জয়িতা দে সরকার

জয়িতা দে সরকার / রূপসী হেঁসেল
শব্দের মিছিলের সকল কবি, লেখক, পাঠকবন্ধুদের জানাই রূপসী হেঁসেলের তরফ থেকে শুভ বিজয়া এবং দীপাবলির আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা। শব্দের মিছিল ''ত্যাগ'' সংখ্যায় রূপসী হেঁসেলের তরফ থেকে আমি জয়িতা আবার হাজির বর্ধমানের গৃহবধূ তোশালি মিত্র'র সঙ্গে।


তোশালি মিত্রকে শুধুই গৃহবধূ বলা ভুল হবে। ওর নিজের একটি গয়না এবং শাড়ির বুটিক আছে। ষোলোআনা সংসার সামলে নিজের বুটিকের দেখাশোনা তোশালি নিজেই করে। তারসাথে তার আরও একটি সখ হল বিভিন্ন স্বাদের রান্না করা। দেখা যাক আজ কি কি লোভনীয় রেসিপি তোশালি আমাদের শেখাচ্ছে। 

আজ আমরা শিখবো -  ইলিশ ভুনি খিচুরি,  চিকেন দমপোক্ত, গোল্ডেন প্রন, গোলাপ জাম। চলুন এবার সরাসরি চলে যাই তোশালির রান্নায়। 


১। ইলিশ ভুনি খিচুরি

ইলিশ ভুনি খিচুরি উপকরনঃ- বাসমতি চাল, ইলিশ মাছ, মুগ ডাল মুসুর ডাল আদা রসুন বাটা, এলাচ, লবঙ্গ, দারচিনি, হলুদ গুড়ো, কাঁচালঙ্কা, সরষের তেল, নুন স্বাদমত।

প্রনালিঃ- বাসমতি চাল আধঘন্টা ভিজিয়ে জল ঝরিয়ে রাখুন। 

মুগ ডাল শুকনো কড়াইতে ভেজে ধুয়ে নিতে হবে। 

ইলিশ মাছে নুন হলুদ মাখিয়ে হাল্কা করে ভেজে নিতে হবে। 

ওই তেলেই এলাচ দারচিনি লবঙ্গ দিতে হবে। 

সুগন্ধ বেরলে আদা রসুন বাটা দিয়ে চাল দুরকম ডাল হলুদ গুড়ো দিয়ে একটু ভাজতে হবে। 

ভাজা হলে জল দিতে হবে। ফুটতে শুরু করলে স্বাদ মতো নুন দিয়ে গ্যাকস কমিয়ে দিতে হবে। জল প্রায় শুকিয়ে এলে ভাজা ইলিশ মাছ ও কাঁচালঙ্কা দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। দু তিন মিনিট রেখে দিলেই তৈরী ইলিশ ভুনা খিচুরি।

২। চিকেন দমপোক্ত - 

চিকেন দমপোক্ত সম্পূর্ন তেল ছাড়া একটি রান্না প্রথমে কড়াই গরম করে ওতে দিতে হবে এলাচ দারচিনি গোলমরিচ লবঙ্গ। সুন্দর গন্ধ বেরলে অল্প চিনি দিয়ে নাড়তে হবে। চিকেন আগে থেকে প্রায় ১ঘন্টা ম্যারিনেট করতে হবে পেঁয়াজের রস আদার রস রসুন বাটা দই গোলমরিচ গুঁড়ো হলুদ দিয়ে। ওই চিনি আর ভাজা মশলার মধ্যেব এই ম্যাদরিনেটেড চিকেন দিয়ে পরিমান মতো নুন দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। গ্রেভি ঘন হলে নামিয়ে নিতে হবে। খুব সহজেই তৈরি হয়ে যায় চিকেন দমপোক্ত। 



৩। গোল্ডেন প্রনঃ- 

গোল্ডেন প্রন বানাতে লাগবে মাঝারি সাইজের প্রন। চিংড়িগুলোকে ভালো করে ধুয়ে নুন ভিনিগার মাখিয়ে রাখতে হবে প্রায় ১ঘন্টা।এবার একটা ব্যাটার করতে হবে। ময়দা কর্নফ্লাওয়ার, বেশ খানিকটা গ্রেটেড চিজ ও ডিম দিয়ে। একটুও জল দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে আর একটা ডিম ও দুধ দিতে হবে। ব্যাটার টা একটু ঘন হবে। 

