রুমা ঢ্যাং

রুমা ঢ্যাং

 ছিটেফোঁটা বিষ ও বিষাদ যাপন 

(১)

জড়ুল মেঘে প্রাচীন সন্ধ্যা নামে
সূর্যাস্তের শরীর থেকে মুছে যেতে থাকে যাবতীয় আলপথ
সেকালের বাঁশির সুরে ধরেছে ঘুমানো রোগ
আমি শেষমেশ বেহালার সুরে খুঁজি
মাছেদের শোক

(২)

তুমি ব্যাস ব্যাসার্ধ মিলিয়ে ক্ষেত্রফল ও পরিধি মাপো
গাছেদের আত্মজীবনী থেকে বাকল ছিঁড়ে নিয়ে
মেষপালনকে গায়ে জড়িয়ে নিতে চাও
তারপর চিরপ্রেমিকের মত নদীর ঢালে বসে
বঁড়শিতে মাছেদের টোপ গাঁথো।
তবুও তোমার পরিধির বেড়ার - মজবুত বুননে ভাত ছাঁকতে গেলে
হাত পোড়ার সম্ভাবনা হয় প্রবল!


(৩)

ফুলেদের বিবৃতিতে দেখা যায় মাটিদের আহ্লাদ।
খসে যাওয়া পাপড়ি থেকে রংমহল সাজালেও
ধুলো পড়ে থাকে প্রজাপতি জন্মে।
পাশ ফিরে তাকিয়ে রয়েছি দূরে -- সূর্য নেই
তবুও চিলেকোঠা দেয়াল ডুবে আছে রোদস্নানে।
কাচের বাক্সে একে একে পুরে রাখছি বিষাদ,
কপালে জলছাপ রেখে কেটে যাচ্ছে সুনসান রাত্রিকাল।

বিকেলশেষে খুঁটে তুলি নিথর দিন,
আজ মনে হয় -- প্রতিশ্রুতির চেয়ে
                              দম্ভের নিশানা ভারী।


(৪)

ধুলোপায়ে যেতে যেতে যে পাখিটাকে এঁকে নিতে চেয়েছিলাম
সে আজ উড়ে গেছে অন্যদেশে
কিংবা কোন খাঁচায় নিয়মের অভ্যেস গড়ে নিচ্ছে
সেসব দিনে ক্লোরোফিল সাক্ষী আছে
ডালসমেত তাকে দিতে চেয়েছিলাম হ্যান্ডমেড পেপারের একখণ্ড সাদা জমি

প্রতিবেশীরা এখন তারই বুলি আওড়ে চলেছে,  শিখে নিচ্ছে পাখিদের ভাষা
গাছের গুঁড়ির কাছে বসে লিখে চলেছি গাছ ও পাখির কথা
আর জীবাশ্মের ভেতর হাতড়ে বেড়াচ্ছি নিওলিথিক যুগের অস্ত্র!


(৫)

সিগন্যাল কেটে সহজপাঠ শুরু হলে
এক ঘুমন্ত রাস্তা ও অদৃশ্য জানলার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি।
ফ্রেমওয়ার্কে নীরবচারী কিছু অপ্রাসঙ্গিক কথা আলপনা দিতে ব্যস্ত,
মায়াবী দেয়াল --
গুঁড়ো গুঁড়ো শব্দের ঝড়।
স্টেশন নির্জন হলে ফুটপাথও ঘুমিয়ে পড়ে সম্মেলনে;
জমে থাকা কথোপকথন ও
ঢিলছোঁড়া দূরত্বে থাকা ঢিপিগুলো
জেগে থাকে রাতের চাদর মুড়ে।
এই অনুভূতিহীন দেশ রোদকণায় জ্বলে থাকে
কেবলমাত্র পাঁজর পুড়ে গেলেই
অনুভূতিগুলো হয়ে পড়ে সংবেদনশীল
তখন ভালোবাসা শীতের রাতে লাল মোজা পড়ে!


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সুচিন্তিত মতামত দিন

নবীনতর পূর্বতন