পদ্মশোভিত কাব্য সরোবর,
তাহাতে তুলিয়াছ ঢেউ,
তুমি , আর নয় তো কেউ -
তুমি ধূমকেতু, শাপভ্রষ্ট দেবশিশু।
তোমার বীণায় উঠিয়াছে ঝড়,
ঝরিয়াছে বিদ্রোহের আগুন।
বাঁশিতে বাজেনি মধুর স্বর,
বাজিয়াছে বিষের ফাগুন।
তুমি গাহিলে শিকল ভাঙার গান,
তাহাতে জাগিয়াছে কত শত নব প্রাণ।
তুমি ই শিখায়াছ মোদের অর্জিতে সম্মান,
স্বাধীনতার তরে রহিয়াছে তোমার অজস্র অবদান।
তুমি গাহিয়াছ সাম্যের গান-
ধুয়ে মুছে গেছে সব বাধা ব্যবধান।
হিন্দু-মুসলিম, বৌদ্ধ-ক্রীশ্চান,
নাহি ভেদাভেদ, সকলই সমান।
'জাতের নামে বজ্জাতি সব'
তার বিরুদ্ধে তুলিয়াছ রব,
গাহিয়াছ মানবতার জয়গান,
সর্বহারা র তুমি ই তো ভগবান।
বড় বিষ-জ্বালা সহিয়াছ বুকে,
কিছু ই বলোনি মুখে,
কৈফিয়ত শুধু লিখিয়াছ একা,
রক্ত-লেখা।
শাসকের রক্ত আঁখি,
তোমায় দেয় নি তো ফাঁকি।
'আনন্দময়ীর আগমনে'র পর জ্বালাইলে 'প্রলয় শিখা',
ব্রিটিশ রাজ করিল বন্দি, তোমায় দিল শিক্ষা।
এক হাতে তোমার
'বাঁকা বাঁশের বাঁশরী,
আর হাতে রণ-তুর্য্য',
তুমি এক জ্বলন্ত সূর্য।
শুধু নয় তো বিদ্রোহের গান,
'দোলন চাঁপা'র গন্ধে আকুল প্রাণ।
'বাতায়ন পাশে গুবাক তরুর সারি' তারপরে' 'অনামিকা',
তারি মাঝে মিলিয়াছে প্রেমের শিখা।
অন্তর তব এক ভক্তির নীড়,
তাহার মাঝে শ্যামাসঙ্গীত আর-
ইসলামী গানের ভিড়।