সুমনা পাল ভট্টাচার্য

সুমনা পাল ভট্টাচার্য
 মনের বড় জ্বর 

হরের ফুটপাতে
ধুলোর মিছিল পেরোনো অভিমান
শুকতলার নীচে অনন্ত চেতনার শিকড়
আমি হাঁটছি আর হাঁটছি...
সড়কের আলুথালু আঁচলে তোর গায়ের গন্ধ....
পারদের জামায় আগুন উত্তাপ
ধুলোর অণু ঘাম জুড়ে তোর এঁটো
অপেক্ষার চোখ ব্যগ্র পুরাণ
বুঝি...
আজ মনের বড় জ্বর।।


 মহীরুহের পথে 

ট্রাঙ্কের মেঝেতে দোক্তা পাতার মত
সেঁটে থাকা এক জীবাশ্ম পিছুটান
বুক জোড়া মাটি বেয়ে
দিগন্ত ফসল বুনে যায় ....
জমির চারপাশে অযত্নের আগাছা
আর ঠিক মাঝখানে থৈ থৈ জল
আমি
রোদ পোড়া শরীরে চারা পুঁতি রোজ
তারপর
সময়ের কাঁটায় নিজেকে বাজি রেখে
হেঁটে চলি
মহীরুহের পথে।।


 ঘুম 

সেদিন হয়ত চৈত্রমাস ছিল
আজ আর মনে নেই
কেবল মনে আছে
গনগনে রোদের তাপে পুড়ে যাওয়া বুক
আকাশ-ভাঙা বৃষ্টি চেয়েছিল
জরাগ্রস্ত ছাতিফাটা তেষ্টায়
বারবার
নিজের শুকিয়ে ওঠা লোভী লজ্জাকে
জিভ দিয়ে চেটে নিচ্ছিল
আদরের লালারস
ঠিক এমনই সময়
এমনই সময়...
বাতাস কাঁপিয়ে, আকাশ ছাপিয়ে
ঝমঝম করে নেমেছিল সুখী সুখী বৃষ্টি
কাঁটাতারে ফুটেছিল ফুল
বৃষ্টি থেমে গেছে
কার্নিশের জল নুপুরও আর শোনা যায় না
রামধনু পথ সরু হতে হতে
কোথায় যে শেষ হল!
খুঁজতেই থাকি বারবার...
স্বপ্নের শিরামুখ ফেটে গেলে দেখি
ফ্যাকাসে চোখে জলের স্রোত
ভেসে যাচ্ছে বুকের মেঝে
এমন লাল লাল নোনা-বৃষ্টিতে
আমার জন্মের ঘুম....



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.