উনিশ শতকে যে সমস্ত উপজাতিয় বিদ্রোহ দেখা গিয়েছিল সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল কোল বিদ্রোহ, সাঁওতাল বিদ্রোহ মুন্ড বিদ্রোহ প্রভৃতি। ইতিহাসের পাতায় এই সব বিদ্রোহ গুলোই স্মরণীয় হয়ে আছে। আজকের আলোচ্য বিষয় হচ্ছে মুন্ডা বিদ্রোহ কি তাতে বিরসা মুন্ডার ভূমিকা কি ছিল? বিরসা মুন্ডা ছিলেন একজন মুন্ডা আদিবাসী এবং সমাজ সংস্কারক। ব্রিটিশ শাসকদের অত্যাচার-অবিচারের বিরুদ্ধে তিনি আদিবাসী মুন্ডাদের সংগঠিত করে মুন্ডা বিদ্রোহ সূচনা করেছিলেন। ১৫ নভেম্বর ১৮৭৫ সালে তৎকালিন বিহার বর্তমান ঝাড়খন্ড রাজ্যের রাচির উলিহাতু গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা সুগনা মুন্ডা মাতা করমি হাতু। বাল্যকাল থেকেই তিনি সমাজের প্রতি ও ব্রিটিশ শাসক দ্বারা অত্যাচারিত হওয়া মানুষজনকে নিয়ে চিন্তিত থাকতেন। মুন্ডা বিদ্রোহ হল উনিশ শতকে সংঘটিত ভারত উপমহাদেশে অন্যতম উপজাতিয় বিদ্রোহ। ব্রিটিশ শাসকদের অত্যাচার-অবিচারের বিরুদ্ধে তিনি আদিবাসী মুন্ডাদের সংগঠিত করে মুন্ডা বিদ্রোহ সূচনা করেছিলেন। ১৮৯৯ -১৯০০ সালে রাঁচির দক্ষিণাঞ্চলে এই বিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছিল।
মহাজন ও জমিদারদের অকথ্য অত্যাচার, নির্যাতন, উচ্চহারে কর আদায় প্রভৃতির বিরুদ্ধে মূলত ছিল এই বিদ্রোহ। একদিকে মুন্ডারাজ প্রতিষ্ঠা অন্যদিকে মুন্ডারা তাদের স্বাধীনতা পাওয়ার আশায় জোরদার আন্দোলনের সৃষ্টি করেছিল যাকে বলা হয় 'উলগুলান' ( উলগুলান কথার অর্থ- প্রবল বিক্ষোভ) । একদিকে অনাহারে মানুষের দিন কাটছে অন্যদিকে খাদ্যের লোভ দেখিয়ে একশ্রেণীর মিশনারিরা মুন্ডাদের খ্রীষ্টান ধর্মে ধর্মীন্তরিত করার প্রবল চেষ্টা চালাচ্ছে। বীরসা মুন্ডার নেতৃত্বে তখন শুরু হয় ( ১৮৯৩-৯৪) গ্রামের পতিত জমি অধিগ্রহণ বিরোধী আন্দোলন।
সারা দেশজুরে যখন অসংখ্য উপজাতিরা একে একে বিরসা মুন্ডার ডাকে সাড়া দিয়ে বিদ্রোহকে প্লাবিত করার চেষ্টা করছে তখন বিরসা মুন্ডা কে ভীত ব্রিটিশরা যে কোনো ভাবে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করছে। শেষে বাধ্য হয়ে ব্রিটিশ সরকার ১৮৯৫ সালে বিরসাকে দুবছরের জন্য কারারুদ্ধ করে। জায়গীরদাররা মুন্ডাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে মুন্ডাদের জীবন অতিষ্ঠ করে তোলে।
