পলাশ কুমার পাল
মনময়ূরী,
"ছায়ায় ছায়ায় এ মুখ শুধুই ঢেকে যায়..."
আলোর ঠিক বিপরীতে ছায়া। মাঝে থাকে মূর্তিতা। স্মৃতিও বলতে পারিস। যার একপ্রান্তে তুই, অপর প্রান্তে আমি। সব কল্পনার মতো। দুর্গাপ্রতিমাটা যেমন। আর তাকে ঘিরেই উত্সব। এখন সেই প্রতিমার রঙ হচ্ছে জানিস। তারপর...
"তার আর পর নেই, নেই কোনো ঠিকানা-"
আসবি হয়তো। কিন্তু দেখা হবে না মনে হয় দুর্ঘটনা ব্যতীত। দুর্ঘটনা ব্যতীত যে আর কিছুই নেই এই সম্পর্কের চারচোখে। চোখেতে যেমন চশমা। রাত্রে তারা আলাদাই শোয়।
একদিন বোটানিক্যাল গার্ডেনের তালগাছেদের ছবি দেখিয়েছিলিস মনে পড়ে? সেদিন গিয়ে দেখলাম তালগাছগুলো দাঁড়িয়ে আছে, তোর কথাগুলোও তার পাশে হেলান দিয়ে বসেছে। শুধু ঘড়িটা ঘুরে গেছে অনেক। তখনই ভাবলাম ম্যাজিসিয়ানরা যা পারে, আমি পারিনা। সময়কে পিছিয়ে দিতে বা...
মূর্তিটা যা পারে, সেটুকুও পারি না উত্সব জোরো করতে। আজকাল কেবল বেকারত্বের তিলক টেনে দিনরাত্রি স্বপ্নকে ধোঁয়া দিই, নিজের ফুঁ'য়ে। বাবা-মার স্বপ্ন পূরণ করতে পারিনি। আর হয়তো পারব না। "অমলকান্তি রোদ্দুর হতে পারেনি" এই অজুহাতে ভুলে থাকি। অন্ধকার ছাপাখানা আছে, শব্দ নেই। তবে তোকে টাইপ করতে মন্দ লাগে না। আজও যেমন টাইপ করছি পুরাতনকে...
এখন আবার চা'য়ের আড্ডার মতো বিয়ে বিয়ে কথা মাঝে মাঝে ভাসে। আমার আবার বিবাহ! মনে মনে হেসে নিই সুদে-নকলে। বেকার ছেলের তো মন থাকে না, থাকে দেহ। বেকারের চোখ থাকে না, থাকে সিনেমা। তুই বুঝিস কতকটা হয়তো। আমি এখন যেমন মনহীন, তোর কাছে পরিচয় মাত্র। এইভাবে ছায়ারা দীর্ঘতর হয়ে ওঠে তোর দিকে ছুটতে ছুটতে...
তবে সময়ের দলদাস আমিও। কখন আমি পাল্টে যাব জানি না। হয়তো সংসারী হব কখনো, হয়তো বা পাগল, বা হয়তো হঠাত্ করে মরেই যাব। বিসর্জনের মতো। মনখারাপী খেয়ালে মিষ্টিমুখ করে সবাই বলবে 'শুভবিজয়া!' দেখা হবে না। কথা হবে না। আগাম 'শুভবিজয়া' তোকে জানিয়ে রাখি তাই।
ভালো থাকিস। আর লাল পাড় হলুদ শাড়িটা পরলে তোকে ভীষণ মিষ্টি লাগে। পারলে ওরকম কোনো শাড়ি পরে অঞ্জলি দিস তোর বরের সাথে। আর শুভবিজয়াতে নীল।
ইতি
অ-বন্ধু
কোন মন্তব্য নেই:
সুচিন্তিত মতামত দিন