মন্দিরা ঘোষ

আমার বসন্তবৌরি
সন্তের আলোর  ঝর্ণায় ডুবে যাচ্ছে শীতের জলসাঘর। আলোছায়ার লুকোচুরিতে নানান মরসুমি রঙ।রঙ গুলি ভাঙ্গছে আবার গড়ছে নানা ভঙ্গিমায়।  মুগ্ধতার মেখলায় সব আলো ছিটকে ছিটকে ভিজিয়ে দিচ্ছে গোধূলির মায়া। দিনের হাল্কা সাজের মিশেল গুলি খেলে যাচ্ছে নীল আকাশে।

ভাবতে ভাবতে শব্দের বিক্ষেপ  ভেসে উঠছে একে একে জলের বিম্বিত  ছায়ায়।কারো হাতে ধূলোয় মোড়া  একচিলতে আবির  । কারোর চোখে পলাশের আগুন।কেউ এনেছে দশ আঙ্গুলের ফাঁক দিয়ে গড়িয়ে পড়া সূর্যের লাল আলো আর তোর ঠোঁটের ডগায়  চাঁদের নোলক...আমার যে খুব শখ নোলকের।মনে রেখেছিস কেমন!

ধেয়ে আসা শব্দের ধার গুলিতে বিক্ষত হতে হতে  পুড়ে যাচ্ছে  সব বিয়োজন। ভেসে ভেসে নরম আলোর শব্দময়তা অনুভব করছি তখন। গ্রামদেশের ধার ছুঁয়ে থাকা আকাশী শাড়ির সবুজ বনাঞ্চলে পাখপাখালির ঘর, তাদের সুখসংসারের গল্পপাঠে টুপ টুপ বৃষ্টিজলের সুর,কেমন সব গানের মত।

শীতের সকালে রোদ্দুরে ভিজে যাচ্ছে হাঁসের পালক,সেই পালকসুখের রিন রিনে  ঝর্ণার আওয়াজ শুনতে শুনতে দিগন্তঘোরে মিলিয়ে যাওয়া  দিন! সারারাতের হিম আদরে  ঘাসের শরীর থেকে মাথা উঁচিয়ে  শিশিরের চেয়ে থাকায় অনেক শব্দময়তা, মায়ার মত জড়িয়ে থাকে সব, পায়ের পাতা নরম আদরে ডুবে যায়,তখন অনেক  অনেক দূর থেকে ভেসে আসে আলোর গান,মুক্তোর দল নেচে ওঠে ঘাসের পাতায় পাতায় -আর  কেঁপে ওঠা চোখে আমি আলোর উষ্ণতা টের পাই, চেনা লাগে খুব,মেলাতে মেলাতে ঘোরলাগা শব্দ গুলি ছুঁয়ে আসে চাঁদের জ্যোৎস্নাজল, তখন ভিজে যায় সব ছায়াটান।

দুহাত দিয়ে সরিয়ে সরিয়ে ছায়ার মাঝখান থেকে তুলে আনি আমাদের বসন্তের প্লাবনদিন। ভাসতে ভাসতে খুঁজে বেড়াই সেই  লাল নীল কমলা বৃষ্টিপালকের উচ্ছলতা । কোথায় থাকিস তুই,টের পাস না কিছুই!

তোর পালকের নীচে লুকোনো  সব ইচ্ছেরঙ  ফিরিয়ে দে এবার! বড় খালি হয়ে গেছি,  আমার সব শব্দঋণ যে তোর  কাছেই!
ধারণগুলি ফিরিয়ে নেবো বলে স্মৃতির আগুন নিয়ে তাকিয়ে আছি তোর দিকেই!






একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.