির নিজস্ব কোনো ঘরানা নেই। এটা লখনৌ, হায়দরাবাদ, লাহোর---কোনোটাই না। আবার সবক'টাই! মিশ্রণেই বোধহয় গড়ে উঠেছে তার নিজস্বতা। তাই খোদ বিরিয়ানির দেশ থেকে এসেও পাকিস্তানের ক্রিকেটার কলকাতার বিরিয়ানি খেয়ে মুগ্ধ-উচ্চারণ করছেন, এরকম যে কতবার দেখেছে এ-শহর!
আলিয়ার কলটা তখন কেটে ফোন রেখেছিলাম, নাকি না-কেটেই, মনে নেই! তবে পরে আরও বেশ কয়েকদিন অনেক-অনেকবার ওই একই নাম্বার, নাইন ফাইভ ফোর জিরো...থেকে বেজে উঠেছে ফোন। কিন্তু এত-এতবার ক্রস-কানেকশন? একটু অবিশ্বাস্য না? ফোনটাকে বাজতে দিয়েছি। বেজেই যেতে দিয়েছি। আর মনে-মনে উইশ করেছি, তুমি তোমার সেলিমকে ঠিকঠাক খুঁজে নিয়ো, আলিয়া!
আসলে আমি এরকমই, বন্যা। চাইলে রোজ নতুন আকাশে উড়তে পারতাম। কিন্তু প্রকৃত অর্থেই মুক্ত বিহঙ্গ হয়েও নিজের চারদিকে অভেদ্য ঘেরাটোপ রচনা করেছি, তোমার প্রথমদিন থেকে। কিন্তু তুমি কী করে দরজা খুলে দিলে! আত্মসমর্পণ করলে কী করে! আপস? সমঝোতা? তাহলে আমার মতো বোকা মানুষের আশ্রয় কোথায়! কথা রাখার সব কথা, আদরের ডাকনাম 'বাবিন', আর চিরকালীন 'সিপিয়া রঙের দাওয়া' কি এভাবেই মিথ্যে করে দিতে হয়!
সেদিন প্রশ্ন করেছিলে না, 'এরপরেও তোমার আমাকে আদর করতে ইচ্ছে হয়!'
কী বলেছিলাম? 'এককথায় হ্যাঁ বা না, কোনোটাই বলা মুশকিল!'
একটু ভুল বলেছিলাম। রাগ হয় নিজের উপর। তীব্র ক্ষোভ হয়। ভালোবাসা আমাকে এতটাই আত্মমর্যাদাহীন করে দিতে পারলো!
আজকাল তোমার ইতিউতি বিস্ফোরণের ছাপ দেখছি দেওয়ালের এখানে-সেখানে। দেখতে চাইলে, আমি কিন্তু সব দেখতে পাই! এখন সময়টা নাকি কী দিয়েছি আর কী পেয়েছির হিসেবের খাতা খুলে মিলিয়ে নিতে সদাব্যস্ত! আমার হাসি পায়। প্রবল হাসি! সময়টা এরকম ঠিক কবে ছিল না বলো তো! এসব উচ্চারণের আগে বরং মানুষের ইতিহাসটা একটু পড়ে দেখে নিতে পারতে! এই যে মহান সাজার ভান, 'কতটুকু আর দিতে পেরেছি'-জাতীয় কুম্ভীরাশ্রু, এসব আসলে অক্ষরেই রচিত করা যায়, বাস্তবের জমিতে নয়। যাঁরা এমন এক-একটি কপট-যুধিষ্ঠির অথবা কপট-রামচন্দ্র সেজে বসে আছেন, তাঁরা প্রণম্য তাঁদের অভিনয়ের জন্য। জীবন যদি তাঁদের কাছ থেকে সবচেয়ে জরুরি ও প্রিয় কিছু কেড়ে নেয় একটি অদৃশ্য থাপ্পড়ে, নিশ্চিত বলে দিয়ে যাচ্ছি, এইসব 'মহান' কলমের কালিও মুহূর্তেই শুকোবে!
