মৌসুমী মন্ডল দেবনাথ

মৌসুমী মন্ডল দেবনাথ




 রোদের ছবি 

ওহে রৌদ্রবরণ দিন,
আমার সব অসুখের দিনে দাও
খানিক কিরণমালা স্নেহধারা
দিবাকর পরেছে আজ হীরককুচির কিংখাব
তবুও আজ আমার মন চাইছে
একটি মেঘমেদুর হাত এসে আমায় জড়িয়ে ধরুক

অইখানে আমার আরণ্যক শরীর
গুহাচিত্রের মতো শুয়ে আছে, ঝরা পাতার মতো
শীতে  ফিকে হয়ে যাওয়া ক্লোরোফিল বনের মতো ত্বক
ঝরে যাওয়ার প্রতীক্ষায় আমার আজানুলম্বিত কেশরাশি
মুছে যাবে আমার সাজানো ফুল -বাসরের লজ্জা চোখ দু 'খানাও
তাকিয়ে দ্যাখো একটি মানুষ আস্তে আস্তে মাটি হয়ে যাচ্ছে
চিত্ হয়ে শুয়ে আছে, আমার আরাজোনার গভীরতা
নাশপাতি বনের ছায়ায় আমি আর শুয়ে থাকবোনা
আমাকে একটা মায়াহরিণের চোখ আঁকা ঘর দাও
ক্যালাইডোস্কোপে আমি সে ঘরে রোদের ছবি আঁকবো



 মেঘের চিঠি 

আজ সকালে মেঘের চিঠি
পেয়েছে সেই মেয়ে
দুপুরের বৃষ্টি -বাগানে
বটবৃক্ষের মুখোমুখি বসে
আয়ুরেখায় শব্দ সাজালো সে
বিকেলে পুঞ্জীভূত মেঘকে
অনুবাদ করতেই একঝাঁক
পাখী উড়ে গেলো আকাশে
চিঠিটিতে লেখা ছিলো
পাখিজন্মের ইতিকথা
অই মেয়ে বৃষ্টিকে অনুবাদ
করতে চাইলে, ভাস্বর হলো
জীবনের কর্কট -ছন্দে চলা
অভিমানী বসন্ত পাতার অনুবাদ
আজ মেয়েটি সন্ধ্যেয় ছাপিয়েছে
শুধুই অঝোর শ্রাবণ

 বেদনা 

কোনও নদী, কোনও সমুদ্র ভালোবাসলোনা
অই রূপকথার মেয়েকে
ভালোবাসলোনা ফেনিল ঢেউ, শঙ্খ, প্রবালেরাও
হলুদ ওড়নায় নিজেকে জড়িয়ে
ভালোবাসাকে স্মৃতিকথা করে
নেয় একদিন সে
জলের কবিতা গায়ে মেখে
পিছন ফিরে আলোপিনি ভাষায়
ডেকে উঠলো, মাগো
তুমিই প্রথম, তুমিই শেষ
বিস্ফারিত চোখে সকালের আলো
তাকিয়ে দেখলো সোনালী দীপে
রাখা আছে মায়ের নীল দীর্ঘশ্বাস
আজ তার সব ব্যথা গড়িয়ে নামছে
তার মেঠো চোখের পাতায়, চিবুক বেয়ে
বুকের সন্ধিস্থলে
শুধু মা আর মেয়েই জানলো
এই দ্বীপে গড়ে উঠছে নিস্তব্ধতার পাহাড়



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.