মন্দিরা ঘোষ
একটা সময়ের মধ্যে আমরা ছিলাম যখন সবাই একটি রাস্তায় জীবন সাজাতাম। গল্পের পালক এক সূতোয় ঝুলে থাকত। ইলেক্ট্রিক তারে দোল খাওয়া পাখির মত দোল খেত জীবন সহোদরসুখে। হাসি গানে ললিত সব সুখপাখি ডালে পাতায় দিন নামাত। জ্যোৎস্না ছড়িয়ে দিত মুঠো মুঠো রাতের অন্ধকারে; আমরা গলা ছেড়ে গান গাইতাম, হাসতাম দোপাটির খুশীতে।অভাব আর দুঃখের চাদর উড়িয়ে দিতাম সাদা মেঘের গায়ে।
কখনো বাবা বলত," ইচ্ছেপাখি হয়ে ভেসে যা চাঁদের দেশে, ওখানে সব জ্যোৎস্না পরীদের সংসার যে!" ঘুমঘোরে আঁধাররাতে গল্পকথার পালক চোখের পাতা ছুঁয়ে থাকত। মায়ের ঘামে ভেজা রক্তিম মুখে পৃথিবীর সব সুখ লুকিয়ে চেয়ে দেখার আমোদ শ্যাওলায় চাপা পড়ে গেছে।
আমরা সতেজ উত্তরসূরিদের সামনে খানিকটা মৃত ইতিহাসের মত। স্নেহের অন্ধত্বনামা!আদর্শকে গারদে পুরে বিলাসের মৌতাত ছড়ালাম রাস্তায়। অলস নদীর মত বয়ে চলেছি আর আদর্শের হলুদ পাতা ছিঁড়ে টুকরো করে সাজিয়ে রাখছি কাঁচের আলমারিতে। সম্পর্কের ব্যবচ্ছেদে শুধু লোনাজল। শুধু ক্ষয়িত ভালবাসার নগ্ন ইতিহাস! একটি খণ্ডিত সময় আত্মসাৎ করে সারটুকু মুঠোবন্দী করেছি সময়ের ঘুমহীনতায়। দিশাহীন ডুবোনৌকার মতো সময়ের সহবাসে আছি! সাধ্যি কই তেমন হাসি গানে সাজিয়ে দিতে আগামীর পথ যাতে আগামীর ও আগামী আবাদ হবে ফুল্ল কুসুমিত পথে!
কোন মন্তব্য নেই:
সুচিন্তিত মতামত দিন