১: মাতৃরূপেণ
বিদ্যা পুজি নামের মোহে অবিদ্যাকে কামে....
কন্য়া ভ্রূণ ফেলছি ছুঁড়ে জঞ্জালেরই ড্রামে..
মায়েদেরও বিভাগ থাকে...সব নারীই কি মা?
মেয়ে বিয়ানো নাড়িশক্তি নারীশক্তি না...
২: মানুষীদেবী
দশমীতে দেবী স্বয়ং মেয়েজন্ম নেন....
কিছু সন্তান মাতৃজ্ঞানে নয় বেশ্য়াজ্ঞানে বুকের কাপড় সরিয়ে থাবা বসায়...
জলে দুলতে দুলতে ভেসে যান দেবী নাকি ক্ষতবিক্ষত লাশ..
ধুপধুনো ফুলচন্দন সিঁদুরের গন্ধ ছাপিয়ে যার আঁচলে লেগে থাকে মেয়েমানুষের ঘ্রাণ!
৩ : জানা - অজানা
দীপাবলীর রাত জানে পতঙ্গের মরণযন্ত্রণা
ঝরাপাতা জানে পরিচয় হারানোর বেদনা
যমুনা জানে কৃষ্ঞরাত আর রাধাদিনের রহস্য
মানুষ আর মেয়েমানুষের তফাতটাই আমার জানা হলনা...
৪ : অগ্নিরহস্য
পৃথিবীর প্রথম আগুন জঠরাগ্নি,
অত:পর, কামাগ্নি বশীকরণ শেষে
বৈদিক ঋষি যজ্ঞাগ্নিকে আহবান করেছিলেন দেবতাকে তৃপ্ত করতে
চতুর্থ নরকাগ্নি জ্বলে উঠেছিল রসাতলে....
৫ : উদ্দেশ্য
সমানাধিকার একটা হাস্যকর প্রচেষ্টামাত্র...
বাক্যের উদ্দেশ্য অথবা বিধেয় উভয়ই স্পষ্টত অস্পষ্ট...
আসলে নিষিদ্ধ গুপ্তধন খোঁজা শুধুই নেশা, উদ্দেশ্য কিছুই নেই।।
৬: সাম্প্রতিক
ডানপন্থী, বামপন্থী নোটের বান্ডিল এখন চিরশান্তির ঘুমে,
রাত পোহালেই , ধনতান্ত্রিক লম্বা লাইনে বুর্জোয়া সর্বহারাদের এক স্লোগান...
শুনছি নগ্ন অক্ষরেরা নাকি দাবী করেছে, কালোও সাদা হবে!!!
৭ :সংজ্ঞা
ঋতু পরিবর্তনের আগে প্রেমিক প্রেমিকাও খোলস বদলায়,
অভিযোজিত হয় পরকীয়ার সংজ্ঞা,
আয়নায় ছায়া ফেলে বনসাই দাম্পত্য,
জীবন কি তবে মিথোজিবী সম্পর্কমাত্র?
৮: অনুঘটক
এসিড ছোঁড়া আঙ্গিনায় লক্ষীর পা এলোমেলো আল্পনা আঁকে,
পড়শি চাঁদ দেখে, চাঁদমুখের লক্ষীশ্রী নিমেষে মুছে যায় পোড়াদাগে।
৯ : নষ্ট-চাঁদনী
নষ্টচন্দ্রা রাতে মদির বিভঙ্গে ফাঁদ পাতছি শিকারের ।
একের পর এক..আরো একটা..আরো...আরো...
কামনার চটচটে লূতাতন্তুজালে ছটফটাচ্ছে পুরুষপতঙ্গদল...
শিকার করতে করতে এক অনিচ্ছুক চাঁদের চাঁদনী হয়ে যাচ্ছি...
১০ : নাটক
রঙ্গমঞ্চ তৈরী, কুশীলবরা দাঁড়িয়ে গেছে তাদের বৃত্তে,
পরিপূর্ণ প্রেক্ষাগৃহে শুধুই অপেক্ষা, আমার আর তোমার।
তুমি এখনও লিখেই যাচ্ছ, শেষ হলেই ড্রপসিন উঠবে, জ্বলবে আলো,
দশ-মাস দশ-দিনের অজ্ঞাতবাস সেরে ফিরে আসব আমি।
১১ : নিখোঁজ
একটা ফুরিয়ে যাওয়া বিকালের খোঁজে হারানো সকাল, আর
জলের গভীর থেকে উঠে আসা বুদবুদের সন্ধানে ডুবে যাওয়া স্বপ্ন,
নিঁখোজের তালিকায় নিত্যনতুন সংযোজন।
" সন্ধান চাই"-এর বিজ্ঞাপনে আজ নিজের নামটাও দিয়ে এলাম।
১২ : পরশ
বুকের যুগল-শঙ্খ- যেদিন ছুঁয়ে গেছে পুরুষের আবিল স্পর্শ,
শঙ্খমালা ঠিকানা বদলেছে ধূসর পান্ডুলিপিতে।
অনেক কবিতা পেরিয়ে পা রেখেছে রুক্ষ গদ্যের দেশে,
তারপরেও সংক্রামণের মত তাকে ছেয়ে গেছে ভালোবাসা।
১৩ : অবশেষ
আজকাল খবরের কাগজ পড়তে পড়তে ভাবি
কেন্দ্রীয় চরিত্রে সংবিধান নাকি মহাকাব্য?
যদিও ঘটনাবলীর ক্লাইম্যাক্স নিয়ে আর ভাবিনা,
জার্নালিজম আর স্যোসাল মিডিয়া তো নটেগাছটাই নিয়ে গেছে।
১৪ : ভোলবদল
সেদিনের ভালোবাসারা পুড়ে গেছে সময়ের ধূপদানিতে
আরক্তিম গোধুলিতে যে রজনীগন্ধা সুগন্ধে ভরিয়েছিল,
লগ্নজিতা রাতে যে রজনীগন্ধার মালা লজ্জা পেয়েছিল,
আজ নষ্টচন্দ্রায় অভিমানী চিতায় সে-ও বড় একা ।
১৫ : সাম্প্রতিক
রূপোলী পর্দায় বাহুবলীর মৃত্যুতে নেমে আসে চোখের পাতা।
সীমান্তে জীবনমৃত্যু বৃত্ত ছুঁয়ে-ছুঁয়ে যায় প্রতিবেশীর অগ্নিবাণ ,
গণতন্ত্রের উৎসবে, তিরঙ্গমোড়া কফিনগুলো উপাচার সাজায়,
আমার দেশ মেডেল আর প্রতিশ্রুতিতে চোখের জল কেনে।
১৬ঃ বুদ্ধপূর্ণিমা
তবুও অগুন্তিবার নষ্ট করেছি বিষাদ শ্রাবণ,
আমার আজ কাল পরশু জুড়ে জন্মান্তরের খরস্মৃতি,
আরোহ,মিয়া-মাল্হারে শুধুই ঘরফেরা পাখীর ডাক।
পাখিজন্ম থেকে বোধিসত্ত্ব জন্মান্তরে ফিরে যাচ্ছেন নব-জাতক রূপে।