বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৭
রবীন বসু
sobdermichil | সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৭ |
অণুগল্প
| মিছিলে স্বাগত
বাঘ থাবা বসিয়েছে।
দাঁত
নেই,
কিন্তু নখ আছে সাড়ে তিন বছরের শিশু শুয়ে ছিল মায়ের নিশ্চিত আর
নিরাপদ আশ্রয়ে তবু কোন্ রন্ধ্র দিয়ে ঢুকে বাঘ ঘাপটি মেরে বসেছিল ঘরের অন্ধকার
কোণে। তারপর সময় ও সুযোগ বুঝে ওত পাতা বৃদ্ধ বাঘ থাবার নখে তুলে নিল
শিশুকে। ঘুমন্ত
শরীর কেঁপে উঠল। নখের আঁচড়
আর বিষাক্ত লালায় জর্জরিত হল । দন্তহীন বিকৃত বাঘ হামলে পড়ে তুলোর মত
নরম পালকটার উপর।
এখন
সেই পালক শরীর শহর হাসপাতালের বেডে শুয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। সারা
দেশ ফুঁসছে। বাঘ সুযোগ বুঝে থাবা মেরে আবার জঙ্গলে পালিয়েছে ।
অপারেশন
করে বাঘের নখ দেহ থেকে বের করা গেছে ঠিকই, কিন্তু শিশুর নরম দেহ সে
ভার নিতে পারল না। মধ্যরাতের পর লড়াই শেষ। হাওয়ায়
ভাসতে ভাসতে একটা স্নেহময় আঁচলের খোঁজে শিশুর পালক-আত্মা কোথায় যেন পাড়ি দিল।
হাসপাতালের
বাইরে তখন জনরোষ গর্জাচ্ছে ! বাঘের শাস্তি চায়। মানবতার সেই রোষ
শহরের কংক্রিট ভেদ করে ছুটছে জঙ্গলের দিকে। তারা চিৎকার
করছে— জঙ্গলে আগুন লাগাও ... শয়তান বাঘ ঠিক বেরিয়ে আসবে। তখন ওর বাঘনখ সমেত ওকে পুড়িয়ে মার !
আর
সেই মা,
যে পেটের খিদে আর স্বামীহীন উপোসী শরীরের খিদে দুইয়ের কাছে হেরে
গেছে, এখন পুলিশের ঘেরাটোপে সে কী মেয়ের মৃত্যু সংবাদ পেয়েছে?

