ছেলেটি এগিয়ে এসে বলে “কোথায় যাবে বোন ?”
মেয়েটি কিছুই উত্তর না দিয়ে ঘড়ি দেখছিল ।
ছেলেটি আবার বলে ,“আমাকে বিশ্বাস করতে পার বোন। আমি তোমার বড় দাদার মতন । তুমি বাসে না ওঠা অবধি আমার দায়িত্ব তোমার কাছে থাকা , তুমি গেলে তবেই আমি যাব এখান থেকে।”
মেয়েটি অবাক চোখে তাকায় ছেলেটির দিকে । মুখে তবুও কিছু বলে না । মনে সন্দেহ কিন্তু মুখ খুলল না ।
এই সময় একটি অটো আসে তাতে এক মহিলা ও আরেকজন সহযাত্রী ।
মেয়েটি তার গন্তব্য স্থানের কথা বলে । অটো চালক বলে , চলে আসুন আমি ছেড়ে দেব ভাড়া যা দেওয়ার দেবেন ।
অগত্যা মেয়েটি উঠে পড়ে । সঙ্গে ওই ছেলেটি ।
মেয়েটি সন্দেহ করে ছেলেটিকে । কিন্তু মুখে কিছু বলে না ।
কিছুদুর যাওয়ার পর সামনের মহিলাটি নেমে পড়েন।
অটোতে এবারে তিনজন পুরুষ , সঙ্গে ওই মেয়েটি ছাড়া আর কেউ নেই ।
মেয়েটি এবারে সত্যি ভয় পাচ্ছিল । ভয়ে ভয়ে এদিক ওদিক তাকাচ্ছিল ।
অটো চালক বলে , "মা আমার একটি মেয়ে আছে তোমার বয়সী "। সঙ্গের ছেলেটি বলে , "বোন আমার তোমার বয়সী একটি বোন আছে । আমি দেখছি তুমি খুব ভয় পাচ্ছ । কেন এই ভয় ? কিসের এত ভয় ! নিজেকে এত অসহায় মনে করো না" । আমরা দুষ্টু লোক নই । আমাদের বিশ্বাস কর।
মেয়েটি এবার মুখ খোলে ,‘ধন্যবাদ’। মনে মনে ভাবে ওই 'বিশ্বাস' শব্দটা শব্দকোষ থেকে উঠে গিয়েছে ।
এর মধ্যে মেয়েটির বাড়ির রাস্তা এসে যায়। মেয়েটি দ্রুত পায়ে নেমে পড়ে । অটো চালক এবং ছেলেটির প্রতি কৃতজ্ঞতা পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকায় এবং বলে, "আপনারা না থাকলে আমি সত্যি খুব অসুবিধেতে পড়তাম । আমি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। । আমি আপনাদের সত্যি ভয় পেয়েছিলাম কিন্তু ...... ! "
অটো চালক ও ছেলেটি একসঙ্গে বলে , "না না এটা তো আমাদের দায়িত্ব । তুমি আর রাতে বেরিও না বোন ।
মেয়েটি এরপর ভাড়া মিটিয়ে চলে যায় । মেয়েটি ভাবে ,"না সকলে দুষ্টু লোক নয় কিম্বা সকলকে অবিশ্বাস করাও উচিৎ নয়। কিছু ভাল লোক এখন ও এই পৃথিবীতে আছেন । মেয়েটি তার ব্যবহারে লজ্জিত হল।"
তার যাওয়ার রাস্তাটার দিকে তাকিয়ে থাকে অটো চালক এবং ছেলেটি । একটি তৃপ্তির নিঃশ্বাস নেয় দুজনে। আসলে ওরা দুজনেই বাবা ছেলে ।