এবার প্রন গুলো ব্যাকটারে ডুবিয়ে ভাজতে হবে। পুজোর দিনগুলোতে রান্নাঘরে বেশিক্ষন সময় থাকতে কারুরি ভালো লাগে না। অথচ বাইরের খাবার অনেকে পছন্দ করেন না তাই আমি আজ এমন কিছু রেসিপি শেয়ার করলাম যাতে সময় অল্প খরচ হয় এবং স্বাদের ঘাটতি না হয়। আশা করি বন্ধুদের ভালো লাগবে। 

আজকের সব শেষ রেসিপি একটি মিষ্টি। গোলাপজাম খুবই জনপ্রিয় মিষ্টি চলুন শিখে নেওয়া যাক গোলাপজাম কিভাবে বানায়। 

৪। গোলাপজাম ( সংগৃহীত ) 

উপকরণ : ১ কাপ গুঁড়া দুধ, ১/৪ কাপ ময়দা, ১/৪ কাপ তরল দুধ, ঘি ১ টেবিল চামচ, বেকিং সোডা ১/৪ চা চামচ, তেল ভাজার জন্য। 

সিরা তৈরির উপকরণ : চিনি ১ কাপ, জল ১ কাপ, এলাচ দানা ২/৩টি, গোলাপ জল ১/২ ফোঁটা। 

প্রস্তুত প্রণালী : প্রথমে সিরা তৈরির জন্য একটি পাত্রে চিনি, জল, এলাচ দানা মিশিয়ে চুলায় দিয়ে নাড়তে থাকুন। প্রায় ৫ মিনিট নাড়ার পর সিরা একটু ঘন হয়ে গেলে চুলা থেকে নামিয়ে একপাশে রেখে দিন। এবার ময়দা, গুঁড়ো দুধ, বেকিং পাউডার একসাথে মিশিয়ে ভালো করে চেলে নিন। মিশ্রণে ঘি মিশিয়ে নিন ভালো করে। এরপর অল্প অল্প করে তরল দুধ ঢেলে ময়ান করুন। মিষ্টির খামিরটি খুব বেশি শক্ত ও হবে না আবার একেবারে নরমও করা যাবে না। বেশ কোমল আর সামান্য আঠালো হবে। এবার কিছুটা খামির হাতের তালুতে নিয়ে গোল করে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ছোট বলের মত আকৃতি দিন। হাতের সাথে আটকে যেতে চাইলে একটু ঘি মেখে নিন হাতে। সব গুলো মিষ্টি সমান আকারের তৈরি করতে চেষ্টা করুন, তাহলে দেখতে ভালো দেখাবে। খেয়াল রাখুন যাতে মিষ্টির বল গুলোতে কোনো ফাটল না থাকে চুলা মাঝারী আঁচে রাখবেন। আঁচ কম হলে মিষ্টি ফুলবে না আর বেশি হলে পুড়ে যাবে। একটি কড়াইয়ে তেল গরম করুন। তেল গরম হলে মিষ্টি দিয়ে দিন।একবারে ৪/৫টির বেশি মিষ্টি দিবেন না। মিষ্টিগুলোকে অনবরত নাড়তে থাকুন। তাহলে পুরো মিষ্টির সব জায়গায় একই রঙ হবে। নাহলে এক দিক বেশি লাল আরেক দিক কম লাল থেকে যাবে। মিষ্টিগুলো বাদামী রঙ হয়ে গেলে নামিয়ে একটু ঠান্ডা করে ১ ঘন্টা সিরায় ভিজিয়ে রাখুন। পরিবেশন করুন মজাদার মিষ্টি গোলাপ জাম। ঠান্ডা অথবা গরম দুই ভাবেই খেতে মজা এই মিষ্টি। গরম খেতে চাইলে মাইক্রোওয়েভে ৩০ সেকেন্ড গরম করে নিতে পারেন। বাসায় বানানো গোলাপ জামের স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয়। গোলাপ জাম বাসায় বানালে একদিকে যেমন খাঁটি হওয়ার নিশ্চয়তা থাকে অন্যদিকে খেতেও অত্যন্ত মজাদার হয়। তাই নিজেই বানিয়ে নিন জনপ্রিয় এই মিষ্টিটি। একবারে বেশি করে বানিয়ে রেখে ফ্রিজে সংরক্ষণ করে খেতে পারবেন অনেক দিন।

আজকের পর্বটি এখানেই শেষ করলাম। সকলে ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তী সংখ্যায়। 



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.