এই মুহূর্তে বিরসা এক নতুন কূটনীতির আশ্রয় নেয়। জেল থেকে ফিরে আসা বিরসার চোখে জ্বলছিল প্রতিহিংসার আগুন। তার মনে সংকল্প ছিলই , যেমন করেই হোক উপজাতিদের স্বাধীনতা অর্জন করতেই হবে। তাই সে সুচতুর কৌশলে এক গভীর জঙ্গলে নৈশ্য ভোজন করার জন্য জায়গীরদার, হাকিম ও খ্রিষ্টানদের আমন্ত্রণ করে। রাত্রে একদিকে নৈশ্য ভোজের আয়োজন তার সাথে উপজাতিদের গান ও সুরা এসবের মধ্যেই বিভোর হয়ে থাকে তারা। অন্যদিকে বিরসার ইশারায় ঝোপঝাড়ের মধ্যে থেকে উরে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে ধনুকের ফলা। মুহূর্তের মধ্যে প্রাণ হারায় বেশ কয়েকজন জায়গীরদার, হাকিম ও মিশনারি।
ব্রিটিশদের লাগাতার অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিরসা মুন্ডার নেতৃত্বে ১৮৯৯ সালে বড়ো দিনের প্রাক্কালে মুন্ডারা রাঁচি ও সিংভূম জেলার ছয়টি থানায় আগুন লাগায়। এই কান্ডকলাপে ব্রিটিশরা বিরসার উপর আরও খেপে ওঠে এবং চরম প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়। তন্য তন্য করে খোঁজ চলে বিরসার কিন্তু তাকে সহজে খুঁজে পাওয়া যায়নি। যতদিন না বিরসাকে খুঁজে পাওয়া যায় ততদিন ব্রিটিশদের চোখে ঘুম ছিল না।
অবশেষে ৯ই জানুয়ারী বিরসা মুন্ডা সহ তার সমগ্র বিপ্লবী দলকে বন্দী করতে সমর্থ হয় ব্রিটিশ সরকার। চারিদিকে তখনও চলছে মুন্ডা বিদ্রোহীদের আন্দোলন। ব্রিটিশ সরকার এই আন্দোলনকে একেবারে নির্মূল করার জন্য ৩০০ র উপর বিদ্রোহীকে হত্যা করআর পাশাপাশি অসংখ্য বিদ্রোহীকে কারারুদ্ধ করা হয়। তখনো বিরসার স্বপ্ন ছিল জেল থেকে বেরিয়ে সে তার ইচ্ছা পূরণ করবে কিন্তু তার সে সুযোগ আসেনি।
বিচারে বিরসা মুন্ডা ও ধৃত অন্য দুজনের ফাঁসির হুকুম হয়, ১২ জনের দ্বীপান্তর এবং ৭৩ জনের দীর্ঘ কারাবাস হয়। জেলবন্দী অবস্থাতেই মৃত্যু হয় বিরসার। মুন্ডা বিদ্রোহের মস্ত পুস্তকের শেষ পৃষ্ঠাটি সেদিনই বন্ধ হয়ে যায়। শুধু ইতিহাসের পাতায় অমর হয়ে রইলো বিরসা মুন্ডার নাম ...