আসলে এসব ততক্ষণ বলা যায়, যতক্ষণ তুমি কিছু হারাওনি। অথবা হারালেও, যতক্ষণ তা তোমার বোধগম্য না-হয়! তুমিও তাই বলে চলেছো। দেওয়ালে লাগাতে পারছো,'কী পাইনি সেটা দেখতে গেলেই দুঃখ। কী দিইনি সেটা দেখতে হয়, সেইখানেই সুখ।' প্রত্যেক মানুষেরই নিজস্ব ডিফেন্স মেকানিজম থাকতে পারে। তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই! এই যে কিছু মহান অক্ষর, এখন এগুলোই তোমার আত্মরক্ষার অস্ত্র। কার কাছ থেকে আত্মরক্ষা করছো, বন্যা? নিজের থেকেই, তাই না! এই অন্যায়কে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এছাড়া আর উপায় কী ছিল তোমার! আসলে একজন মানুষের যদি কিছু হারায়, সেটা কতটা জরুরি ছিল তার কাছে, এর উপরেই নির্ভর করে সবটা। তুমি যা হারালে, তোমার কাছে ততটা জরুরি নয় বলেই তুমি তিক্ত কটূক্তি ছুঁড়ে দিতে পারো, 'হ্যাঁ, এভাবেই শোক মানাও!' আর ওই একই জিনিস হারিয়ে, সেটা আমার কাছে ভয়ানক জরুরি বলেই আমি সেই কটূক্তির যোগ্য প্রত্যুত্তর দেওয়ার বদলে আরও ডুবতে থাকি। হ্যাঁ, তোমার ভাষায় 'মানাতে' থাকি শোক! আর ব্যথিত বিস্ময়ে তোমার ক্রোধকে সাধুবাদ জানিয়ে বলি, মারহাবা!
অতএব আমার মতো মানুষ, সর্বস্ব দেওয়ার পরে যার প্রাপ্তির ঘর এভাবে শূন্য হয়ে যায়, সে তো একদিন হিসেবের খাতা খুলে বসবেই! দেওয়ার সময়ে সে তো কার্পণ্য করেনি কোনো! এখন বিপদাপন্ন হয়ে সে যখন নিজের সঞ্চয়ের দিকে হাত বাড়ালো, তখন দেখলো সেখানে শুধু একটা বিগ জিরো! এবার হিসেব মেলাতে বসলে, সেটা তার অপরাধ হয়ে গেল বুঝি! উচিত কথাগুলো উচ্চারণ করলেই তাহলে মানুষ হিসেবে নেমে যেতে হবে খুব নিচে! তখন তুমি নিজের দেওয়ালে ঝোলাতে পারবে আরও কিছু মহিমান্বিত বাণী: 'পাওয়াটা তোমার নিজের হাতের মধ্যে নয়, দেওয়াটা নিজের ক্ষমতার মধ্যে।' এবং ঝোলাতে গিয়ে দিব্যি ভুলে যাবে, আমার সঙ্গে যা-করতে পারলে তুমি, তাও কিন্তু তোমার নিজেকে নিরাপদ ও সুবিধেজনক অবস্থানে রাখারই প্রয়াস। অর্থাৎ তোমারও হিসেবের খাতা আছে। কিন্তু তোমার জন্য এইধরনের 'মহান' উপদেশাবলির ব্যবস্থা তো আমার দ্বারা হবে না! অতএব তুমি একতরফা মাখাও দেওয়ালের গায়ে, তোমার সুবিধেমতো রং!
কী দারুণ বিচারব্যবস্থা! কী অদ্ভুত সুবিধাবাদ ও তাকে প্রতিষ্ঠিত করার কৌশল! যে-সব 'মহান' কলমনিঃসৃত বাণী তুমি এই কারণে টাঙিয়ে রাখছো দেওয়ালে, আর তাদের স্রষ্টারা উৎফুল্ল হচ্ছেন স্বভাবতই, তাঁরা তো জানতেও পারছেন না যে তুমি আসলে ব্যবহার করছো তাঁদের শব্দগুলোকে, শুধুমাত্র নিজের ডিফেন্স মেকানিজমের উপাদান করে! ভারি মজার এই লুকোচুরি, যাই বলো! মাঝেমাঝে ভাবি, ঠিক উল্টোটা যদি হতো? তোমার জায়গায় আমি, আর আমার জায়গায় তুমি! এতসব 'মহান' বাক্যরা তখন কীভাবে 'উজ্জ্বল' করতো তোমার দেওয়াল! করতো? স্বাভাবিকভাবেই করতো না, তাই না!
