রূপক সান্যাল

রূপক সান্যাল
 উল্লাসনগরী 

 উল্লাসনগরীতে এখন আলো জ্বলছে
                                    একশ আটটা
শরীরে এতটুকু রক্ত নেই বলে আমার খুব
                                    লজ্জা করছে
সব রক্ত মিশে আছে ধুলোয়

এখানে সন্ধের পর কোন যানবাহন নেই
ট্রেনের কামরাগুলো ফাঁকা, তবু ঠিক ফাঁকা নয় –
তিনটে কুকুর শুধু বসে আছে, তাদের মুখে
                                  চোদ্দ টুকরো মাংসখন্ড –
স্তনের আথবা জঙ্ঘার আথবা ...
                                  গন্ধ পাচ্ছ সুস্বাদের?

এই মরু-অরণ্যে আমি বিছিয়েছি তাঁবু
আজও দেখিনি মানুষের চেয়ে কোন হীনতর জীব

রাস্তাগুলো গুটিয়ে নিচ্ছে কেউ, হয়তো
                                   ধোয়া-কাচার জন্য
এই সময়টুকু তবে কী পথহারা হয়ে থাকব?

 এই উল্লাসনগরীতে এখনো জ্বলছে আলো, ক্রমশ বাড়ছে
                                                       আলোর সংখ্যা,
আলো, শুধু আলো – উজ্জ্বলতার শেষ নেই বুঝি
কুলকুচি করা জলে ভরে যাচ্ছে নদী, মাঠ –
গোলাপী মাংসের কারবারিরা
           এক ফুঁ-এ নিভিয়ে দেয় জঠরের আগুন ...

তুমি অন্য কারো কাছে যাবার আগে
           আমাকে অন্ধ করে দিয়ে যাও


 যে আমাকে আশ্রয় দেবে বলেছিল 

তোমার ছুরি কোনদিন গোলাপ হবে না
না হোক –
গোলাপের জন্য কাঙালপনা নেই আমার

যদি বিঁধতেই হয়,শেষবার বিঁধে যাও
বলে দিয়ে যাও, ওইখানে আদৌ কোন হৃদয় ছিল কী?
তুমি ফিরে যাও স্বপ্নে –স্বপ্নে ছিলে, স্বপ্নেই থাকো
সেখানে তোমার একক অস্তিত্বে কেউ হাত বাড়ায়না
এই কঠিন মাটিতে আমি প্রতিদিন
একা একা অরণ্যের খেউরি হওয়া দেখবো,
দিঘীর পাড় দিয়ে
একা একাই হাঁটবে আমার অবশিষ্ট সকাল —

কে যেন আশ্রয় দেবে বলেছিল, তার কাছে কোনদিন
                                                ফেরা হয়নি আর
এতদিন তোমাকেই মৃদু মৃদু খুঁড়ে গেছি—
ভাঁজে ভাঁজে বিবিধ চমক দেখেছি বারবার,
অথচ, যে আমাকে আশ্রয় দেবে বলে কথা দিয়েছিল –
তার কাছে কোনদিন ফিরে যাইনি আর ...

তোমার ছুরি কোনদিন গোলাপ হবে না—
সে না হোক, কিন্তু যে আমাকে আশ্রয় দেবে বলেছিল
তাকে আর কোনদিন দেখতে পাব না?



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.