মহাজন ও জমিদারদের অকথ্য অত্যাচার, নির্যাতন, উচ্চহারে কর আদায় প্রভৃতির বিরুদ্ধে মূলত ছিল এই বিদ্রোহ। একদিকে মুন্ডারাজ প্রতিষ্ঠা অন্যদিকে মুন্ডারা তাদের স্বাধীনতা পাওয়ার আশায় জোরদার আন্দোলনের সৃষ্টি করেছিল যাকে বলা হয় 'উলগুলান' ( উলগুলান কথার অর্থ- প্রবল বিক্ষোভ) । একদিকে অনাহারে মানুষের দিন কাটছে অন্যদিকে খাদ্যের লোভ দেখিয়ে একশ্রেণীর মিশনারিরা মুন্ডাদের খ্রীষ্টান ধর্মে ধর্মীন্তরিত করার প্রবল চেষ্টা চালাচ্ছে। বীরসা মুন্ডার নেতৃত্বে তখন শুরু হয় ( ১৮৯৩-৯৪) গ্রামের পতিত জমি অধিগ্রহণ বিরোধী আন্দোলন।
সারা দেশজুরে যখন অসংখ্য উপজাতিরা একে একে বিরসা মুন্ডার ডাকে সাড়া দিয়ে বিদ্রোহকে প্লাবিত করার চেষ্টা করছে তখন বিরসা মুন্ডা কে ভীত ব্রিটিশরা যে কোনো ভাবে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করছে। শেষে বাধ্য হয়ে ব্রিটিশ সরকার ১৮৯৫ সালে বিরসাকে দুবছরের জন্য কারারুদ্ধ করে। জায়গীরদাররা মুন্ডাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে মুন্ডাদের জীবন অতিষ্ঠ করে তোলে।
এই মুহূর্তে বিরসা এক নতুন কূটনীতির আশ্রয় নেয়। জেল থেকে ফিরে আসা বিরসার চোখে জ্বলছিল প্রতিহিংসার আগুন। তার মনে সংকল্প ছিলই , যেমন করেই হোক উপজাতিদের স্বাধীনতা অর্জন করতেই হবে। তাই সে সুচতুর কৌশলে এক গভীর জঙ্গলে নৈশ্য ভোজন করার জন্য জায়গীরদার, হাকিম ও খ্রিষ্টানদের আমন্ত্রণ করে। রাত্রে একদিকে নৈশ্য ভোজের আয়োজন তার সাথে উপজাতিদের গান ও সুরা এসবের মধ্যেই বিভোর হয়ে থাকে তারা। অন্যদিকে বিরসার ইশারায় ঝোপঝাড়ের মধ্যে থেকে উরে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে ধনুকের ফলা। মুহূর্তের মধ্যে প্রাণ হারায় বেশ কয়েকজন জায়গীরদার, হাকিম ও মিশনারি।
ব্রিটিশদের লাগাতার অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিরসা মুন্ডার নেতৃত্বে ১৮৯৯ সালে বড়ো দিনের প্রাক্কালে মুন্ডারা রাঁচি ও সিংভূম জেলার ছয়টি থানায় আগুন লাগায়। এই কান্ডকলাপে ব্রিটিশরা বিরসার উপর আরও খেপে ওঠে এবং চরম প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়। তন্য তন্য করে খোঁজ চলে বিরসার কিন্তু তাকে সহজে খুঁজে পাওয়া যায়নি। যতদিন না বিরসাকে খুঁজে পাওয়া যায় ততদিন ব্রিটিশদের চোখে ঘুম ছিল না।
অবশেষে ৯ই জানুয়ারী বিরসা মুন্ডা সহ তার সমগ্র বিপ্লবী দলকে বন্দী করতে সমর্থ হয় ব্রিটিশ সরকার। চারিদিকে তখনও চলছে মুন্ডা বিদ্রোহীদের আন্দোলন। ব্রিটিশ সরকার এই আন্দোলনকে একেবারে নির্মূল করার জন্য ৩০০ র উপর বিদ্রোহীকে হত্যা করআর পাশাপাশি অসংখ্য বিদ্রোহীকে কারারুদ্ধ করা হয়। তখনো বিরসার স্বপ্ন ছিল জেল থেকে বেরিয়ে সে তার ইচ্ছা পূরণ করবে কিন্তু তার সে সুযোগ আসেনি।
বিচারে বিরসা মুন্ডা ও ধৃত অন্য দুজনের ফাঁসির হুকুম হয়, ১২ জনের দ্বীপান্তর এবং ৭৩ জনের দীর্ঘ কারাবাস হয়। জেলবন্দী অবস্থাতেই মৃত্যু হয় বিরসার। মুন্ডা বিদ্রোহের মস্ত পুস্তকের শেষ পৃষ্ঠাটি সেদিনই বন্ধ হয়ে যায়। শুধু ইতিহাসের পাতায় অমর হয়ে রইলো বিরসা মুন্ডার নাম ...
Tags:
প্রবন্ধ