শুনেছি, ছবি কখনও মিথ্যা বলে না! শুনেছি, ছবিও মাঝেমাঝে মিথ্যা বলে! এই সেদিনও বিভিন্ন কারণে আজ অমুক ছবি দিতে হবে, কাল তমুক ছবি দিতে হবে, এসব বলেই তুমি বলতে, 'তুমি কিন্তু একদম মনখারাপ করবে না, প্লিজ! আমি তো জানি, কতটা কষ্ট হয়! কিন্তু বোঝোই তো, তোমার-আমার স্বার্থেই এটুকু ব্যালান্স করে চলতে হবে আমাকে!' শুনে ভালোলাগায় ভরে যেতাম। সত্যি তো, এটুকুতে আমাদের যদি ভালো হয়, তার থেকে ভালো আর কী হতে পারে! আবার সেই 'আমাদের'! আবার সেই একই ভুল আমার! আজ এখানে ওই ছবি, সেখানে তাই ছবি। হঠাৎ-হঠাৎ চোখে পড়ে যায়, আর চমকে যাই! হুঁশ ফিরতেই হেসে ফেলি অবশ্য। তোমার কাছে আর কী আশা করার ছিল আমার! ঈশ্বরের করুণায় আমাদেরও মুহূর্তগুলি কম ছবি হয়ে নেই অবশ্য! হিসেবের খাতার ফুটনোটে সেইসব স্মৃতি লেখা আছে।
এই আত্মকথা অতএব এখানেই শেষ হওয়া বাঞ্ছনীয়, বন্যা। যদিও কাকতালীয়ভাবে এফএম চ্যানেলে ঠিক এখনই মহম্মদ রফি, আমার প্রিয়তম পুরুষকন্ঠ, গাইছেন 'এখনই বিদায় বোলো না'! পরমতম যত্নে যে-মৃন্ময়ীকে গড়েছিলাম, আমার পক্ষে নিজে হাতে তার বিসর্জন দেওয়া সম্ভব নয়। এ আমারই একান্ত দুর্বলতা! তাই আজও লিখিত অক্ষরে ও চোখের ভাষায় বাক্যালাপ হয়। তাই আজও তোমার একের পিছনে অন্যান্য সংখ্যার ধাওয়া করা দৃশ্যায়নে দেখা হয়। তাতে আমার রক্তক্ষরণ বাড়ে। কিন্তু নিজে থেকে অক্ষরে বা শব্দে কথোপকথন শুরু করবো না, এটুকু ছাড়া নিজেকে রোধ করার পথ আমার জানা নেই! এও আমারই নিজস্ব অক্ষমতা! তবে একটা বিষয়ে আমি মোটেই দুর্বল ও অক্ষম নই। বরং খুবই দৃঢ়। সে-সব কথা রাখার কথা নিয়েই আর দুটো কথা বলে যাই। আর দুটো অপেক্ষার কথা।
তোমার জন্য অন্তহীন অপেক্ষা থাকবে, আমার 'ইটারনাল শি'। যেহেতু অন্তহীন, হয়তো অর্থহীনও বটে! একথা জেনেও অপেক্ষা জারি থাকবে। পাশাপাশি জারি থাকবে নিজের উইথড্রয়াল প্রসেস। ধীর কিন্তু নিশ্চিত পদক্ষেপে সেদিকেই এগোচ্ছি আমি। যাতে এভাবেই ক্রমশ একদিন যেন আমাকে আর খুঁজে না-পাওয়া যায় কোথাও! এখন শুধু সঠিক সময়ের অপেক্ষা। কারণ আমি জানি, এ-পথে শেষ পর্যন্ত চলার মতো কেউ সঙ্গে নেই। থাকার কথাও ছিল না। মাঝে অহেতুক বিভ্রম সৃষ্টি করেছিল জীবন! অতএব আমার জন্য যে-রাস্তা বরাদ্দ আছে, সে-রাস্তায় আদৌ কেউ নেই। কেউ কোথ্থাও নেই! রাস্তাটির নাম তাই বিজন সরণি। আমার চলার পথ এখন সেইদিকে। বিজন সরণির দিকে।
পূর্বের পর্ব পড়ুন -
bhashaweb@gmail.com
সুচিন্তিত মতামত দিন