সুনীতি দেবনাথ

সুনীতি দেবনাথ
 সপ্ত গ্রহ 

স্টিফেন হকিংস কি তাহলে জিতেই গেলেন?
আরো সাত সাতটি গ্রহের সন্ধান পেলো নাসা।
হয়তো আমার পৃথিবীর মত সুস্বাদু জল আছে
আমার প্রাণের মত অব্যাখ্যাত স্পন্দিত প্রাণও
আমার কামিনী ফুলের সুবাসিত প্রাচীনা পৃথিবী
ঝিরঝির বৃষ্টি ওড়না ঘেরা সুস্নাত সবুজের নাচন
আঁকাবাঁকা নদীটির নটিনী চলন এসবও আছে?
তবু আমার পৃথিবী আমারই ভালোবাসি তাকে
আমার সাত সমুদ্র তরঙ্গ আছে নীল একটা আকাশ
মিলেমিশে গেছে বৃহৎ মহাকাশে কোন আদ্যিকালে
এতো জানতে চাই না,  বলতে চাই আমার দেশ আছে,
তিরিশ সত্তরের নগর গ্রামের ভাগাভাগি ধর্মের কানাগলি
মৌলবাদীর ধামাচাপা আস্ফালন এখন খোলা রাজপথে
বিন তুঘলকের আত্মা আপশোস করে কত করার ছিলো
ইমব্যালান্সড প্রোগ্রেস সত্তরের সম্পদ তিরিশ লুটে নেয়
তবু এ আমার স্বদেশ ' ভারতবর্ষ সূর্যের এক নাম '
চাইনা আমি  সপ্ত গ্রহ আরেক সূর্যের নতুন জগৎ,
এই সূর্যের সৌরদীপ্ত পৃত্থী আমার স্বদেশ আমার মা।



 যুদ্ধবাজ 

দু 'পাশে পাথুরে দেয়াল মাঝে করিডোর সুদীর্ঘ
পাথরের থাম কিছু দূর দূর অনুচ্চারিত সিঁড়ি
ছুটে ছুটে আবছা অন্ধকারে কিশোরী চলেছে
ও প্রান্তে লোহার গরাদ উঁচুতে বিশাল গবাক্ষে
কালোতে কালো প্রজাপতি উড়ে চলেছে সে
জানালার একটি পাট খোলা, দু ' হাত তুলে যেন
কোন অতিলৌকিক শক্তির কাছে দোয়া চাইছে!
নিকষ কালো আঁধারে এক ঝলক আলো মমতায়
তার মুখটি দিয়েছে ধুইয়ে চোখে ফোঁটা ফোঁটা জল,
মনে হলো আরাধ্যের করুণা নয় আলোর প্রার্থনা
মুক্ত পৃথিবীর কাছে তার একান্তই কামনা ...
ইরাকি কিশোরী স্বপ্নের বন্দিনী কন্যার ছবি
আমার ফটোগ্রাফার ইরাকি বন্ধু দেখিয়েছিলেন।
সেও তো বহুদিন আগে, তখনও যুদ্ধের কালো দিন,
আজো চলছে যুদ্ধ ইরাকে সিরিয়ায় অবিরত,
জানি সে কিশোরী আজ যুবতী হয়েছে তবু যুদ্ধ চলে।
ফটোগ্রাফটি দেখার পর আমার সব রাত নির্ঘুম প্রায়
শুধু শেষ রাতে আধো ঘুমে আধোছায়াতে সে কন্যা
আলোর প্রার্থনা নিয়ে অবরুদ্ধ স্বপ্ন হয়ে মগ্ন চেতনাতে
চলাচল করে কাছে আসে দূরে চলে যায় আমাকে কাঁদায়।
ভয়ঙ্কর সেসব যুদ্ধের দিনে কত দেহ মৃত্যুর ভাসানে
সমুদ্রের তরঙ্গে ভেসে হাঙর কুমীরের স্বাস্বদু খাদ্য হলো,
দেশান্তরী কত হাজারে হাজারে বিদেশে রিফ্যুজি ক্যাম্পে
বোবা দৃষ্টিতে আকাশে তাকিয়ে পেটের আগুনে পুড়েছে,
কেঁদেছে জেনেছে  পৃথিবীটা বড় বেদরদী গৃহহীন ওরা চিরন্তন
স্বদেশ হারিয়েছিল সেদিন তারা,  সে কিশোরী কোথায় জানি না।
আজ চলছে আবার যুদ্ধ নেতা আমেরিকা বড় বড় শক্তিধর
রাষ্ট্রসব সহযোগী — ব্রিটেন ফ্রান্স রাশিয়া চলছে বছর বছর যুদ্ধ।
আই এস প্রায় দখল করেছিল ইরাক সিরিয়া কিন্তু সম্মিলিত বাহিনীর
দাপটে পিছু হটলো তারা,  হাতছাড়া হলো সিরিয়ার রাজধানী রাকা।
বিপর্যস্ত দুর্ভেদ্য ঘাঁটি আলেপ্পো, ইরাক ময়দানে বিপন্ন ওরা।
সেই সুন্দরী মসুলের পশ্চিমে সীমিত হলো আই এস সাম্রাজ্য
এখন আত্মরক্ষার জন্য ড্রোন হামলা একমাত্র হাতিয়ার।
ঈগল ঈগল দুরন্ত ঈগল শক্ত ডানা মেলে আকাশে
বহু দূর আকাশে ডানা মেলে উপরে আরো উপরে
উড়ে উড়ে চলে যায় শিকারী ঈগল ড্রোন শিকারি।
মারণাস্ত্র বিদ্যায় মানুষ তৈরি করছে এক একটি অব্যর্থ কল!
মারো মানুষ মারো,  রক্ষা? প্রয়োজন কি? আত্মরক্ষা? হ্যাঁ জরুরি!
ফরাসি মারণাস্ত্র বিজ্ঞানী ড্রোন হামলার বিরুদ্ধে এবার
সুকৌশলে বিজয়ী হতে চাইছে ট্রেনিংপ্রাপ্ত ঈগল দিয়ে
ড্রোন শিকার করিয়ে, বাহা রে মানুষ এতো কৌশল জানো!
শুধু হত্যা জানো, যুদ্ধ জানো, হানাহানি জানো মিতালি জানো না
সৃষ্টির সেই সুললিত সুগন্ধি সুনন্দিত সত্তার সুরক্ষা জানো না,
আলো স্নানে আকাঙ্ক্ষী আলো বৃষ্টিতে নৃত্য কামনায় মগ্ন
ইরাকি কিশোরীর মত সারা বিশ্বের বন্দিনীরা যুবতী হবে,
মুক্ত বিশ্বের আলোকাভিসারিনী নারী হবে না? যুযুধান সভ্যতা
স্তব্ধ হও, মানব -মানবী - শিশুর আলোকিত মুক্তাঙ্গন মুক্ত করো!




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সুচিন্তিত মতামত দিন

নবীনতর পূর্বতন