শীত ফুরোতে না ফুরোতেই তার জন্য মনটা কেমন যেন ব্যাকুল হয়ে ওঠে। এই বুঝি অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়ে এলো! এই বুঝি এলো তার আমন্ত্রণ বার্তা ! রূপে- রঙে -সুরে, তার মাতাল করা গন্ধের আহ্বান আমি প্রতিনিয়ত আমার শরীরের প্রত্যেকটা কোষে কোষে, আমার রন্ধ্রে রন্ধ্রে অনুভব করি। তার রেষ ধরেই কেটে যায় আমার সারাটা বছর। শুধু ক্ষণিকের সুখের জন্যই বোধহয় এমন একটা জীবন অনায়াসেই এই ভাবেই তেতো মুখে বেঁচে থাকা যায় ।
সে যে ক্ষণিকের অতিথির মতই আসে আমার কাছে। তার শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে মাতাল করা কামাতুর ঘ্রান প্রত্যেক মুহূর্তে কেমন যেন আমায় পাগল করে তোলে। তার প্রেমে আমি আজীবন করি স্নান। তার জন্যই একটা আস্ত জীবন বেঁচে থাকা যায়। ওমন সুন্দর রূপ তার,মন-মুগ্ধকারী গুন তার, সুরের মত তার মিষ্টি কথা, মাতাল করা শরীরের ঘ্রান, তার জন্যই হয়ত বেঁচে থাকা আমার আস্ত একজীবন। সে যে আমার প্রেম, সে যে আমার প্রানবায়ু, সে যে আমার জীবনশুধা, সে যে আমার, সে যে একান্ত আমার, সে যে আমার প্রেম।
শীত ফুরোলেই সে আসবে আবার। সে যে আসবেই আমি জানি। কত রূপে-রঙে-সুরে উন্মাদ করা তার গন্ধের নেশায় ক্রমশ সে আমায় মাতাল করে তোলে । সে যে আমায় ডোবাতে চায় তার শান্ত শীতল মাতাল করা বুকে। কি ভীষণ শান্তি সেখানে....
সারা বছর জুড়ে তার কতই না প্রস্তুতি! সে যে সম্পূর্না হয়েই আসবে আমার কাছে। শ্রেষ্ঠ সুন্দরীর সবকটা গুনে উজাড় করে দিতে চায় তার প্রানের প্রানপুরুষকে। রূপে - রঙে- গুনে- গন্ধে- সুরে সে এমন ভাবেই সাজিয়ে তুলে তবেই ধরা দেবে। যেন সর্বক্ষণ আমার সমস্ত ইন্দ্রিয় কেবল যেন তার প্রতিই সজাগ থাকে। চোখ -কান-নাক-স্পর্শ সব কিছু যেন একান্ত তার শুধা পান করার জন্যই ঈশ্বর বানিয়েছিলেন। সে যে সম্পূর্ণ উৎসর্গ করতে চায় নিজেকে তার প্রেমের কাছে। তার সবটুকু উজাড় করে দিয়ে ভীষণ শ্রান্ত করে তুলে তার এমন দামাল দস্যি প্রেমীকাকে। তখন তার কোলে মাথা রেখে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়ি একটা জীবন..
বড্ড নিশ্চিন্ত তার সেই কোল, যেখানে যম এলেও সে ফিরিয়ে দেবেই, সে যে ফিরিয়ে দেবেই আমি জানি।
তার সাথে প্রেম? যেন ঠিক স্বপ্নের মত, স্বপ্নের মত সবকিছু।
বহুক্ষন তার হাত ধরে হেঁটেছিলাম ঝরাপাতার দেশে, কেউ ছিলনা সেখানে তখন। দখিণা বাতাস এসে কেবল জুড়িয়েই যাচ্ছে আমাদের নগ্ন শরীর। ভীষণ ক্লান্ত তখন,কখন যে তার কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম আস্ত একজীবন! ঠিক খেয়াল নেই। চোখ মিলে দেখি- সারা আকাশ জুড়ে তখন আবীরের উৎসব, কত রঁঙ সে আকাশে। গাছে গাছে তখন পলাশ-শিমূল,কৃষ্ণচূড়া আর রাধাচূড়াদের মেলা, সে যেন রূপে রঙে অপরূপা এক রূপবতী নারী,বহুদূর হতে কানে এসেছিল কোকিলের কুহূতান, যেন ঠিক পৃথিবীর সেরা সুর। নাকে তখন আম্রমুকুলের ঘ্রান, ঠিক যেন নীবিড় হওয়ার হাতছানি।
সে হাতে করে তুলে দিয়েছিল আমার জীভে মাতাল করা মহুয়ার স্বাদ.......
atanuabmcadila@gmail.com
সুচিন্তিত মতামত দিন