জয়ন্ত সেন

খিদে
চোখে চোখ পরে গেলো, ওরা দুজনেই দুজনের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়েছিলো ( বছর তিন-চারেক আগের কথা )

সেই মেয়েটার আকাশ কালো চুল ছিলো,
সুবর্ণ তার রঙ ছিলো,
থমকে যাওয়া হাত ঘড়ির,
তুলির টানের শরীর,
বিজয় নামক হিন্দু ছেলে,
প্রথম দেখেই মন দিলো


সেই মেয়েটির ঘুম ভাঙানো ভিজে চুলে,
তার শরীরে লেপ্টে নেবে নির্ভুলে,
পাড়ি দেবে জীবনভর,
তার কঠিন দুটি চোখে,
ভিজবে নেশায় গোলাপী ঠোঁটে,
এ-টুকুই বিজয়ের স্বপ্ন ছিলো


"ওই মুসলিম মেয়ে যদি ঘরে ঢোকে তবে আমার মরা মুখ দেখবি |" বিজয়ের মা বলেদিলো


কারো কাছে তুলির টান,
কারো কাছে চাবুক গতর,
অশ্রাব্য বাসনায় পুষেছিলো ভেতর ভেতর,
পাড়ার কতক নেকড়ে গুলো,
একদিন যেই সুযোগ পেলো,
মাংস পেশী ছিঁড়ে নিলো

ছেঁড়া-ফাটা কাপড় আর ক্ষত ক্ষত দাগ,
পড়েছিলো রাস্তা-ধারে,
একবার নয় সেদিন মরন এলো বারেবারে,
গ্রামের মেয়ে
শুধুই দেখে চেয়ে,
কেমন হিংস্র রক্ত ঝরে যোনির ধার বেয়ে


যে মেয়েটির আকাশ ধরার সখ ছিলো,
সে কলঙ্কিত মেয়েকে গ্রামে রাখা যাবে না আর, তাই ধানবাদে চাচার কাছে পাঠিয়ে দিলো


চাচা বলে
"খানকি মাগি, হারামজাদি ছোকরা কটা বিনে-পয়সায় স্বাদ নিলো,
আমি কেনো বাদ যাবো !
উলঙ্গ হয়ে বোস কোলের ওপর,
পয়সা দিবো


( আজকের ঘটনা--কিছুক্ষন আগে )

দীপ ( মাতলামি করতে করতে )-শোন আমার বালেশ্বর, তলপেটের নীচ দিয়ে আবেগ গুলো ঠিক মতো বেরিয়ে গেলে সব পাস্ট প্রেসেন্ট ভুলে যাবি। কতদিন আর ওই মেয়েটার জন্য পরে থাকবি, তুই-তো গেছিলিস ওদের গ্রামে, কি শুনলি ! হিন্দু-মুসলিমের দাঙ্গায় ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে, কেউ বেঁচে আছেও কিনা কেউ জানে না। ওসব ছাড়, এখন ওপরের রুমে যা চোদ্দ-সি নম্বরে। তোর জন্য জাব্বার-কে ফোন করে একদম রাফ-চিক পেসকি রাখা আছে ।
বিজয় উঠে যায়।


এই মেয়েটির আকাশ কালো চুল,
কাজল ছাপায় নয়ন দু-কুল,
বলে "আয়-রে আমার এক রাতের নাগর,
ভয়-টি তোর আর কিসে ?
বিছানা ওসব ধর্ম কি বোঝে !
শুধুই খাদ্য বোঝে, খিদে বোঝে,
রাখবি আয় মোরে সেই বিষে  ...



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সুচিন্তিত মতামত দিন

নবীনতর পূর্বতন