একটু একটু করে কুয়াশা জড়িয়ে নিচ্ছি। বছর ঘুরে যাচ্ছে অবাঙালি রাত গন্ধে। এই মাটিতেই আমার শেকড়। এসেছি আরো একবার জন্মাতে। জন্মাবো, সাথে জন্ম দেবো আবার শান্ত ঝড়ের। এই পশুকে ধীরে ধীরে বাড়তে দিয়েছি স্বেচ্ছায়; রাত বাড়লে, বছরের শেষে আজ রক্তে ভেজাবো এই শরীর। কেড়ে নেবো পাশবিক অহং, কিছু মানুষের। ঘৃণা করো তোমরা আমায়, আমি খোদ নেমে এসেছি ধ্বংসের পর পৈশাচিক উল্লাসে ফেটে পড়বো বলে।
ধুনি জ্বালিয়ে বসেছি। আশে পাশে ধুনির আলোয় ঘুরে বেড়াচ্ছে অঘোরীরা। তাদের সাধনার প্রয়োজন কোলে নিয়ে বসেছি। আমি খুলে রেখেছি আমার পার্থিব আবরণ সমস্ত। দুই স্তনে আঁকড়ে রেখেছি সন্তানদের ঠোঁট। তারা একটু একটু করে পান করুক আমাকে, আর ভয় দেখি দূরের তন্ত্র দৃষ্টিতে। অট্টহাসি বেরিয়ে আসছে আমার আপাত শান্ত মূর্তি থেকে। জবা ফুলেদের খেলা শুরু পরলোকের দরজায়। আমি এসেছি!
যে পুরুষের ঔরসজাত আমার সন্তান, যে জন্মের ফসল আমার নাভিমূলে আটকানো ফুল, তার রক্ষার দায় নিয়ে বসে আছি নিজের ফেলে আসা শবের ওপর। "আয়, কেড়ে নিয়ে যা", বলে হুংকার দিচ্ছে আমার আবেদনপূর্ণ শব, আর সেসব আবেদনে সভয়ে ছিটকে যাচ্ছে শেয়ালের দল। ঋতুমতী শব, শ্বাপদেরা শুঁকে যাচ্ছে কেবল... আর আমি, সমস্ত কদর্য শরীরী ক্ষমতা ছিনিয়ে নেবো বলে মা হয়ে বসে আছি অনন্তকাল।
নতুন সকাল হবে, নতুন বাকলে নিজেকে ঢেকে উঠে দাঁড়াবো, কোলে কাঁখে শরীরের অংশ। অনাদি অনন্ত, অশেষ... ভোর হবে মিষ্টি সোনালি... লাল, নীল সব মিলেমিশে একাকার। মুছে যাচ্ছে অন্ধকার, ছেয়ে ফেলছি বিশ্বচরাচর... কে বলে দেবে আমার নাম... এই আমিই যদি হই নতুন বছর, নতুন জন্মকাল?
Tags:
মুক্ত গদ্য