মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর

গরিবের সুখ
বাজারে বড় বড় টেংরা অার পুটি উঠেছে। তেল ওয়ালা গোস্তও অাছে। হাছেন ঘুরে ঘুরে দেখছে।  মেয়েটা টেংরা মাছের ডিম খাবে, রশিদ মোল্লার বাড়ীতে খেয়ে ছিল। বাবাকে বলে রেখেছে হাটে পাওয়া গেলে যেন অানে। বউ পোয়াতি, তেল ওয়ালা গোস্তের মিলানি খাবে, সম্ভার দিয়ে। বউটার কথাও মনে পরছে। কি জানি কখন কি হয়।

হাসেন ভাবে  - জীবনে একটা ইচ্ছা সে অাজ পুরন করবেই। তার পকেটে কাজ করে এক মাসের জমানো ৯০০  টাকা, কাপড় অার বউয়ের ঔষধ  কিনবে ভেবে, সদরে অাসা। সদরের হাট, ক্রেতার টাকার অভাব নাই, মাছের ঝাপি ঘিরে দাড়িয়ে ক্রেতা, বড় বড় টা কিনছে সবাই। হাসেন ভাবে দেড়ি করলে পাওয়া যাবেনা। সেও বেছে নেয় হাফ কেজি। দাম ৩৫০! ইস এতো গুলো টাকা ?  মেয়েটার হাসি মুখ ঠিক তখনি ভেসে উঠে । টাকা পরিশোধ করে স্বস্তির নিঃশ্বাস নেয় । মেয়ের ছোট মুখটা অাবার মনে পড়ে। মেয়ে খাচ্ছে এ ভাবতেই তার খুশিতে লাফাতে ইচ্ছে করে।

সিনার গোস্ত শেষ, ইস কেমন হলো?  বউটা কুঁচকুঁচে হাড় খুব খেতে পছন্দ করে। গত বড় ঈদে গাওয়ালী ভাগে দুইটি কুঁচকুঁচে হাড় পেয়ে কি খুশি। রান্না শেষে একটি নিজে অন্যটি স্বামীর পাতে তুলে দিয়ে বলে, খাইন মজা পাইবেন। হাসেন হাড়টি না খেয়ে বউয়ের পাতে তুলে দেয়। বউ কুঁচকুচি খায়, তার চোখে জল। হাছেন জিগায়,  কান্দোক্যা ?  বউ বলে খুশিতে। সে অানন্দে হাসেনের চোখেও পানি এসেছিল সে দিন।

ভাববার সময় নেই, হাসেন দেড়কেজি গোস্ত কিনে ফেলে ৪৭৫ টাকায় । কাপড় অার কেনা হয়না তার। ঔষধ কেনারও পয়সা  নেই।  বুকের কোথায়  যেন চিনচিনানী ব্যথা। হাটে অার মন বসে না তার। কখন বাড়ী যাবে সেই ভাবনা। জীবনে এমন মুর্হূত, এত খুশি পাওয়া  হয়নি। সে কি ভাবে হাটে থাকবো  -----?



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সুচিন্তিত মতামত দিন

নবীনতর পূর্বতন