''জল কি তোমার ব্যথা বোঝে ?
তবে কেন ? তবে কেন ?
জলে কেন যেতে চাও নিবিড়ের সজলতা ছেড়ে ?
২০০৭ সালে ২৪শে সেপ্টেম্বর হারিয়ে গিয়েছিলেন এক উদীয়মান শিল্পী পীযুষ কবিরাজ । তাঁর মৃত্যুর দশ বছর পূর্তিতে গত২৫শে ফেব্রুয়ারি বীরভূম জেলার দুবরাজপুরে 'কবিতা এবং কবিতা ' পত্রিকা সেই অসামান্য শিল্পীকে স্মরণ করে তাঁদের কবিতা সংখ্যাটি প্রকাশ করলেন প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক কবি ফজলুল হক, সম্পাদক ফাল্গুনী দে এবং অগণিত কবি ও শিল্পী। বইটি সমৃদ্ধ হয়েছে পীযুষের শিল্প ভাবনায়, তাঁর রঙ তুলির যাদুস্পর্শে আঁকা অসামান্য ছবিতে এবং নানা কবি , শিল্পী গুণীজনের প্রবন্ধ,কবিতা, স্মরণগাথায় ।
''তোমার মূর্তির থেকে বেরিয়ে বিমূর্ত
কতখানি আছ
ভাবলে সমুদ্র জল
ছোট এক কুম্ভ পাত্র
চকিতে ছুঁয়েছ তারপর যে আকাশ
মহাবিশ্বে উড়ে যায়
তুমি সেই ওড়া
গতি সেই তুমি । ''
চৌদ্দ পাতা জুড়ে শিল্পীকে শিল্পী, কবি অনুপম দত্ত তাঁর স্মরণগাথায় বরণ করে নিয়েছেন অপূর্ব বোধে ,ভাবনায় ।
কবি ফজলুল হক লিখেছেন - তার ছবি দেখলে মনে হত শিল্পী এমনটাই হয় যার জাত নিয়ে কোন সংশয় থাকবে না । রেখাটানে একটু ভিন্ন ধরনের আধুনিকতা আনার চেষ্টায় মগ্নতা দেখেছি ....। সব সম্ভাবনা ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে সে চলে গেল মহাসমুদ্রের গভীরে মণি মুক্তোর সন্ধানে না কি ভিন্নতর কোন ছবির খোঁজে ।
''মৃত্যু ও ভালোবাসার অনন্ত মহাসাগর '' এক প্রতীকধর্মী রচনায় সম্পাদক ফাল্গুনী দে দক্ষ হাতে এঁকেছেন যেখানে --'' মহাসাগরের অনন্ত পরিসরে পীযুষের বেঁচে রইল আমাদের মৃত্যু শোককে পরোয়া না করে ।''
শিল্পীর আশা আর স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখলেন তাঁর শিক্ষক অনুস্প দত্তগুপ্ত । সার্থক সমালোচনা করলেন কবি মানস ভাণ্ডারী '' সম্মিলিত সমুদ্র এবং একজন পীযুষ '' যা তাঁর অন্তর্দৃষ্টির আলোকে প্রতিভাত ।
কবিতা এবং কবিতার এই প্রকাশটি স্মরণীয় করে রাখলেন তার অনুরাগী কবি, শিল্পী, ছাত্র ছাত্রী যারা আজ অনেক দূর এগিয়েছে । স্রষ্টা বেঁচে থাকলেন তাঁর সৃষ্টিতে । বইটি থেকে পীযুষের কিছু ছবি দেওয়া রইল পাঠকের উদ্দেশ্যে। যেন ভুলে না যাই, যেন মর্যাদা দিয়ে ছবিগুলি সুরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা হয় তার আবেদন করি । আশারাখি তাঁর রঙ -তুলি, তাঁর সিমেন্ট বালির ভাস্কর্য পরবর্তী প্রজন্ম বাঁচিয়ে রাখবে যথাযোগ্য মর্যদায়।
উপস্থিত বক্তা, সুধীবৃন্দ
শিল্পী পীযুষ কবিরাজের আঁকা, ভাস্কর্য
![]() |
সিমেন্টের ভাস্কর্য |
Tags:
সাহিত্য সংস্কৃতি বার্তা